নতুন হেয়ারস্টাইলে ফুরফুরে নেইমার। প্র্যাকটিসে কখনও ফ্রেডের সঙ্গে কুংফু চলছে। ছবি: রয়টার্স
গোটা দেশের চাপ তাঁদের ঘাড়ে। শুধু মাঠের ভিতরে নয়। প্রতিবাদের আগুনও যে বাধা তাঁদের পথে। সমস্যা যাই থাক, ব্রাজিল অনুশীলনে কিন্তু উৎসবের আমেজ। মঙ্গলবার ব্রাজিলের জন্য অপেক্ষা করছে মেক্সিকো। যে ম্যাচে জয় পেলেই নক-আউট পর্বের টিকিট পাবেন নেইমার-ফ্রেডরা। কিন্তু ম্যাচের আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে অনুশীলনে ফ্রি-কিক বা পেনাল্টি নয়, কুং-ফু কিক মারতে মজে ছিলেন দলের সেরা তারকারা। ঘটনার প্রেক্ষাপটে তিন কেন্দ্রীয় চরিত্র। নেইমার, ফ্রেড ও মার্সেলো। যাঁরা মজার ছলেই একে অপরের দিকে লাথি চালান। প্রথম ম্যাচে জোড়া গোলের পর নেইমার যে এখন খোশমেজাজে, তা বার বার বোঝা গিয়েছে। শুধু কুংফু কিকই নয়, চুল ডাই করে নতুন চেহারায় দেখা গেল ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টারকে।
কুংফুতে কে বেশি ওস্তাদ, সেটা প্রমাণ করার জন্যই যেন প্র্যাকটিসে চলল জোর লড়াই। প্রথম রাউন্ডে হল মার্সেলো বনাম নেইমার। মজা করেই ব্রাজিলের দশ নম্বরকে লাথি মারেন মার্সেলো। তারপর থেমে থাকেননি নেইমারও। ফ্রেডের পিঠ লক্ষ্য করে ‘ওয়ান্ডার কিক’ মারেন ‘ওয়ান্ডার কিড’। অসামান্য উচ্চতায় লাফিয়ে ব্রাজিল স্ট্রাইকারকে কুং-ফু কিক মারেন নেইমার। জবাবে ফ্রেডও দেখিয়ে দিলেন, তিনিও ক্যারাটে কিক মারতে পারেন। কিন্তু নেইমারকে লাথি চালানোর শাস্তিও ভোগ করতে হয় ফ্রেডকে। যাঁকে চ্যাংদোলা করে মাঠের চারিদিক ঘোরান নেইমার ও মার্সেলো।
কখনও কোলে তুলে নিচ্ছেন খুদে ভক্তকে। ছবি:উৎপল সরকার
দলের তিন স্তম্ভ যদি কুংফু কিকের মহড়া দিতে ব্যস্ত থাকেন তবে দাভিদ লুইজের উপরে দায়িত্ব ছিল উপস্থিত সব খুদে সমর্থককে আনন্দ দেওয়া। প্র্যাকটিস শেষেও মাঠে উপস্থিত ছিলেন লুইজ। একটি বাচ্চা এসে তাঁর জার্সি নেওয়ার আবদার করে। নিরাপত্তারক্ষীদের উপেক্ষা করেই লুইজের সঙ্গে দেখা করতে মাঠে নেমে পড়ে দানিয়েল। লুইজও তাকে অখুশি করেননি। উপহার হিসাবে লুইজের সই করা জার্সি পায় দানিয়েল। পরে বলে, “লুইজ আমার প্রিয় ফুটবলার। ওর সঙ্গে দেখা করতে পরে খুব মজা লাগছে। আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল ফুটবলকে ভালবাসতে।” কিন্তু মজার আবহাওয়াতেও বইল টেনশনের চোরাস্রোত। ঊরুতে সমস্যার জন্য মাঝপথেই অনুশীলন ছাড়তে হয় হাল্ককে।
আমি চিন্তিত নই মেক্সিকোকে নিয়ে। জানি আর একটা হলুদ কার্ড দেখলে সমস্যা হবে। তা বলে আমি শান্ত হয়ে থাকব না। দলের জন্য সব কিছু দেব।
—নেইমার
জ্যাকি চ্যান বা ব্রুস লি-র মতো অ্যাকশন দেখানো ছাড়াও অনুশীলনের মেন্যুতে ছিল বিচ-ভলিবলও। সমুদ্রসৈকতে সমর্থকদের সঙ্গে ‘সেল্ফি’ তোলা ছাড়াও নেট লাগিয়ে ভলিবল ম্যাচ খেললেন ব্রাজিলিয়ানরা। রেফারি ছিলেন স্বয়ং লুই ফিলিপ স্কোলারি।
একটা হলুদ কার্ড দেখে সাসপেনশনের মুখে থাকলেও, মেক্সিকো ম্যাচে বিপক্ষকে আটকাতে কড়া ট্যাকল করতে রাজি ওয়ান্ডারকিড। বলেন, “আমি চিন্তিত নই মেক্সিকোকে নিয়ে। জানি আর একটা হলুদ কার্ড দেখলে সমস্যা হবে। তা বলে আমি শান্ত হয়ে থাকব না। দলের জন্য সব কিছু দেব।” দল যে নেইমারের পাশে দাঁড়াচ্ছে, তা পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে অস্কারের কথায়, “নেইমারের জন্য বিপক্ষের ফুটবলাররা হলুদ কার্ড দেখে। ও নিজে কার্ড দেখে না।” সঙ্গে অস্কার আরও বলেন, “আমরা সবাই এত ভাল খেলব যে নেইমারের উপরে বাড়তি চাপ পড়বে না।”
ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে জয়ের মেজাজ ধরে রেখে আত্মবিশ্বাস বজায় রাখতে হবে, সেই কথা জানিয়ে দলের অধিনায়ক থিয়াগো সিলভা বলেন, “ঠিক পথে এগোচ্ছি। ক্রোয়েশিয়া ম্যাচ জিতলেও ছন্দ হারালে চলবে না।”