তিরিশ বছর আগের সেই ধাক্কার হাত এখন একই মানুষকে উঠে দাঁড়ানোর জন্য বাড়িয়ে দেওয়া! ময়দানের দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মেগা কোচ অমল দত্ত এবং পি কে বন্দ্যোপাধ্যায়। তিন দশকের উলটপুরাণের সাক্ষী চুনী গোস্বামী। শনিবার নেতাজি ইন্ডোরে। ছবি: উত্পল সরকার
খেল সম্মান আর পুরস্কার-অর্থ তুলে দিয়ে আপাতত বাংলার ক্রীড়াবিদদের ক্ষোভ সামলে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে সম্মান নিয়ে মঞ্চ থেকে নেমে কমনওয়েলথের সোনাজয়ী ভারোত্তোলক সুখেন দে বললেন, “পুরস্কারটা পেয়ে ভাল লাগছে। পুরো দুঃখ না ভুললেও, বাংলার উপর রাগ একটু কমেছে।”
আর অ্যাথলিট সুস্মিতা সিংহ রায় হাতে ট্রফি এবং পঞ্চাশ হাজারের চেক নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে বললেন, “বাংলার হয়েই নামব। এখন বাংলা ছাড়ছি না।”
হাওড়ার সুখেন আর মেদিনীপুরের সুস্মিতা বাংলার দুই অভিমানী মুখ। দু’জনেই ক্ষোভে ফুটছিলেন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। তাঁরা পদক পাওয়া সত্ত্বেও সরকার কিছু করেনি বলে। কমনওয়েলথে পরপর দু’বার সোনা জেতার পর সার্ভিসেসের সুবেদার সুখেন কোনও সম্মান না পেয়ে বলেছিলেন, “নিজেকে বাংলার লোক বলতে লজ্জা হয়।” আর রেলকর্মী সুস্মিতা বাংলা ছেড়ে অন্য রাজ্যে চলে যেতে আবেদন করেছিলেন অ্যাথলেটিক্স অ্যাসোসিয়েশনের কাছে।
ক্লাবগুলিকে অনুদান দেওয়া নিয়ে বিতর্ক। পুরস্কার প্রাপক বাছাই নিয়ে বিতর্ক। অন্তত দশজন ক্রীড়াবিদকে কেন ফের পুরস্কার প্রদান? ভাইচুং ভুটিয়া কেন প্রাক্তনদের প্রাপক তালিকায়? কেন ক্রীড়াগুরু এবং বাংলার গৌরব পেলেন একই পুরষ্কার অর্থ এ সব নিয়ে নানা বিতর্কের মধ্যেও অনুষ্ঠান হয়। মাঠে একে অপরের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পিকে-অমল একে অন্যকে উঠে দাঁড়াতে সাহায্য করছেন। একে অন্যকে এগিয়ে যেতে বলছেন ক্রীড়াগুরু পুরস্কার নিতে। নতুন প্রজন্মের কাছে অপরিচিত আশি-নব্বইয়ের কোঠায় পা রাখা ব্যাডমিন্টনের মনোজ গুহ, সাঁতারু গোরাচাঁদ শীল, কবাডির ভোলানাথ গুঁইরা লাঠি হাতে বসে। একই মঞ্চে পাশাপাশি বসে চুনী-পিকে-অমল-জয়দীপ মুখোপাধ্যায়- মনোজ কোঠারি গুরবক্স সিংহ।
অরুণ ঘোষ-প্রদীপ চৌধুরী-মিহির বসু, কৃষ্ণেন্দু রায় থেকে অর্ণব মণ্ডল, দীপক মণ্ডল মহম্মদ রফিক ফুটবলের নানা প্রজন্মের অনেকেই ছিলেন। ক্রিকেটার গোপাল বসু, অশোক দিন্দা, থেকে স্কোয়াশের সৌরভ ঘোষাল, তিরন্দাজির টিরা সামন্ত কে নেই সেখানে। ইন্দু পুরী, রীতা সেন, দোলা-রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়, ছায়া আদক, তুষার শীল, জিশান আলি, বিশ্বজিত্ আদক, আকবর আলি মিরনানা খেলার লোক ছিলেন মঞ্চে।