একই সঙ্গে ব্রাজিল কাঁদছে এবং ফুটছে। তাদের সোনার ছেলের জন্য ফেলা চোখের জলের প্রতিটা বিন্দু স্ফুলিঙ্গ হয়ে জ্বলছে যখন উঠে আসছে আর একটা নাম জুয়ান জুনিগা।
কলম্বিয়ার এই ডিফেন্ডারের হাঁটু নেইমারের স্বপ্ন শেষ করে দেওয়ার পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে একের পর এক হুমকি দেওয়ার পালা কেউ বলছেন, কলম্বিয়া যে হোটেলে আছে তার ছাদে হেলিকপ্টার নামাতে হবে। না হলে জুনিগা ব্রাজিল ছাড়তে পারবেন না। কেউ বলছেন, ব্রাজিলে থাকাকালীন রাতে আর ঘুমিও না জুনিগা। অনেক কিছু ঘটে যেতে পারে।
আর খলনায়ক কী বলছেন? তৃতীয় ভার্টিব্রা ভেঙে নেইমারের বিশ্বকাপ শেষ করে দেওয়ার পর রদ্রিগেজের সতীর্থ এই ফুল ব্যাকের যুক্তি, “কারও ক্ষতি করার জন্য এমনটা করিনি। আমি আমার জার্সির সম্মানরক্ষার জন্য লড়ছিলাম।” তখন ১-২ পিছিয়ে কলম্বিয়া। বিশ্বকাপ থেকে তাদের ছিটকে যেতে আর মাত্র দু’মিনিট বাকি। সেই রাগটাই কি এসে পড়ল নেইমারের উপর? নাপোলির এই ফুটবলার ইতালির সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, “যা করি দলের উপকারের জন্যই করি। যে দলের জার্সি পরে মাঠে নামি, সেই দলের কথা ছাড়া মাথায় অন্য কিছু থাকে না। তবে কখনও কারও ক্ষতি করার জন্য মাঠে নামি না। নেইমারের কোনও ক্ষতি করার অভিসন্ধি আমার ছিল না।” সেই মুহূর্তে ঠিক কী হয়েছিল, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে জুনিগা বলেন, “আমরা দু’জনই তখন বলের নাগাল পেতে চাইছিলাম। বল দখলের লড়াই যেমন হয়, তেমনই হয়েছিল। আসলে দু’জনেই মরিয়া হয়ে উঠেছিলাম। নেইমারকে আঘাত করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়িনি। ওর পক্ষে খুব খারাপ হল। ঈশ্বর করুন, ও যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠে।” ব্যক্তিগত ভাবে নেইমারকে চিঠিও পাঠালেন ফোর্তালেজার খলনায়ক। লিখলেন, “আমি তোমায় সমীহ করি। শ্রদ্ধা করি। আমার মতে তুমি বিশ্বের সেরা ফুটবলারদের মধ্যে একজন। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে আবার মাঠে ফিরবে তুমি।”
বল দখলের লড়াইয়ে এমন মরিয়া হয়ে ওঠার স্বভাব জুনিগার বরাবরই। ২০০৫-এ যখন কলম্বিয়ার যুব দল থেকে সিনিয়র দলে ডাক পান তিনি। তবে বিতর্ক মাঝে মাঝেই তাড়া করেছে।
নাম জুয়ান জুনিগা
পজিশন ডিফেন্ডার (ফুলব্যাক)
ক্লাব নাপোলি (ইতালি)
উচ্চতা ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি
ওজন ৭২ কেজি
২০০৫-এ কলম্বিয়ার সিনিয়র দলের জার্সিতে অভিষেক। এখনও পর্যন্ত দেশের হয়ে ৫৭ ম্যাচ খেলেছেন।