পদক নিয়ে সঞ্জিতা (ডান দিকে) ও সাইখম।
বাঙালি ভারোত্তোলকের সোনা জয় গ্লাসগোতে। পুরুষদের ৫৬ কেজি বিভাগে বৃহস্পতিবার সোনা জিতলেন বাংলার সুখেন দে। সুখেন ছাড়া মণিপুরের কুড়ি বছরের মেয়ে খুমুকচাম সঞ্জিতা চানুও এ দিন সোনা আনলেন সেই ভারোত্তোলনেই। জোড়া সোনার শৌর্যে গ্লাসগো গেমসে সোনার শুরু করল ভারত।
ভারোত্তোলনের আটচল্লিশ কিলোগ্রাম বিভাগে মোট ১৭৩ কিলোগ্রাম তুলে দেশকে প্রথম সোনাটা দিলেন খুমুকচাম সঞ্জিতা চানু। রুপো জিতলেন মণিপুরেরই উনিশ বছরের সাইখম মীরাবাঈ চানু। পুরুষদের ৫৬ কেজি বিভাগে ব্রোঞ্জ জিতেছেন গণেশ মালি। জুডোর ম্যাটেও দু’টি রুপো ও একটি ব্রোঞ্জ জেতায় প্রথম দিনে (ভারতীয় সময় রাত ২ টো পর্যন্ত) ভারতের পদক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাত।
যে কুঞ্জরানি দেবীর সময় থেকে ভারোত্তোলোনের ৪৮ কিলোগ্রাম বিভাগে ভারত দাপট দেখিয়ে এসেছে, সেই কুঞ্জরানি এ দিন কোচের নতুন ভূমিকায় প্ল্যাটফর্মে হাজির ছিলেন নিজের দুই ছাত্রীর পাশে। এবং লাগাতার দেশোয়ালি ভাষায় তাতিয়ে যান দু’জনকে। যাতে একটা সময় প্রতিযোগিতা পর্যবসিত হয় স্রেফ দুই ভারতীয় মেয়ের লড়াইয়ে। শেষ পর্যন্ত সঞ্জিতার কাছে হার মানেন বয়সে এক বছরের ছোট মীরাবাঈ। অবশ্য স্ন্যাচ এবং ক্লিন অ্যান্ড জার্ক মিলিয়ে (৭৭+৯৬) ১৭৩ কিলোগ্রাম তুললেও মাত্র দু’ কিলোগ্রামের জন্য গেমস রেকর্ড হল না সঞ্জিতার। চার বছর আগের দিল্লি গেমসে ১৭৫ তুলে গেমস রেকর্ড করেন নাইজিরিয়ার অগাস্টিনা নোয়াওকোলো। তবে স্ন্যাচে অগাস্টিনার ৭৭ কিলোগ্রামের রেকর্ড স্পর্শ করলেন সঞ্জিতা। মীরাবাঈ তোলেন ১৭০ (৭৫+৯৫) কিলোগ্রাম। সেখানে নাইজিরিয়ার ব্রোঞ্জ জয়ী নকেচি ওপারা তুললেন মাত্র ১৬২ কিলোগ্রাম।
সোনার দৌড়ে ছিলেন মণিপুরের আর এক টিনএজার সুশীলা লিকমাবাম। উনিশ বছরের সুশীলা অস্ট্রেলীয় প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারিয়ে জুডোর ৪৮ কিলোগ্রাম বিভাগে ফাইনালে উঠেও হেরে গেলেন। রুপোতেই সন্তুষ্ট থাকতে হল। পুরুষদের ৬০ কিলোগ্রাম বিভাগে দক্ষিণ আফ্রিকার ড্যানিয়েল লে গ্রাঞ্জেকে মাত্র ১ মিনিট ৫১ সেকেন্ডে মাত করে দিয়ে ফাইনালে উঠে সাড়া ফেলেছিলেন পঞ্জাবের জুডোকা নভজ্যোৎ চানা। কিন্তু চূড়ান্ত যুদ্ধে পরাজিত হওয়ায় তাঁর ভাগ্যেও রুপোই জুটলো। দিনের একমাত্র ব্রোঞ্জটিও আনলেন ইম্ফলের জুডোকা কল্পনা থউদাম। মেয়েদের ৫২ কিলোগ্রাম বিভাগের শেষ আটে হারলেও, রেপেশাজে জিতে পদকের লড়াইয়ে যান এবং পেনাল্টি পয়েন্টে জেতেন।
সশরীরে নয়। কমনওয়েলথ গেমসের উদ্বোধনে সচিন তেন্ডুলকরের
আবির্ভাব স্টেডিয়ামের জায়ান্ট স্ক্রিনে। ইউনিসেফের দূত হয়ে।
হকিতে কানাডাকে ৪-২ হারিয়ে উজ্জ্বল শুরু করলেন ভারতের মেয়েরা। জোড়া গোল যশপ্রীত কউরের। একটি করে গোল করেন রানি রামপল ও পুনম রানি। ব্যাডমিন্টনে আবার সাইনা নেহওয়াল বিহীন ভারতীয় টিম মিক্সড ইভেন্টে শুরুতেই দুর্বল ঘানাকে দুরমুশ করল ৫-০। সাতাশ মিনিটে জিতে ঘানার উপর চাপ তৈরি প্রথম শুরু করেন পারুপল্লী কাশ্যপ। এর পর পুসারলা বেঙ্কট সিন্ধু জেতেন ২১-৭, ২১-৫। জ্বালা গাট্টা-অশ্বিনী পোনাপ্পা জুটি প্রতিপক্ষের চ্যালেঞ্জ ঝেড়ে ফেলতে সময় নেন মাত্র ১৭ মিনিট। পুরুষদের ডাবলস এবং মিক্সড ডাবলসেও হেসেখেলে জেতে ভারত। চার বছর আগের দিল্লি গেমসে টেবল টেনিসে মেয়েদের দলগত রুপো জিতে চমকে দিয়েছিল ভারত। এ দিনও বার্বেডোজের বিরুদ্ধে শামিনি কুমারেসন, মণিকা বাত্রা ও মধুরিকা পাটকরের টিম নিখুঁত খেলে ৩-০ জয়ে শুরু করল অভিযান। অচান্ত শরৎ কমলদের ভারত সহজে ৩-০ হারাল ভানুয়াতু ও উত্তর আয়ার্ল্যান্ডকে।
ছবি: পিটিআই