আশা করছি নববর্ষটা আপনাদের ভাল কেটেছে। এই একটা দিন মনে হয়, কেন যে আইপিএলটা ভারতে হচ্ছে না! তা হলে কলকাতায় থাকতে পারতাম। বাঙালি সতীর্থদের সঙ্গে কলকাতায় নববর্ষ কাটানোটা আলাদা অভিজ্ঞতা। আমার বাঙালি সতীর্থ সাকিব, দেবব্রত দাস আর টিম ম্যানেজার জয় ভট্টাচার্য নিশ্চয়ই তাদের পরিবারকে খুব মিস করছে। এমনিতে আমার কাছে মিষ্টিমুখ মানে হট চকোলেট ফাজ। কিন্তু আজ নিজেকে অবাক করে দিয়েই দুটো রসগোল্লা আর একটু মিষ্টি দই খেয়ে ফেললাম।
তবে সত্যি বলতে, জেতার চেয়ে মিষ্টি আর কিছু নেই। অনেকেই বলেন আমি বেশি ফোকাস্ড, রিল্যাক্স করি না। আমি এ রকমই। কিন্তু এটা নিয়ে আমার কিছু করার নেই। নিজেকে হট চকোলেট ফাজের গামলায় ডুবিয়ে দিতে পারি। বা যে সব কাজ ভালবাসি সেগুলো করে যেতে পারি। কিন্তু একটা ম্যাচ জেতার যে অনুভূতি, এগুলো কিছুই তার জায়গা নিতে পারবে না। আমি জেতার ব্যাপারে পাগল।
আইপিএল সেভেনের যাত্রাটা আজ শুরু। এই সে দিনই এক জন জিজ্ঞেস করছিলেন, টুর্নামেন্ট শুরুর আগের দিনগুলো আমার কী মনে হয়? বিশাল নাগরদোলায় বসে সেটা নামার সময় মনের যা অবস্থা হয়, এই অনুভূতিটাও সে রকম। মনে হয় পেটে প্রজাপতি উড়ে বেড়াচ্ছে। যে ক’জন ক্রিকেটারকে চিনি, তাদের সবারই এক অনুভূতি হয়। সে বীরেন্দ্র সহবাগের মতো নির্বিকার হলেও। এই একটা অনুভূতির জন্যই বোধহয় ক্রিকেটটা খেলা হয়।
এখানকার মাঠগুলো খুব ভাল। পিচগুলো অত্যাধুনিক। কয়েকটা ট্র্যাক রানের স্বর্গ। তবে জায়গাটা আমার এত ভাল লাগে কারণ, আমিরশাহির ক্রিকেট ছোটবেলার কথা মনে পড়িয়ে দেয়। মনে পড়িয়ে দেয় সুনীল স্যর (সুনীল গাওস্কর), কপিল পাজি (কপিল দেব), মানি ভাইয়া (মনিন্দর সিংহ), পরের দিকে খুব কমবয়সি সচিন পাজি (সচিন তেন্ডুলকর), শ্রী ভাই (জাভাগল শ্রীনাথ) আর অনিল ভাইয়ের (অনিল কুম্বলে) কথা। আশির দশকের মাঝামাঝি একটা ভারত-পাক ম্যাচের কথা মনে আছে। ভারত আগে ব্যাট করে ১৪০ মতো করেছিল। ইমরান খান আর ওয়াসিম ভাই (ওয়াসিম আক্রম) দুর্দান্ত বল করেছিলেন। ভারত বিখ্যাত একটা জয় কার্যত ছিনিয়ে নিচ্ছিল। মনিন্দর চারটে উইকেট তুলেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানই তিন উইকেটে জিতে যায়। খুব ভেঙে পড়েছিলাম। মনে হয় শারজা এমন একটা মাঠ, আমার মতো ভারতীয় ক্রিকেট-নেশাড়ুকে যা ‘কার্যত’ শব্দটার কঠোর মানে শিখিয়েছে। ভারত ‘কার্যত’ জিতে গিয়েছে এটাই ছিল তখনকার মারণ বাক্য! গত তিন-চার দিন আবু ধাবি ঘুরছি এই সব স্মৃতি আর তরুণ এক ক্রিকেট-সমর্থকের হৃদয় নিয়ে। মাঝে মাঝেই ‘কার্যত’ শব্দটা মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে আর সেটাকে তাড়াতে লেগে পড়ছি। কেকেআরে আমাদের কাজটা ‘কার্যত’ নয়, পুরোটাই করতে হবে।
স্পিনে এগিয়ে নাইটরা মুম্বই পাওয়ার হিটিংয়ে
দুই চ্যাম্পিয়ন। কেকেআর বনাম মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের লড়াইয়ে আজ কে কোথায় এগিয়ে। খুঁজে দেখলেন দীপ দাশগুপ্ত
মালিঙ্গা বনাম নারিন
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের এখন দুই অন্যতম সেরা বোলার। পারফরম্যান্স ছাড়াও টিমের উপর এই দু’জনের প্রভাবও একটা বড় ফ্যাক্টর। ওদের হাঁটা, চলা, জুনিয়ররা লক্ষ্য করে। মালিঙ্গা যে কোনও উইকেটে ভয়ঙ্কর। নারিনের অস্ত্র আবার বৈচিত্র। যদি উইকেট নাও তুলতে পারে, নারিন কিন্তু রান আটকে দেবে।
পাওয়ার হিটিং
কেকেআরের রবিন উথাপ্পা, ইউসুফ পাঠানের থেকে কায়রন পোলার্ড, কোরি অ্যান্ডারসনদের জন্য মুম্বই এগিয়ে। তবে পোলার্ড, কোরি দু’জনেই কতটা ফিট থাকবে তার উপর অনেক কিছু নির্ভর করবে।
স্পিন-শক্তি
আবু ধাবির উইকেটে অতটা স্পিন নাও করতে পারে। তবে স্পিন শক্তির দিক থেকে এগিয়ে থাকবে কেকেআর। নারিন, চাওলা, সাকিবের সঙ্গে ইউসুফকে খেলালে প্রথম সাতে চার স্পিনারের সুবিধা কেকেআরকে এগিয়ে রাখবে। তা উল্টো দিকে যতই হরভজন, প্রজ্ঞান ওঝা থাকুক না কেন।
নেতৃত্ব
হাসি, জাহির, রোহিতের কিন্তু নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতাটা সহজাত। সচিন যে কাজটা করত এতদিন, সেই মেন্টরের দায়িত্ব এখন হাসি সামলাবে। সব সময় তো মাঠের বাইরে থেকে ক্যাপ্টেনের মেসেজ আসার সময় থাকে না। তাই দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে মুম্বই।
এক্স ফ্যাক্টর
কেকেআর ব্যালান্সড দল হলেও মুম্বই কিন্তু সেই পুরনো টিমটাই প্রায় ধরে রেখেছে। অভিজ্ঞতায় এগিয়ে। তাই ১০ বলে ২০ রান তুলতে হবে এমন একটা পরিস্থিতি এলে মুম্বই এগিয়ে থাকবে।
আজ টিভিতে আইপিএলে
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স বনাম কলকাতা নাইট রাইডার্স
(সেট ম্যাক্স, রাত ৮-০০)