স্বপ্নিল ও কৃষ্ণচন্দ্রন। আজ ধোনিদের বিরুদ্ধে দুই ভারতীয় বংশোদ্ভূত। ছবি: দেবাশিস সেন।
লেখাটা শুরু করার কিছুক্ষণ আগেই দেখলাম, দক্ষিণ আফ্রিকা কী ভাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে উড়িয়ে দিল। এবি ডে’ভিলিয়ার্সের ম্যাজিক ব্যাট ফের বুঝিয়ে দিল, কেন বিশ্ব ক্রিকেটে ও ‘স্পেশ্যাল’।
এই বিশ্বকাপে প্রথমে ব্যাট করা দল কী করে পরে ব্যাট করা দলকে এত চাপে ফেলছে আর হারাচ্ছে, সেটা অবাক করার মতো। যখন এ সব দেখছি আর ভারতের কথা ভাবছি, তখন মনে হচ্ছে ওরা প্রথম দুটো ম্যাচে সত্যিই কি অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছে। আশা করি টস হারার পরেও মহেন্দ্র সিংহ ধোনিরা এ রকমই দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখাবে। সব ম্যাচেই তো আর টস জিতবে না ধোনি।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ভারতের পারফরম্যান্সের গভীরতা দেখে যেমন খুশি হয়েছি, তেমনই ভেবে অবাকও হয়েছি যে, ভারত সত্যিই যদি এই ফর্ম দেখাতে পারে, তা হলে সাম্প্রতিক ত্রিদেশীয় সিরিজে বা বিদেশে অন্য সিরিজগুলোতে ওদের কাছ থেকে এই খেলা দেখা যায়নি কেন? ভারতের ক্যাপ্টেন ও টিম ম্যানেজমেন্টকে এই প্রশ্নের উত্তর খঁুজে বার করতে হবে। উত্তরটা ওরা খুঁজে পেলে পরের বিদেশ সফরে ওদের লাভই হবে।
শুধু তিনশোর উপর রান তোলাই নয়। বোলাররা সেই রানের পুঁজি যে ভাবে কাজে লাগাচ্ছে, তাও ভারত সম্পর্কে আশাবাদী হওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। তবে মাথায় রাখবেন, এখনও অনেক পথ বাকি। লিগ পর্যায়ে আমরা যেখানেই থাকি, নক আউটে যে আটটা দল উঠবে, তারা প্রত্যেকেই কিন্তু যার-যার দিনে অন্য যে কোনও দলকে হারানোর ক্ষমতা রাখে।
পারথে আজ আমিরশাহিকে হালকা ভাবে নেওয়ার প্রশ্নই নেই। অনেকে বলছেন, এই ম্যাচে দলে কিছু গবেষণা সেরে নিলে ভাল হয়। কিন্তু এটা বিশ্বকাপ। এখানে এ সব করা যায় না। সপ্তাহে একটা করে ম্যাচ। সুস্থ থাকলে প্রথম এগারোর প্রত্যেক ক্রিকেটারেরই সব ম্যাচেই নামা উচিত। ম্যাচের ভিতর না থাকলে ফর্ম পড়তে কতক্ষণ?
ওয়াকার উইকেটে গতি-বাউন্স সামলানো দক্ষ ব্যাটসম্যানদের পক্ষেই যেখানে মাঝে মাঝে কঠিন হয়ে পড়ে, সেখানে নিজেদের কাজকর্ম সেরে মাঠে খেলতে আসা আরব আমিরশাহির ব্যাটসম্যানরা পারথে কতটা সফল হবে, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। হাঁটুর চোটের জন্য মহম্মদ শামির না খেলার খবর শুনে ওরা হয়তো কিছুটা স্বস্তি পাবে। তবে উমেশ যাদবের আক্রমণাত্মক পেস সামলানোও সহজ হবে না।
অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড ম্যাচটাই অবশ্য শনিবার দেখার মতো। প্রায় সমানে সমানে লড়াই। জেমস ফকনার ফিরে আসার পর অস্ট্রেলিয়া এখন সত্যিকারের পাওয়ার হাউস হয়ে উঠেছে। নিউজিল্যান্ডও এখন যে ফর্মে তাতে ওদেরও হারানো কঠিন। অনেকে নিউজিল্যান্ডকে এই ম্যাচে ফেভারিটের তকমা দেবেন হয়তো। তবে অস্ট্রেলিয়া দলের ম্যাচ উইনারদের কথা ভেবে আমি ওদের দিকেই ঝঁুকে। ব্রেন্ডন ম্যাকালাম গত কয়েক মরসুমে খেলাটাকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে ঠিকই। কিন্তু ওয়ার্নার, ফিঞ্চ, ম্যাক্সওয়েলদের মধ্যে এ রকম অনেক ম্যাকালাম পাবে অস্ট্রেলিয়া। তাদের সামলাতে পারবে তো নিউজিল্যান্ড?