দুই বিরাট। নেটে সঙ্গী পূর্বসূরি।
বিরাট কোহলির নেতৃত্বে ভারতীয় ক্রিকেটে একটা নতুন যুগ শুরু হতে চলেছে। যে যুগটার দিকে আমি নিজে খুব উত্সাহ নিয়ে তাকিয়ে।
বিরাট এমন এক ক্রিকেটার যে খেলাটা সম্পর্কে অসম্ভব আবেগপ্রবণ, যার সফল হওয়ার তীব্র খিদে আর সে জন্যই মাঠে নেমে সবটুকু নিংড়ে দিয়ে লড়াই করে। টেস্ট ক্যাপ্টেন হিসাবে সাফল্য পেতে হলে চরিত্রের এই সব বৈশিষ্ট্যই জরুরি। বিশেষ করে বিদেশে অচেনা পিচ আর পরিবেশে। ভারত অধিনায়কের আসল পরীক্ষাটা দেশের বাইরে। বিদেশে সে কী ভাবে নেতৃত্ব দিল সেটাই শেষ পর্যন্ত তার সাফল্যের আসল মাপকাঠি হয়ে থাকে। বিরাটের ক্ষেত্রেও সেটাই হবে। তাই আমার কাছে আগামী কয়েক বছরে বিরাট হোম সিরিজে যতই সাফল্য পাক, অ্যাওয়ে সিরিজে কী করল সেটাই আসল হবে। ক্যাপ্টেন বিরাটের সামনে এটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
অ্যাডিলেডে নেতা বিরাটের শুরু ভালই হয়েছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত ওকে হারতে হয়। তবে একটা টেস্টে অধিনায়কত্ব সামলে দেওয়া আর ক্যাপ্টেন হিসাবে পুরো দায়িত্ব নেওয়ায় বিস্তর ফারাক। ফুল টাইম ক্যাপ্টেন বিরাটকে অনেক বেশি জবাবদিহি করতে হবে। পূর্বসূরিদের মতোই ওর প্রত্যেকটা সিদ্ধান্ত আর পারফরম্যান্স খুঁটিয়ে বিচার করে কাটাছেঁড়া চলবে।
বিরাট কিন্তু সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। সব ফর্ম্যাটে প্লেয়ার হিসাবে ও অসাধারণ। নিজের পারফরম্যান্স দিয়ে দলকে উদ্দীপ্ত করতে পারবে। বিরাট বরাবর টেস্টের চেয়ে ওয়ান ডে-তে বেশি সফল। কিন্তু এই অস্ট্রেলিয়া সিরিজে ওর টেস্ট ব্যাটিংটাও এক ধাপ উত্তীর্ণ হয়েছে। ওকে এখন সব পরিবেশেই সফল টেস্ট ব্যাটসম্যানদের বিশিষ্ট তালিকায় রাখব। বিরাট সব সময় সতীর্থদের পারফরম্যান্সকে নিজের আগে রাখে। আগে তাদের প্রশংসা করে। এটা খুব বড় গুণ যা ড্রেসিংরুমেও নেতা বিরাটের মর্যাদা বাড়িয়ে তুলবে।
অনুষ্কার সঙ্গে ‘ডেট’-এ, রবি শাস্ত্রীর কড়া নজরে।
ক্যাপ্টেন বিরাটের অন্যতম চ্যালেঞ্জ ব্যাটসম্যান বিরাটকে চাপমুক্ত আর তাজা রাখা। ভারত অধিনায়কের কাজটা অসম্ভব চাপের। তার উপর বিরাট এতটাই আগেবপ্রবণ যে ওর নেতৃত্বে টিম হারলে সেটা মানসিক ভাবে ওকে অনেক বেশি ক্ষতবিক্ষত করবে। যার প্রভাব পড়তে পারে ওর ব্যাটিংয়ে। এখানে বিরাটকে আরও পরিণত হতে হবে। বিরাটকে বলব, নিজের ব্যাটিং আর ক্যাপ্টেন্সির মধ্যে এখনই একটা সুস্পষ্ট লাইন টেনে দাও। দু’টোকে গুলিয়ে ফেলো না। কাজটা কঠিন। কিন্তু করতেই হবে।
সিডনি টেস্টের প্রথম দিনটাই আবার জেন ম্যাকগ্রার স্মৃতিতে স্তনের ক্যানসারের সচেতনতা বাড়ানোর ‘পিঙ্ক ডে’ বা গোলাপি দিবস। পরিবেশটা দারুণ হতে বাধ্য। আমি অবশ্য ক্যাপ্টেন হলে আগে উইকেটে ঘাস আছে কি না দেখতাম। না থাকলে দুই স্পিনার খেলাতাম। সিডনি পিচের পরের দিকে ঘোরার ইতিহাস রয়েছে। আর যে রকম গরম এখানে, দিন দুই পর থেকে স্পিন করতে শুরু করলে আশ্চর্য হব না। আমি মনে করি, উইকেটে ঘাস না থাকলে বিদেশে ভারতের দুই স্পিনার খেলানো উচিত। আমাদের সিমাররা প্রথম থেকেই বড্ড বেশি রান দিয়ে ফেলছে। যে কারণে ওরা উইকেট নিলেও খেলাটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। তুলনায় স্পিনাররা কিন্তু প্রথম ইনিংসেও টাইট লাইনে বল করলে রানটা অত উঠতে পারবে না।
ছবি এএফপি ও টুইটার