এ যেন মেঘ না চাইতেই জল!
আটলেটিকো দে কলকাতার বিরুদ্ধে খেলতে নামার চব্বিশ ঘণ্টা আগে হঠাত্-ই নির্বাসনের সুখবর এসে পৌঁছয় কেরল ব্লার্স্টাসের ড্রেসিংরুমে।
নির্বাসিত হওয়ার জন্য রবিবার ফিকরু তেফেরাকে পাবে না কলকাতা। একই কারণে রিজার্ভ বেঞ্চে বসতে পারবেন না কোচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাসও। এ ছাড়াও চোটের জন্য অনিশ্চিতের তালিকায় লুই গার্সিয়া, ডেঞ্জিল ফ্রাঙ্কোর মতো প্রথম একাদশের ফুটবলাররা। দেখে মনে হল, শনিবার প্র্যাকটিসে নামার আগেই যেন বাড়তি অক্সিজেন পেয়ে গিয়েছেন ডেভিড জেমস, মেহতাব হোসেন, পেন ওরজিরা।
যদিও প্রকাশ্যে প্রত্যেকেই অন্য কথা বলছেন। দলের ম্যানেজার এবং মার্কি ফুটবলার জেমস যেমন বলেন, “ম্যাচ খেলতে খেলতে আমি দল পরিচালনা করি। সুতরাং কোন টিমের কোচ রিজার্ভ বেঞ্চে থাকল বা কে থাকল না, সেটা নিয়ে কোনও মাথাব্যথা নেই।” টিমের মিডিও মেহতাব হোসেন আবার বললেন, “লোপেজ রিজার্ভ বেঞ্চে না থাকলেও তাঁর নির্দেশ অনুযায়ী আটলেটিকো খেলবে। তাই রিজার্ভ বেঞ্চে ওর না থাকাটা বড় কোনও ফ্যাক্টর হতে পারে না।” আর ফিকরুর না থাকা বা চোটের তালিকায় থাকা গার্সিয়া-সহ বাকি ফুটবলারদের নিয়ে অনিশ্চয়তা কি ম্যাচের আগেই স্বস্তি এনে দিচ্ছে না কেরল শিবিরে? মনে যাই থাকুক, মুখে অবশ্য কেরলের কোচ মর্গ্যান বলে দেন, “আটলেটিকো দারুণ ছন্দে রয়েছে। ফিকরু নেই তো কী হয়েছে, বাকিরা রয়েছে। প্রথম দলে সুযোগ পেয়ে কেভিন লোবোই তো দুরন্ত গোল করেছে। আমাদের খেলাটা খেলতে হবে।”
আটলেটিকোর সর্বনাশের দিনে অবশ্য কেরলের যে পুরোপুরি পৌষ মাস, এমনটা বলা যাবে না। প্র্যাকটিসে গোড়ালিতে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন টিমের ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ স্ট্রাইকার মাইকেল চোপড়া। অ্যাম্বুল্যান্সে তাঁকে বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চোটের এমআরআই-সহ বাকি পরীক্ষা হয়েছে। তবে সূত্রের খবর, মাইকেল চোপড়ার চোটের যা পরিস্থিতি রবিবারের ম্যাচে তাঁকে না পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
এখনও পর্যন্ত দু’ ম্যাচ খেলে দু’টিতেই হেরেছে মর্গ্যানের টিম। তারা এই মুহূর্তে আইএসএলের লাস্ট বয়। কেরলের সাফল্য না পাওয়ার কারণ হিসেবে মর্গ্যান বলছেন, “বহু সুযোগ তৈরি হলেও শেষ পর্যন্ত গোলের মুখ খুলতে ব্যর্থ হচ্ছে টিম। অন্য দলগুলো গোল পেয়ে যাওয়ায় আমরা পিছিয়ে পড়ছি।” যাঁর উপর গোল আটকানোর ভার, সেই ডেভিড জেমস কিন্তু আটলেটিকোকে হারানোর বিষয়ে প্রবল আশাবাদী। বিশ্বকাপের মঞ্চে সবচেয়ে বয়স্ক ফুটবলার হিসেবে ২০১০-এ অভিষেক হয়েছিল জেমসের। শনিবার প্র্যাকটিসের পর সেই সব পুরনো স্মৃতি হাতড়ানোর পাশাপাশি কেরলের ম্যানেজার জানিয়ে দিলেন, “আটলেটিকোকে হারিয়ে তিন পয়েন্ট পাওয়াই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।” দলের অন্যতম মালিক সচিন তেন্ডুলকর যুবভারতীতে উপস্থিত থাকবেন কি না, এখনও পর্যন্ত খবর নেই। তবে আটলেটিকোকে হারিয়ে মাস্টার ব্লাস্টারকে জয় উত্সর্গ করতে চায় টিম।
ছোট ছোট ভুল করে গোল খাওয়ার জন্য কেরলের ম্যানেজার তথা মার্কি ফুটবলারকে ইংল্যান্ডে ‘ক্যালামিটি জেমস’ বলে ডাকা হত। ইংল্যান্ডের সেই কিপারকেই এ দিন প্র্যাকটিসে দেখা গেল, সন্দীপ নন্দীরা ভুল করলে রীতিমতো বকাবকি করছেন। কখনও আবার হাতে ধরে সন্দীপ বা লুই ব্যারেটোর ভুল শুধরে দিচ্ছেন। নিজে প্র্যাকটিস করার মাঝেও কড়া নজর রাখছিলেন টিমের বাকি ফুটবলারদের দিকে। আসলে টিমের সাফল্য না এলে যে সমস্যায় পড়ে যাবেন জেমসও। কারণ দলের ম্যানেজার-সহ মার্কি ফুটবলার হওয়ায় তাঁর দায়িত্বও দ্বিগুণ। তাই আইএসএলের দু’ম্যাচ কেরল হেরে বসে থাকলেও আটলেটিকোর বিরুদ্ধে আর কোনও রকম সর্বনাশ চান না ইংল্যান্ডের ‘ক্যালামিটি জেমস’।