ক্যাপ্টেনকে নিয়ে কোচের সাংবাদিক সম্মেলন। ছবি: এএফপি
পাশে অধিনায়ক থিয়াগো সিলভাকে নিয়ে অঙ্গীকার করলেন লুই ফিলিপ স্কোলারি। শুক্রবার দুপুরে জমজমাট সাংবাদিক সম্মেলন করলেন ব্রাজিল কোচ। মুশকিল আসান করে দেব, চিলিকে ভয়ও পাচ্ছি, দু’রকমই মেজাজ ধরা পড়ল তাঁর কথায়...।
প্রশ্ন: আপনার ডিফেন্সের ডান দিকটা বেশ নড়বড়ে দেখাচ্ছে...ওটা কি ভয়ের জায়গা নয়?
স্কোলারি: ওটার সমাধান হয়ে যাবে। আরে এগারো জন প্লেয়ার নামবে। একা রাইটব্যাক তো নয়। আমার রাইটব্যাকে বিকল্প আছে। রামিরেজ রাইটব্যাক দেখতে পারে। তা ছাড়া গ্রুপ পর্যায়ে আমরা অনেক সময় ইচ্ছে করেও চাপ নিই, যাতে ভেতরের কলকব্জাগুলো কেমন আছে বোঝা যায়।
প্র: নেইমার আর মেসির মধ্যে কে বড়?
স্কোলারি: মেসি হল পৃথিবীর অন্যতম গ্রেট! নেইমার সবে ওর প্রতিশ্রুতি সার্থক করার দিকে এগোচ্ছে। এই প্রশ্নটা দশ বছর পরে করলে আমি আরও বিস্তৃত উত্তর দিতে পারব। এখন অনিবার্য কারণে যা সম্ভব নয়। নেইমার এখনও একটা স্বপ্নের দিকে হাঁটছে। আর সেই স্বপ্নটা মোটেও মেসিকে হারিয়ে বিশ্বসেরা হওয়ার মধ্যে লুকিয়ে নেই। ওর স্বপ্ন হল টিমের সঙ্গে মিলে দেশকে বিশ্বকাপ দেওয়া! এটাই আসল স্বপ্ন।
প্র: আর্জেন্তিনা কি ফাইনাল খেলবে? কী মনে হচ্ছে?
স্কোলারি: আমি ভাই নিজের টিম কী করে চিলিকে হারাবে সেটা নিয়েই যথেষ্ট পীড়িত। আমার আর্জেন্তিনার কাপ-ভাগ্য গণনায় কাজ নেই।
প্র: গোটা দেশের এই রকম চাপ। কেউ জেতা ছাড়া কিছু ভাবতেই চাইছে না। ছেলেরা এই চাপ কী করে সামলাবে?
স্কোলারি: সহজে খেলতে হবে। সব সময় যদি টিম ভাবতে চায় প্রমাণ করে দেব তা হলে চাপ বাড়ে বই কমে না।
থিয়াগো সিলভা (এই প্রথম): সন্দেহ নেই সীমাহীন চাপ। এই প্রেস কনফারেন্স করতে কোচের সঙ্গে আসছিলাম। রাস্তায় একটা গাড়ি ব্রেক কষে অটোগ্রাফের খাতা বাড়িয়ে দিল। সই দিতে পারিনি কিন্তু মুহূর্মুহূ হাত নাড়া। টিম বাসের সামনে প্রায় ঝুলে পড়া এগুলো দেখে বুঝছি বাইরে কী অবস্থা! স্বীকার করতে বাধা নেই ক্রোয়েশিয়া ম্যাচটা আমি শুরুর দিকটা চাপে খেলতেই পারিনি। তার পর নিজেকে নিজে বললাম, তুমিই কি ভাই থিয়াগো সিলভা?
প্র: ব্রাজিলীয় সমর্থকদের উদ্দেশে বেলো ম্যাচের আগে কী বার্তা দেবেন?
স্কোলারি: ক্যামেরুনের বিরুদ্ধে যে দিন নেমেছিলাম সে দিনও তো আমরা পুরো নিরাপদ জায়গায় ছিলাম না। সে দিন বিশ্রী হারলে আমরা টুর্নামেন্টের বাইরেও চলে যেতে পারতাম। প্রতিযোগিতার নিয়মটাই তাই। পয়েন্ট তালিকায় সামনে না থাকলে তুমি বাড়ি যাবে। যেমন ষোলো দেশ চলে গিয়েছে। এখন তো নকআউট। সব টিমই পুরো কাঁটার মুকুটের ওপর বসা। হারল কি নিশ্চিহ্ন। আর ফাইনাল অবধি যে এই অনিশ্চয়তাটাই চলবে এটা ব্রাজিলীয় সমর্থককে বুঝতে হবে।
থিয়াগো: এক বছর আগে থেকে আমি বিশ্বকাপের জন্য তৈরি হয়েছি আর ভেবেছি যখন সত্যি সত্যি বস্তুটা ঘটবে, কী ভাবে সেটাকে সামলাব? অনুভূতিটা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। আর বেশি কথা বললে বোধহয় কেঁদেই ফেলব। আমি একটু কাঁদুনে আছিও।
স্কোলারি: একটা কথা আমরা জানি। ট্যাকটিক্স ভাল না হলে আমরা বিশ্বকাপের পরের রাউন্ডে পৌঁছব না। টিম সেটা জানে বলে ভেতর থেকে ফোকাসড আছে।
প্র: নেইমার কি খেলায় একমনা? এই যে প্লেবয় ওকে নিয়ে স্টোরি করছে?
স্কোলারি: প্লেবয় আবার কী করল? জানি না ভাই, আমার বয়সে প্লেবয় ম্যাগাজিনটা আর প্রাসঙ্গিক নয়।
থিয়াগো (কথা কেড়ে নিয়ে): আমি নেইমারের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি সময় কাটাই আর তাই জানি ও তপস্যা করার মতোই ফুটবল আরাধনা করে। আপাদমস্তক টিমম্যান। সবার সঙ্গে মিলে চলে।
প্র: ফিলিপাও (স্কোলারিকে এই নামে ডাকে ব্রাজিল ফুটবলমহল) আপনার ডিফেন্স নিয়ে কিন্তু ব্যাপক চিন্তা থেকেই গেল।
স্কোলারি: ডিফেন্স ঠিক আছে। তেমন হলে দাভিদ লুইজকে বলে দেব এটায় চেলসির মতো অ্যাটাকে যাস না। পেছনটায় থাকিস।