কেকেআর সংসারে তিনি নতুন নন। টিমকে দু’টো আইপিএল দিয়েছেন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টি-টোয়েন্টিতে নাইটদের রমরমার পিছনেও প্রধান কারণ তাঁর মিস্ট্রি স্পিন। যা আজ নয়, চার বছর ধরে টানছে নাইট সংসারকে। কেকেআর তাই বুঝে পাচ্ছে না, হঠাৎ করে এখন কেন? নাইট সংসারে চার বছর কাটিয়ে ফেলার পর এখন কেন প্রশ্ন উঠছে সুনীল নারিনের ‘কুইকার ডেলিভারি’ নিয়ে?
সোমবার ডলফিন্সকে হারিয়ে ওঠার পরে আচমকা বোলিং অ্যাকশন নিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন নারিন। ম্যাচের দুই আম্পায়ার তো বটেই, তৃতীয় আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনাও রিপোর্ট দেন ক্যারিবিয়ান মারণাস্ত্রের অ্যাকশন নিয়ে। বলা হয়, কুইকার ডেলিভারির সময় নারিনের অ্যাকশন সন্দেহজনক। আপাতত তাঁকে খেলতে দেওয়া হবে। সেমিফাইনালে তাঁর নামতে বা বল করতে সমস্যা নেই। কিন্তু আর এক বার যদি তাঁর নামে রিপোর্ট জমা হয়, টুর্নামেন্ট থেকে তৎক্ষণাৎ বাতিল হয়ে যাবেন নারিন।
যে রায় শোনার পর গত রাতেই বিস্মিত হয়ে যান কেকেআরের কোনও কোনও কর্তা। নারিন শোনা গেল পুরো সময়টা খোশমেজাজেই ছিলেন। টানা তেরো ম্যাচ জয়ের উদ্যাপনেও ছিলেন। হায়দরাবাদে কেকেআরের টিম হোটেল থেকে ১৩ লেখা বিশাল কেকের ব্যবস্থা হয় নাইটদের জন্য। নারিন সেখানে ছিলেন। কেউ কেউ রাতে টেবল টেনিস খেলছিলেন। নারিন সেখানেও ঢুঁ মেরে আসেন। তাঁর হাবভাব দেখে নাকি বোঝা যায়নি, বোলিং নিয়ে আচমকা ফতোয়ায় তিনি বিন্দুমাত্র বিচলিত।
নাইট কর্তারাও যে ব্যাপারটাকে খুব পাত্তা দিচ্ছেন এমন নয়। ফোনে এক কেকেআর কর্তা বরং বললেন, আইপিএলের বিদেশি আম্পায়ারদের নারিন নিয়ে কিছু মনে হয়নি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এত দিন ধরে খেলছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে। আইসিসির কখনও তাঁর অ্যাকশন নিয়ে কিছু মনে হয়নি। সেখানে আচমকাই দু’জন আম্পায়ার নারিনের অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই পরিস্থিতিতে কী করা হবে? সেমিফাইনালে আর এক বার তাঁর অ্যাকশন নিয়ে রিপোর্ট জমা পড়লে তো ফাইনালে টিম উঠলেও নারিন নামতে পারবেন না।
শোনা গেল, নারিনকে ছাড়া সেমিফাইনালে নামার সম্ভাবনা এখন পর্যন্ত নেই। বড়জোর তাঁকে বলা হতে পারে কুইকার ডেলিভারিটা না করতে। তা-ও সেটা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন নারিনই। নাইট ম্যানেজমেন্টের কেউ কেউ বলে দিচ্ছেন, কুইকার ডেলিভারি নারিন এমনিতেই কম করেন। তা ছাড়া ডলফিন্স ম্যাচের আম্পায়াররা সেমিফাইনাল খেলাবেন, গ্যারান্টি নেই। অন্য আম্পায়ারদের নারিনের অ্যাকশন নিয়ে কিছু না-ও মনে হতে পারে। বলা হচ্ছে, লাহৌর লায়ন্সের স্পিনার আদনান রসুলকেও তো সন্দেহজনক অ্যাকশনের আওতায় ফেলা হল। তাই বলে রসুলকে পরের ম্যাচে বাদ দিয়ে নেমেছে লাহৌর? নাকি অধিনায়ক মহম্মদ হাফিজকে বাদ দিয়ে নামবে? হাফিজকেও তো একই সমস্যায় পড়তে হয়েছে। তা হলে কেকেআর আর নারিন ছাড়া নামতে যাবে কেন?