শুভময় দাস এবং অনুষ্টুপ মজুমদার দুই অভিজ্ঞ বাংলা ক্রিকেটারের রঞ্জি কেরিয়ার কি শেষ হওয়ার মুখে?
মঙ্গলবার রঞ্জির প্রাথমিক দল নির্বাচনী বৈঠকের পর প্রশ্নটা উঠে পড়ল বাংলার ক্রিকেটমহলে। যখন বত্রিশ জনের প্রাথমিক দল থেকে বাইরে রাখা হল দুই ক্রিকেটারকে। যার মানে, বাংলার সেরা বত্রিশ ক্রিকেটারের মধ্যে শুভময় বা অনুষ্টুপ নেই। দু’জনেরই গত রঞ্জি মরসুমে পারফরম্যান্স ভাল নয়। ৭ ম্যাচে ২৬ গড় নিয়ে ২৯৩ রান করেন শুভময়। অনুষ্টুপ ৫ ম্যাচে ১৫৬, গড় ২২। ক্লাব ক্রিকেটেও আহামরি কিছু করেননি। ‘ভিশন ২০২০’-তে রাখাই হয়নি শুভময়কে। অনুষ্টুপ শেষ সুযোগ পেয়েছিলেন। কেএসসিএ টুর্নামেন্টে তাঁকে পাঠান সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু সেখানে ৯৩-এর একটা ইনিংস বাদে রান পাননি। বছর দু’য়েক আগে অনুষ্টুপ ভারত ‘এ’ টিমে খেলেন। দলীপে পূর্বাঞ্চলের জয়ের পিছনে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। শুভময়ের চেয়ে তাঁর ফর্মের অধঃপতন অনেকের তাই বেশি আশ্চর্য ঠেকছে।
বাংলার নির্বাচকরা বলে দিচ্ছেন, দু’জনের রঞ্জি কেরিয়ার শেষ হয়ে গেল ভাবার কারণ নেই। স্থানীয় ক্রিকেটে ভাল করলে ডাকা যেতে পারে। তবে বাংলার কোচ অশোক মলহোত্র বলছেন, সম্ভাবনা নেই। শুভময়-অনুষ্টুপের থেকে অনেক আশা করেছিলেন গত মরসুমে। কিন্তু টিমের প্রয়োজনে তাঁরা ব্যর্থ। স্থানীয় ক্রিকেটে পারফরম্যান্স গুরুত্বপূর্ণ নয় অশোকের কাছে। তিনি বলছেন, “আমি ডাকার আর কারণ পাচ্ছি না। অনুষ্টুপকে নিয়ে গত বার প্রবল উৎসাহী ছিলাম। কোথায় খেলাইনি ওকে? টপ, মিডল, কোথাও ও রান দিতে পারেনি। শুভময়কেও গত বার সব ম্যাচে খেলালাম। কী পেয়েছি?” নির্বাচকদের কেউ কেউ অনুষ্টুপকে সুযোগ দিতে চাইলেও অশোক অনড় ছিলেন। তিনি সাত নম্বরে নতুন মুখ খুঁজছেন। “মানসিক ভাবে টাফ কেউ। যে আমাকে রানটা দেবে,” বলছিলেন তিনি। যে স্লটে আপাতত এগিয়ে ইস্টবেঙ্গলের শুভজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুভময়ের শুধু ব্যাটিং ফর্ম। তবে অনুষ্টুপের বিরুদ্ধে জোড়া অভিযোগ, ফর্ম ও মানসিকতা। ম্যানেজমেন্টের অনেকেই আবিষ্কার করেছেন, হঠাৎই অনুষ্টুপের মধ্যে টাফনেসের অভাব দেখা যাচ্ছে। দরকারে চাপ নিতে পারছেন না। নির্বাচকরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, দু’জনের তিরিশের কাছাকাছি বয়স তাঁদের বাদ যাওয়ার কারণ নয়। প্রমাণ বাঁ হাতি স্পিনার শিবসাগর সিংহ। বাংলার বত্রিশ জনের এক জন।
শুভময়-অনুষ্টুপ যে দিন গ্রহণের দিকে পা বাড়ালেন, সে দিন তাঁর কামব্যাক ঘটল। বহু দিন পর বাংলা টিমে আবার শিবসাগর। চৌত্রিশ বছর বয়সে, ক্লাব ক্রিকেটে ৭২ উইকেট নিয়ে।