সুনীল নারিনের বিরুদ্ধে ‘সাসপেক্ট বোলিং অ্যাকশন’-এর খবরটা শুনে প্রথমেই মনে প্রশ্ন জাগল, এ বার কেকেআর কী করবে? ওদের অন্যতম প্রধান অস্ত্রই তো বেশ কিছুটা ভোঁতা হয়ে গেল।
নারিনের ‘মিস্ট্রি বোলিং’ যে ভাবে বিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছিল, তাতে সোমবারের ম্যাচের আম্পায়াররা ওদের কিছুটা স্বস্তিই দিল বলা যায়। তিন আম্পায়ার মিলে নিশ্চয়ই নারিনের সন্দেহজনক বোলিংয়ের ভিডিও খুঁটিয়ে দেখে বিশ্লেষণ করেই রিপোর্ট দিয়েছে। আসলে বোলিং অ্যাকশন বিশ্লেষণ করার জন্য এত উন্নত প্রযুক্তির সাহায্য পাওয়া যাচ্ছে যে, কোনও বোলার নির্দিষ্ট সীমার চেয়ে সামান্য একটু বেশি কনুই ভাঙলেও এখন ধরা পড়ে যায়। আগে প্রযুক্তি সে রকম ছিল না বলেই নারিন চার বছর ধরে এ ভাবে বল করেও অভিযুক্তের তালিকায় ওঠেনি। সইদ আজমল তো আট বছর সন্দেহজনক বোলিং চালিয়ে গিয়েছে।
নারিনের যে বলটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, সেটা হল ওর কুইকার ডেলিভারি। জোরের উপর বলটা ছাড়ে নারিন। আচমকা দ্রুত আসা বল বুঝতে সমস্যায় পড়ে যায় ব্যাটসম্যান। আম্পায়াররা জানিয়েছে, এই বলটা করতেই কনুই ভাঙছে নারিনের। নিয়ম অনুযায়ী নারিনকে এ বার নিজের বোলিং অ্যাকশন শুধরে নিয়ে কুইকার করতে হবে। যা আমার মতে, এক রকম অসম্ভব ব্যাপার। কনুই সোজা করে বল করতে হলে নারিন আর কুইকার ডেলিভারিটা করতে পারবে বলে আমার মনে হয় না। সে রকম জোরই পাবে না, বলও দ্রুত যাবে না। এর আগে শাহিদ আফ্রিদির কুইকারও কিন্তু আইসিসি নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল। ফলে এখন যা পরিস্থিতি, তাতে এই অস্ত্রটা নারিনকে বাইরে রেখেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নামতে হবে। সেটা কিন্তু নারিনের বোলিংকে অনেকটাই ভোঁতা করে দেবে। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এই শাস্তি কার্যকর হবে না। তাই সেখানে আপাতত ছাড় পেয়ে যাবে নারিন।
বিভিন্ন ক্রিকেট আড্ডায় প্রায়ই নারিনের এই রহস্যময় স্পিন নিয়ে আলোচনা শুনেছি। এমন আড্ডায় অনেকেই ওর বোলিং অ্যাকশন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে বারবার। কিন্তু টিভিতে বা সামসামনি দেখেও আপাতদৃষ্টিতে কিছু বোঝা কঠিন। তার উপর নারিন আবার ফুলহাতা জার্সি পরে বল করে। ফলে বিষয়টা বোঝা আরও কঠিন হয়ে পড়ে। যেমন সইদ আজমলের ক্ষেত্রেও হয়েছে। প্রথম দিকে ওর দুসরা যে নির্দিষ্ট সীমার বাইরে কনুই ভেঙে হচ্ছে, সেটা বোঝা যায়নি। এত দিন এগুলো ধরার মতো নিখুঁত প্রযুক্তিও ছিল না। কিন্তু এ বার বোধহয় তা আর হওয়ার নয়। সে জন্যই সম্প্রতি এ রকম ‘সাসপেক্ট অ্যাকশন’ রিপোর্ট হচ্ছে বারবার।