তাম্বের দিনে কাহিল কোহলি।
দু’দিন আগে শেষ মুহূর্তের ধাক্কায় হার। আর শনিবার শুরু থেকেই ধাক্কার পর ধাক্কা। দেখা যাচ্ছে ইদানীং আরসিবি-র শেষ, শুরু কোনওটাই ভাল হচ্ছে না। কেকেআরের কাছে হারটা ছিল শেষ ওভারে। রাজস্থান রয়্যালসের কাছে প্রথম ওভার থেকেই ছিল হারের সঙ্কেত। শেষ পর্যন্ত ৭০ রানে গুটিয়ে গিয়ে আইপিএলে নিজেদের সর্বনিম্ন স্কোর করল আরসিবি। ম্যাচ হারতে হল ছ’উইকেটে।
১৩ ওভারে রানটা তুলে ফেলে যখন রাজস্থান অধিনায়ক শেন ওয়াটসন বলছিলেন, “চেন্নাইয়ের কাছে হারের পর এ ভাবে ফিরে আসাটা দারুণ ব্যাপার”, তখন তাঁর মুখে তৃপ্তির হাসি। ওয়াটসনের মুখে হাসি ফুটিয়ে গেলেন ৪২ বছরের এক লেগ স্পিনার। প্রবীণ তাম্বে। ২০ রানে চার উইকেট নিয়ে বিরাট কোহলির দলের মেরুদণ্ডটাই ভেঙে দিলেন তিনি। তাম্বেকে নিয়ে তাঁর অধিনায়ক বলে গেলেন, “ব্যাটসম্যানের মন খুব ভাল পড়ে ফেলতে পারে ও। ওকে নেটে খেলেই বুঝেছি, খুব ধুরন্ধর বোলার।”
তাম্বের আগে অবশ্য শুরুতেই আরসিবি ব্যাটিংয়ের ধস নামিয়ে দেন স্টুয়ার্ট বিনি ও কেন রিচার্ডসন। এক ওভার করেই উইকেট বিনির। আর তাঁর প্রথম ওভারে যুবরাজ ও ডেভিলিয়ার্সের উইকেট তুলে নেন রিচার্ডসন।
টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামা রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ইনিংসের প্রথম ১৪ বলেই চার উইকেট খুইয়ে যখন অশনি সঙ্কেত দেখছে, তখন বড় ধাক্কাটা দেন তাম্বে। বিরাট কোহলিকে ফিরিয়ে। ম্যাচ শেষে কোহলি বলছিলেন, “মনে হচ্ছে, আজ আমরা মাঠে নামিইনি। খুব দ্রুত ভুলতে চাওয়া দিনগুলোর মধ্যে এটা অবশ্যই একটা। যখন প্রতি ওভারে একটা করে উইকেট চলে যায়, তখন ভাবুন, কী মারাত্মক চাপ তৈরি হয়। যখন আমি ব্যাট করতে নামলাম, উইকেটটা খারাপ ছিল না। কিন্তু পরপর উইকেট পড়লে এমনটাই হয়ে থাকে।” উইকেট নিয়ে ওয়াটসনের মন্তব্য, “আগের দিনের চেয়ে এ দিন এখানকার উইকেট একটু বেশিই শুকনো ছিল।” বেঙ্গালুরু ইনিংসে এ দিন কোহলির ২১-ই সর্বোচ্চ। ৪৬-৭ থেকে আইপিএলের সর্বনিম্ন ইনিংস ৫৮ টপকানোর লড়াইটা সহজ না হলেও স্টার্ক (১৮) ও রামপল (১৩) তা করে ফেলেন। কিন্তু দলকে লড়াইয়ের রাস্তায় ফেরানো সম্ভব হয়নি তাঁদের পক্ষে।
যুবরাজ এ দিন মাত্র তিন রানেই ফিরে যান। আইপিএলের প্রথম ম্যাচে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের ২৯ বলে ৫২-র ইনিংসের পর থেকে যুবরাজের ব্যাট থেকে আগুন ছিটকে না বেরনোটা তাঁর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভবিষ্যতের পক্ষে যে খুব একটা ভাল নয়, বিশেষজ্ঞরা তেমনই বলতে শুরু করলেও কোহলি তাঁকে আরও সুযোগ দেওয়ার পক্ষপাতী। এ দিন মাত্র সাত বল খেলেন যুবি। দু’বার টিম সাউদি তাঁকে বিট করেন। শেষে রিচার্ডসনের একটি ১২৯ কিমি-র আউটসুইঙ্গারে ব্যাট ছুঁইয়ে দ্বিতীয় স্লিপে স্মিথকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান।
চাপমুক্ত রাজস্থান ওপেনার রাহানের ২৩ ও ওয়াটসনের ২৪-ই মূলত জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রানটা তুলে দেয়। দ্বিতীয় জয়ের পর রাজস্থানের খাতায় এখন চার ম্যাচে চার পয়েন্ট। পরপর জোড়া হারের পর আরসিবি-রও চার ম্যাচে চার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
আরসিবি: ৭০ (কোহলি ২৩, তাম্বে ৪-২০)।
রাজস্থান: ১৩ ওভারে ৭১-৪ (ওয়াটসন ২৪, স্টার্ক ২-২৯)।