মানসিক চাপ ভেবে অসুখকে অবহেলা করছেন কী? ছবি: সংগৃহীত।
ঘুম হচ্ছে না, ক্লান্তি, মেজাজ সপ্তমে চড়ে থাকছে। এই সব দেখেশুনে ভাবছেন, যা হচ্ছে তার সবটাই মানসিক চাপ! আসলে তা-ই কি?
কর্মব্যস্ত জীবন, ব্যক্তিগত এবং পেশাগত জীবনের বিভাজন করতে না পারা, কর্মজগতের ইঁদুর দৌড়ে টিকে থাকতে গিয়ে মানসিক চাপ, ক্লান্তি, নির্ঘুম রাত এখন বহু মানুষের রোজের ব্যাপার। পান থেকে চুন খসলেই রেগে যাওয়া, দিনে সর্ব ক্ষণ ক্লান্ত হয়ে থাকার মতো উপসর্গ নতুন নয়। তবে তা কি অবহেলা করছেন? এর মধ্যেও লুকিয়ে থাকতে পারে অসুখের ইঙ্গিত।
ডায়াবিটিসের মতো থাইরয়েডের অসুখও বাড়ছে। থাইরয়েড গ্রন্থি নিঃসৃত হরমোন শরীরে নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজের নেপথ্যে থাকে। কোনও কারণে এই হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলেই শরীর অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। নানা সমস্যা দেখা দেয়। হাইপোথয়েডিসজ়ম এখন ঘরে ঘরে।
চিকিৎসকেরা বলছেন, থাইরয়েডের অসুখের তেমন লক্ষণ শুরুতে বোঝা যায় না। রোগীরা বিষয়টি ধরতেই পারেন না। যে ধরনের উপসর্গ দেখা যায়, তা অন্য কারণেও হতে পারে। সে কারণে, শরীরে ছোটখাটো বদল হলেই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার দরকার।
কোন লক্ষণগুলি অবহেলা করা ঠিক নয়?
বিশ্রামের পরেও ক্লান্তি
ঘুম হচ্ছে পর্যাপ্ত। তার পরেও যেন ক্লান্তি। একটু পরিশ্রমের পরেই হাঁপ ধরলে চিকিৎসকের দ্বারস্থ হওয়া দরকার। হতে পারে তা থাইরয়েডের অসুখের লক্ষণ।
হঠাৎ মেজাজ বদল
মানসিক চাপ থাকলে মেজাজ চড়ে থাকতে পারে। তবে কথায় কথায় খিটখিটে হয়ে উঠলে, দুম করে রাগ চড়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ যদি হঠাৎ করে দেখা দেয়, তা বেশ কিছু দিন ধরে লক্ষ করা যায়, তবে থাইরয়েডের সমস্যা হয়েছে কি না, পরীক্ষা করানো দরকার।
ওজন কমা বা বৃদ্ধি
ডায়েট করছেন না অথচ হঠাৎ করে ওজন কমছে। আচমকা ওজনের তারতম্যে অসুখের ইঙ্গিতবাহী হতে পারে। শুধু থাইয়রেড নয়, ডায়াবিটিস হলেও এমন হয়। এই ধরনের উপসর্গ চোখে পড়লে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাওয়া দরকার।
চুল ওঠা
আচমকা গোছা গোছা চুল পড়া শুধু অযত্নের জন্য না-ও হতে পারে। থাইরয়েডের সমস্যার অন্যতম লক্ষণ হল চুল পড়া, গায়ের চামড়া খসখসে হয়ে যাওয়া।
অনিয়মিত ঋতুস্রাব
মহিলাদের ক্ষেত্রে অনিয়মিত ঋতুস্রাবের নেপথ্য কারণ হতে পারে থাইরয়ে়ড হরমোনের ভারসাম্য বিগড়ে যাওয়া। ওজন বৃদ্ধি বা কমে যাওয়া, চুল ওঠা, অনিয়মিত ঋতুস্রাব— এগুলি একসঙ্গে হলে একেবারেই সময় নষ্ট না করে থাইরয়েডের মাত্রা পরীক্ষা করানো দরকার।
গলার স্বর: বয়সন্ধিতে গলার স্বরে বদল হয়। কিন্তু অন্য সময় হঠাৎ করে গলা ধরে যাওয়া, স্বরের বদল ঘটলে সতর্ক হতে পারেন। তা ছাড়া, গরম বা শীতকালে খুব বেশি গরম বা ঠান্ডার অনুভূতিও স্বাভাবিক নয়।