আজ কোলাসোর ভরসা র্যান্টি।
মাঠের ভিতরে হোক কিংবা মাঠের বাইরে, ইদানীং বিভিন্ন সময়ে বিতর্কে জড়িয়েছে আর্মান্দো কোলাসোর ইস্টবেঙ্গল। যার প্রভাব পড়েছে টিমের পারফরম্যান্সেও। তবে সে সব অন্ধকার অতীত ভুলে শূন্য থেকে শুরুর পরিকল্পনা লাল-হলুদ শিবিরে। আর হয়তো সে জন্যই রবিবার আই লিগের প্রথম ম্যাচে র্যান্টি মার্টিন্সদের প্রধান প্রতিপক্ষ স্পোর্টিং ক্লুব দ্য গোয়া নয়, বরং নিজেদের আত্মবিশ্বাসের অভাব! মারগাও থেকে অর্ণব মণ্ডলদের ম্যানেজার অ্যালভিটো ডি’কুনহা বলছিলেন, “স্পোর্টিংয়ে কে খেলছে, না খেলছে তা নিয়ে আমরা একেবারেই ভাবছি না। এই মুহূর্তে আমাদের একটাই উদ্দেশ্য-- কী ভাবে টিমকে চাঙ্গা করা যায়। আমি নিশ্চিত, রবিবার জিতলে, অনেক সমস্যা মিটে যাবে! ড্র করলেও চলবে।”
ইস্টবেঙ্গল ম্যানেজারের কথাতেই স্পষ্ট, যে আই লিগের শুরুতে কোনও ভাবেই হেরে ফিরতে চাইছেন না তাঁরা। তবে ফেডারেশন কাপে যে টিমের বিরুদ্ধে ৩-১ এগিয়ে থেকেও ৩-৪ গোলে হারতে হয়েছিল, সেই স্পোর্টিংয়ের বিরুদ্ধে কি আদৌ প্রতিশোধ নিতে পারবেন মেহতাবরা? ইস্টবেঙ্গলের সবচেয়ে বড় সমস্যা, চোটের জন্য দলের নিয়মিত চার ফুটবলার খেলতে পারবেন না (ডুডু, খাবরা, লালরিন্ডিকা ও গুরবিন্দর)। যদিও কোচ আর্মান্দো কোলাসো তাঁকে তেমন গুরুত্ব দিতে নারাজ। মারগাওতে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বললেন, “ওরা চার জনই টিমের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। কিন্তু ওরা নেই বলে তো আমরা সাত জনে খেলব না। নতুন যারা সুযোগ পাবে, তাদের কাছে এই ম্যাচটা খুবই জরুরি। নিজেদের চেনানোর সেরা মঞ্চ।”
নতুন টুর্নামেন্টে নিজেদের উদ্বোধনী ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের প্রথম এগারো কী হবে সেটা কোলাসো স্পষ্ট করে বলতে না চাইলেও, তাঁর ইঙ্গিতে বোঝা গেল, অবিনাশ রুইদাসের মতো তরুণদের রবিবারের ম্যাচে খেলার সম্ভাবনা প্রবল। মোটামুটি যা ঠিক হয়েছে, তাতে চার ডিফেন্ডার সৌমিক, অভিষেক, সুসাক ও অর্ণব। মাঝমাঠে লোবো, মেহতাব, রফিক/সুখবিন্দর, অবিনাশ। ফরোয়ার্ডে জোয়াকিম-র্যান্টি জুটি। গোলে শুভাশিস। ম্যাচের দিন সকালে টিম নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন লাল-হলুদ কোচ। তবে ডুডু না থাকায় লাল-হলুদের অ্যাটাকিং থার্ডে র্যান্টির উপর যে বাড়তি চাপ থাকবে, সেটা স্বীকার করে নিলেন টিমের অনেক ফুটবলারই।
শনিবার সকালে ঘণ্টাখানেক প্র্যাকটিসের পরে টিমকে বিশ্রামে পাঠিয়ে দেন কোলাসো। বিকেলে জিম বা সুইমিং সেশন কিছুই হয়নি। আই লিগের এত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে এত ঘন ঘন বিশ্রামের রহস্য কী? লাল-হলুদ কোচ সোজাসুজি আঙুল তুললেন আইএসএলের দিকে। তাঁর কথায়, “আইএসএলের জন্য অনেক ফুটবলার বাইরে ছিল। বিভিন্ন কোচেরা বিভিন্ন স্টাইলে দলকে খেলিয়েছে। সেখানে থেকে আবার নতুন করে মানিয়ে নিতে গেলে একটু সময় তো লাগবেই। ফেড কাপের আগে ফুটবলাররা ঠিকভাবে বিশ্রামও পায়নি। আশা করি, আই লিগে সেই সমস্যা হবে না।” কিন্তু প্রশ্ন হল, কোচের অনুমতি নিয়েই তো বাইশ ফুটবলার ছাড়া হয়েছিল। তা হলে এখন অযথা চিত্কারের কারণ কী?
স্পোর্টিংকে টপকাতে অবশ্য কোলাসোর নীল নকশা তৈরি। উলফ ভাল স্ট্রাইকার। সেটা মাথায় রেখেই ঠিক করা হয়েছে শুরু থেকে আক্রমণে যাওয়া হবে না। প্রথমে ডিফেন্সটা গুছিয়ে নিয়ে পরে দরকার পড়লে আলআউট খেলবেন র্যান্টিরা। ইস্টবেঙ্গল যেমন ঘর গোছাতে ব্যস্ত। তেমনই আবার ঘরের মাঠে আই লিগের প্রথম জয় পেতে মরিয়া স্পোর্টিংও। চুকুয়ামার টিম ধরে রাখতে চায় ফেড কাপের ধারাবাহিকতা। তাই ডুডু না থাকলে কী হবে, র্যান্টি মার্টিন্স তো আছেন! দেশের অন্যতম সেরা বিদেশি স্ট্রাইকারকে কিন্তু একেবারেই হালকা ভাবে নিচ্ছে না তাঁরা। আই লিগ শুরুর আগেই কোফির বদলে নর্থইস্ট ইউনাইটেড থেকে মিগুয়েল গার্সিয়াকে তুলে নিয়ে এসেছে। যাতে নাইজিরিয়ান গোলমেশিনকে আটকাতে কোনও রকম অসুবিধা না হয়। যদিও শনিবার বিকেল পর্যন্ত ঠিক থাকলেও, রাতে জানা যায় গার্সিয়া খেলতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, বইমা কারপেও চোটের জন্য নেই। যা দাঁড়াচ্ছে, রবিবার স্পোর্টিংয়ের দুই বিদেশি কালু ও উলফ খেলছেন। আর্মান্দোর হাতে অবশ্য তিন বিদেশি মজুত।