ইতিহাস নিয়ে পরোয়া নেই জার্মানির

মাঠে নামার আগেই ভাইরাসের আক্রমণে ভুগছিলেন সাত ফুটবলার। এমনকী সোনার বুটের দৌড়ে থাকা টিমের তারকা প্লেয়ারও আক্রান্ত হন ফ্লু-তে। মাথায় হাত সমর্থকদের। সে সব সামলে শুক্রবার ফ্রান্সকে ওড়ানো। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠা। তাও টানা চারবার শেষ চারে যাওয়ার নজির গড়ে। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এর আগে যা কোনও টিম করে দেখাতে পারেনি। সব মিলিয়ে ২০টি বিশ্বকাপে ১৩ বার সেমিফাইনালে উঠল জার্মান টিম। এর পর জোয়াকিম লো-র টিমের যে নতুন নামই হয়ে যাবে ‘মেন অব স্টিল’ বা ‘লৌহকঠিন দল’, তাতে আর আশ্চর্য কী?

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৪ ০৩:৪৩
Share:

মাঠে নামার আগেই ভাইরাসের আক্রমণে ভুগছিলেন সাত ফুটবলার। এমনকী সোনার বুটের দৌড়ে থাকা টিমের তারকা প্লেয়ারও আক্রান্ত হন ফ্লু-তে। মাথায় হাত সমর্থকদের। সে সব সামলে শুক্রবার ফ্রান্সকে ওড়ানো। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠা। তাও টানা চারবার শেষ চারে যাওয়ার নজির গড়ে। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এর আগে যা কোনও টিম করে দেখাতে পারেনি। সব মিলিয়ে ২০টি বিশ্বকাপে ১৩ বার সেমিফাইনালে উঠল জার্মান টিম। এর পর জোয়াকিম লো-র টিমের যে নতুন নামই হয়ে যাবে ‘মেন অব স্টিল’ বা ‘লৌহকঠিন দল’, তাতে আর আশ্চর্য কী?

Advertisement

আর মাত্র দু’ধাপ। আট দিনে এই দুটো সিঁড়ি পেরোলেই মুঠোয় চলে আসবে বিশ্বকাপ। যার প্রথম ধাপেই সামনে ব্রাজিলের চ্যালেঞ্জ। তাও আবার চোট লাগায় নেইমার বিশ্বকাপের বাইরে ছিটকে গিয়েছেন, কার্ড সমস্যায় সেমিফাইনালে নেই ব্রাজিলের ক্যাপ্টেন থিয়াগো সিলভা। জার্মানদের ফাইনালে ওঠার কাজটা যাতে কিছুটা সহজ হয়ে গিয়েছে সন্দেহ নেই। পাল্লাটা ভারী জোয়াকিম লো-র টিমের দিকে হলেও জার্মানির ফাইনালে ওঠার পথে কাঁটাও কিন্তু আছে। ইতিহাস বলছে বিশ্বকাপে শেষ চারে যাওয়াটা জার্মানরা যে রকম প্রায় ‘অভ্যাসে’ পরিণত করে ফেলেছেন, তেমনই হার হজম করাটাও কম সহ্য করতে হয়নি। পাঁচ বার।

তবে এই জার্মান টিম ইতিহাস বা পরিসংখ্যানকে অতটা পাত্তা দিচ্ছে কোথায়! শেষ আটে জয়ের নায়ক ম্যাটস হুমেলস যেমন বলছেন, “স্বপ্নটা সত্যি হল ব্রাজিলে। তবে আশা করছি সেটা এখানেই থেমে যাবে না। আমরা যে রকম ফুটবল খেলছি তাতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ রয়েছে। ডিফেন্স ভাল। সঙ্গে আবেগ আর প্রতিজ্ঞাও রয়েছে। যেটা প্রতি ম্যাচে আরও বাড়বে।”

Advertisement

ম্যাচ জিতেই টমাস মুলার, মেসুট ওজিলদের সেলিব্রেশনের ছবি দেখলে পরিষ্কার যে এই জার্মানি শুধু শারীরিক দিক থেকে নয় মানসিক দিক থেকেও লোহার মতোই কঠিন। ব্যর্থতার সাধ্য কি ‘দাঁত’ বসায়! ক্যাপ্টেন ফিলিপ লাম যেমন বলে দেন, “আমরা সেমিফাইনালে উঠে গিয়েছি। অন্য কিছু নিয়ে পরোয়া করি না। এত দূর কিন্তু সহজে আসিনি। আমরা একটা টিম হিসেবে খেলেছি। সবার আগে টিম।” ক্যাপ্টেনের কথারই প্রতিফলন টিমের উৎসবের মেজাজে। বেঞ্জিমাদের চূর্ণ করার উৎসবে পোডোলস্কি, ওজিল, খেদিরা, সোয়াইনস্টাইগার, মুলাররা বিমানের মধ্যেই তোলা সেলফি পোস্ট করেছেন। আলাদা করে বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতার রেকর্ড ছোঁয়া মিরোস্লাভ ক্লোজেকে নিয়েও উৎসবে মাততে দেখা গিয়েছে মুলারকে। মেসুট ওজিল আবার নিজের টুইটারে বাহুবলের ছবি পোস্ট করতে ব্যস্ত।

কোচ লো-র উচ্ছ্বাস প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও টিম এত ভাল মানিয়ে নিতে পারায়। বিশেষ করে ব্রাজিলের প্রচণ্ড তাপমাত্রার বিরুদ্ধে। “প্লেয়াররা যে ভাবে সমস্ত প্রতিকূলতাকে জয় করেছে সত্যিই অসাধারণ। এটাও কিন্তু মাথায় রাখতে হবে, আলজিরিয়া ম্যাচে আমাদের অতিরিক্ত সময় পর্যন্ত লড়াই করার পর এই ম্যাচে নেমেছিলাম আমরা।”

পাশাপাশি অবশ্য লো-র চিন্তা শেষ চারের যুদ্ধে কাকে টিমে রাখবেন আর কাকে রাখবেন না সেটা নিয়েও। “এ বার টিমের সব শক্তিকে একত্র করতে হবে। প্লেয়াররা চোট-আঘাত কাটিয়ে কতটা ফিট হয়ে ওঠে দেখা যাক। তার পর শেষ চারের যুদ্ধে কারা নামবে সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।”

ম্যাচ জিতেই সেলফি মুলারদের। ছবি: টুইটার

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন