করিম বেঞ্চারিফাকে পরের বার কোচ হিসাবে রাখতে চাইছে না মোহনবাগান।
ছাঁটাই হতে চলেছেন ওডাফা ওকোলিও। অধিনায়কের পারফরম্যান্স এবং আচরণে একেবারেই খুশি নন বাগান কর্তারা। কর্তারা নিজেদের মধ্যে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেও এখনই তা অবশ্য ঘোষণা করা হচ্ছে না। কর্তারা পরের ইউনাইটেড ম্যাচ পর্যন্ত অপেক্ষা করছেন। কারণ এখনও পুরোপুরি অবনমনের বাইরে যায়নি বাগান।
রবিবার বেঙ্গালুরু ম্যাচের বিরতিতে দলের কিপার শিল্টন পালকে গালাগালি এবং ধাক্কা দেওয়া সত্ত্বেও তাই করিমকে সতর্ক করা হচ্ছে না। ক্লাব কর্তাদের বেশির ভাগেরই মত, যাঁকে রাখাই হবে না তাকে এখন শো-কজ করে বা খুঁচিয়ে কী লাভ। সামনে ম্যাচও আছে।
ক্লাব কর্তারা সোমবার শিল্টনের সঙ্গে ঝামেলা নিয়ে কথা বললেও, বাগান কিপার এ সম্পর্কে কিছু বলতে চাননি। বলে দিলেন, “সবার সামনেই পুরো ঘটনা ঘটেছে। আমি কিছু বলব না।” আর বাগান কোচ দলের অন্যতম সিনিয়র ফুটবলারকে ধাক্কা দেওয়ার ব্যাপারটা এড়িয়ে গিয়ে বলেছেন, “যা হয়েছে সেটা সাধারণ ঘটনা। শিল্টন কিছু বলেছিল। আমার পছন্দ হয়নি। আমি এসব নিয়ে ভাবছি না। পরের ইউনাইটেড ম্যাচ নিয়েই ভাবছি।” কর্তারা অবশ্য করিমের আচরণে খুশি নন। কিন্তু প্রকাশ্যে কিছু বলছেন না তাঁরা। অর্থসচিব দেবাশিস দত্ত বললেন, “আমরা সব কিছুর উপর নজর রাখছি। দলগঠনের কাজ শুরু করব ১৫ এপ্রিলের পর। তারপর যা বলার বলব।”
কিন্তু বুদ্ধিমান এবং চতুর করিম কেন এরকম আচরণ করছেন? ক্লাব কর্তাদের একটা বড় অংশের ধারণা, করিমের সঙ্গে কথা না বলে যাঁদের সঙ্গে মোহনবাগান পরের বছরের জন্য চুক্তি করেছে তাদের সঙ্গেই না কি খারাপ ব্যবহার করছেন বাগান-কোচ। শিল্টন পালের সঙ্গে ঝামেলার সেটাই কারণ। কর্তাদের অনেকেরই বক্তব্য, শিল্টনের জায়গায় সন্দীপ নন্দীকে নামানোর পরও তো বেঙ্গালুরু বাজে গোল খেয়েছে। সন্দীপকে তা হলে কেন কিছু বলেননি কোচ? লেফট ব্যাক শৌভিক ঘোষ, মিডিও রাম মালিককে প্রথম একাদশে না খেলানোর পিছনেও না কি কাজ করছে সামনের মরসুমের নতুন চুক্তি। করিম ধরেই নিয়েছেন, তাকে না জানিয়ে যখন সই করানো হচ্ছে, তখন তাঁকে রাখা হবে না।
করিমের সঙ্গে ওডাফাকেও ছেঁটে ফেলার সিদ্ধান্ত পাকা। গত তিন বছর প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকা নেওয়া সত্ত্বেও একটা ট্রফি দিতে পারেননি নাইজিরিয়ান গোলমেশিন। এ বছর তো ওডাফার অবস্থা আরও খারাপ। কর্তাদের ধারণা, চোট সারানোর ব্যাপারে ওডাফা সিরিয়াস হলে অনেক আগেই মাঠে ফিরতে পারতেন। সেটা তিনি করেননি। ফলে ডুবেছে বাগান। কিন্তু করিম বা ওডাফার জায়গায় কে আসবেন বাগানে? নির্বাচনের বছর বলে শক্তিশালী দল গড়তে চাইছেন কর্তারা। কোচ হিসাবে শোনা যাচ্ছে সুভাষ ভৌমিক থেকে ট্রেভর মর্গ্যান-- অনেকের নাম। আর ওডাফার জায়গায় সনি নর্ডি থেকে র্যান্টি মার্টিন্স অনেকের সঙ্গেই কথাবার্তা চালাচ্ছেন বাগান কর্তারা। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে পয়লা বৈশাখের বার পুজোর পর।