তৃপ্ত। রবিবার শহরে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
সচিন-শাহরুখের মহল্লায় এসে দাদাগিরি করে ট্রফি নিয়ে যাওয়া। ক্রিকেট নয়। ফুটবলে। টিমের সঙ্গে গত তিন মাস জড়িয়ে ছিলেন দারুণ ভাবে। টিমকে মোটিভেট করেছেন। সমস্যা হলে আলোচনায় বসেছেন। টিমকে জেতাতে সব কাজ ফেলে হাজির হয়েছেন নিজের টিমকে সমর্থন জানাতে। তা সে ঘরের মাঠে হোক বা মুম্বইতে অথবা দিল্লিতে। কোচ-সহ চ্যাম্পিয়ন টিমের বেশির ভাগ ফুটবলারকে নিয়ে রবিবার সকালে কলকাতার বিজয়ত্সবে যোগ দিতে যাওয়ার আগে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় কথা বললেন আনন্দবাজারের সঙ্গে। হোটেলের লবিতে দাঁড়িয়ে।
প্রশ্ন: মহম্মদ রফিকের গোলটার পর দেখলাম আপনি লাফিয়ে উঠলেন। জামা ওড়াননি, কিন্তু উচ্ছ্বাসটা ছিল লর্ডসের মতোই।
সৌরভ: রফিকের গোলটার পর আর কেরলের ফিরে আসার সময় ছিল না। ইনজুরি টাইমে গোল। যখন মনে হচ্ছিল ম্যাচটা অতিরিক্ত সময়ে যাবে তখনই গোলটা হল। সে জন্যই লাফিয়ে উঠেছিলাম। লর্ডসের ব্যাপারটা ছিল আলাদা। ওখানে আমি খেলছিলাম। এখানে তো গ্যালারিতে ছিলাম। দু’টো ভিন্ন ঘটনা। কিন্তু আবেগটা কোথাও গিয়ে যেন মিলে যায়।
প্রশ্ন: বেশ কয়েকটা ট্রফি জিতেছেন জীবনে। এ বার প্রথম বারই আইএসএল জিতলেন। কোথায় রাখবেন এই জয়কে?
সৌরভ: প্রত্যেকটা জয়েরই একটা আলাদা অনুভূতি থাকে। কোনওটার সঙ্গে কোনওটার তুলনা হয় না। তবে এর আগে যে জয়গুলো বা ট্রফি পেয়েছি সেগুলো খেলোয়াড় হিসাবে। এখানে আমি মাঠে নামিনি। দলের এক জন কর্তা হিসাবে। আমি খুশি। খুব ভাল লাগছে।
প্র: কলকাতায় একই মরসুমে দু’টো ট্রফিএকটা শাহরুখের হাত ধরে আইপিএল জয়। অন্যটা আপনার হাত ধরে। শাহরুখের পাড়ায় এসে ট্রফি!
সৌরভ: (হেসে ফেললেন)। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করেছি। জিতেছি। ও ভাবে ভাবছি না। একটা নিরপেক্ষ মাঠে এসে এত দর্শকের সামনে কলকাতার ট্রফি জয়। বাংলার জন্য ট্রফি জয়। ফুটবলের জন্য এটা খুব ভাল। একটা আলাদা অনুভূতি তো হচ্ছেই।
প্র: ক্রিকেটে আইপিএলে প্রথম বছর সাফল্য পাননি। ফুটবলে এসে শুরুর বছরেই চ্যাম্পিয়ন? এগিয়ে তা হলে ফুটবলই?
সৌরভ: দু’টো দু’রকম খেলা। দু’রকম মঞ্চ। ফুটবল আমার বরাবরই প্যাশন। সেখানে প্রথম বার চ্যাম্পিয়ন হওয়া এটাই স্পেশ্যাল।
প্র: সচিন তেন্ডুলকরের পাড়ায় এসে ট্রফি নিয়ে গেলেন। আবার তার হাতেই ট্রফি তুলে দিলেন?
সৌরভ: সচিন মানেই তো ভারত। তাই ওর হাতে ট্রফিটা তুলে দিলাম। ওকে ছাড়া উত্সব হয় না কি?
প্র: একবারও ভেবেছিলেন চ্যাম্পিয়ন হবে আপনার টিম?
সৌরভ: মাদ্রিদের ট্রেনিং। তার পর সবাই মিলে যে ভাবে চেষ্টা করেছে মনে হচ্ছিল আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়ে যেতে পারি। প্রথম থেকে সেই বিশ্বাসটা ছিল।
প্র: আন্তোনিও হাবাসের সঙ্গে দু’বছরের চুক্তি আছে। কিন্তু ওঁকে পরের বার রাখবেন কি?
সৌরভ: হাবাসই থাকবে। যে ভাবে চ্যাম্পিয়ন করল টিমকে! চ্যাম্পিয়ন টিমের কোচকে কেউ সরায় না কি?
হৃদয়পুরে মহারাজ: জয়ের উচ্ছ্বাসে মাতোয়ারা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের
আটলেটিকো দে কলকাতা। রবিবার, শহরের এক শপিং মলে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
প্র: কিন্তু হাবাসকে নিয়ে তো অনেক ঝামেলা হয়েছে। আপনি সব জানেন। কথাও বলেছেন সমস্যা মেটাতে!
সৌরভ: সমস্যা হলে কথা বলে তার সমাধান করতে হবে। হাবাসের সঙ্গেও কথা বলব দরকার হলে। কিন্তু ও-ই থাকছে।
প্র: পরের বারের টিম নিয়ে কিছু কথা হল হাবাসের সঙ্গে?
সৌরভ: এখনও হয়নি। হবে। সময় আছে। আমাদের দু’তিন জন ছেলের স্প্যানিশ লিগে খেলার কথা আছে। বড় সুযোগ পাবে ওরা।
প্র: শোনা যাচ্ছে অর্ণব মণ্ডলকে নাকি দারুণ পছন্দ হয়েছে আটলেটিকো কর্তাদের। আর কে কে তালিকায় আছেন?
সৌরভ: কাজ চলছে। জানতে পারবেন কিছু দিনের মধ্যেই।
প্র: এক দিকে সিএবি সচিব, অন্য দিকে ফুটবল টিমের মালিক। আরও অনেক কাজ আছে। কী ভাবে সময় দেবেন?
সৌরভ: করছি তো। চেষ্টা থাকলে সব করা যায়। সময় বের করে নিতে হবে।