পাঁচ বোলার খেলিয়ে ক্যাপ্টেন নিজে নামুক ছয়ে

ইংল্যান্ডে পা রাখা এই ভারতীয় দল নিজেদের ভাবমূর্তি পাল্টে ফেলতে বেশ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সাধারণত, বিদেশের মাঠে সিরিজের শুরুতে ভারত বেশ নড়বড়ে থাকে। সেই ধারা ভেঙে বেরিয়ে আসার একটা তাগিদ দেখছি ধোনির টিমে। এ বার পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার উপর জোর দিতে প্রথম টেস্টের দু’সপ্তাহ আগেই ইংল্যান্ডের বিমানে উঠে পড়েছিল ভারত। অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি সিরিজে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করার রীতিমতো প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

Advertisement

রবি শাস্ত্রী

শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৪ ০৩:০৭
Share:

কোচ-অধিনায়ক। মঙ্গলবার প্র্যাকটিসে। ছবি: এএফপি

ইংল্যান্ডে পা রাখা এই ভারতীয় দল নিজেদের ভাবমূর্তি পাল্টে ফেলতে বেশ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সাধারণত, বিদেশের মাঠে সিরিজের শুরুতে ভারত বেশ নড়বড়ে থাকে। সেই ধারা ভেঙে বেরিয়ে আসার একটা তাগিদ দেখছি ধোনির টিমে।

Advertisement

এ বার পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার উপর জোর দিতে প্রথম টেস্টের দু’সপ্তাহ আগেই ইংল্যান্ডের বিমানে উঠে পড়েছিল ভারত। অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি সিরিজে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করার রীতিমতো প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আর আজ ট্রেন্ট ব্রিজের প্রথম টেস্টে তো পাঁচ বোলার খেলানোর কথাও শুনছি! ভারতীয় দলের এই সমস্ত চিন্তাভাবনার মধ্যেই একটা পরিকল্পনার ছাপ রয়েছে।

ধোনিরা জানে, প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ডের অবস্থাটা এই মুহূর্তে বেশ অগোছালো। কোচ নতুন। তার উপর কেভিন পিটারসেন, গ্রেম সোয়ানের মতো অভিজ্ঞ প্লেয়াররা নেই। ওদের ক্যাপ্টেন অ্যালিস্টার কুক গত সাতটা টেস্টের মধ্যে ছ’টাই হেরে বসায় প্রবল চাপে রয়েছে। এই অবস্থায় ভারত যদি প্রথম টেস্টটা জিততে পারে, তা হলে বাদবাকি সিরিজে ইংল্যান্ডকে ওদের ঘরের মাঠেই দারুণ চাপে ফেলে দেওয়া যাবে।

Advertisement

টেস্ট ক্রিকেটে অবশ্য আগ্রাসন ব্যাপারটা নির্ভর করে কার বোলিংয়ে কত গোলা-বারুদ রয়েছে তার উপর। ভারতীয় বোলাররা কিন্তু এ বছর দক্ষিণ আফ্রিকা এবং নিউজিল্যান্ডে দু’টো টেস্টে দুই ইনিংস মিলিয়ে প্রতিপক্ষের কুড়িটা উইকেটই ফেলতে পারেনি। বিশেষ করে দ্বিতীয় ইনিংসে বল করার সময় ভারতীয় আক্রমণের অনভিজ্ঞতা আর সীমাবদ্ধতা বারবার বেরিয়ে এসেছিল। আশা করব, ওই দুই সিরিজ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের বোলাররা এ বার অনেক বেশি পরিণত। সঙ্গে স্টুয়ার্ট বিনির মতো পঞ্চম বোলার থাকছে অধিনায়ক ধোনির হাতে। অবশ্য ধোনি ওকে খেলালে সেটা বেশ একটা বৈপ্লবিক কাণ্ড হবে! কারণ, বিদেশের মাটিতে ভারত সচরাচর পাঁচ বোলারের রাস্তায় হাঁটে না। কিংবা হয়তো এ ভাবে বলা ভাল যে, সাত ব্যাটসম্যানের কম খেলানোর ঝুঁকি নেয় না।

আমার মতে ধোনির এই সিরিজে ছ’নম্বরে আসাটা জরুরি। যেটা ও ইদানীং করছে না। পাশাপাশি নিজের ব্যাটিংয়ের সহজাত আক্রমণাত্বক স্টাইলটা বজায় রাখতে হবে ওকে। তাতে ইমপ্যাক্ট ব্যাটসম্যান হিসাবে ফারাক গড়ে দিতে পারবে। সব চেয়ে বড় কথা, যতগুলো কেন্দ্রে এ বার খেলা হচ্ছে তার মধ্যে ট্রেন্ট ব্রিজেই ভারতের সামনে টেস্ট জেতার সেরা সুযোগটা রয়েছে।

তবে তার জন্য ভুবনেশ্বর কুমার আর মহম্মদ শামিকে বলটা ঠুকে তুলে বাউন্স করাতে হবে। একই মন্ত্র জপতে হবে ইশান্ত শর্মাকেও। যে লেংথে ওর বল করা উচিত, সেই লেংথটা রাখতে পারছে না ইশান্ত। এমন এলোমেলো বোলিং করলে কিন্তু স্লিপ কর্ডনের হাততালি কুড়োনোর আশা না করাই ভাল। তবে ভারতের রিজার্ভ বেঞ্চে আরও তিন জন মিডিয়াম পেসার রয়েছে। যা দেখে মনে হচ্ছে ধোনি একটা বিকল্প পরিকল্পনা হাতে রেখেই লড়াইয়ে নামছে। রবীন্দ্র জাডেজাকে অবশ্য ওর চেনা ভূমিকাতেই দেখা যাবে বলে মনে হয়। জোরে বোলারদের রোটেট করানোর জন্য ওকে ব্যবহার করা হবে। আর আশা করা হবে, আঁটসাঁট বোলিংয়ে নিজের ওভারগুলোয় একেবারে কৃপণের মতো রান দেবে ও।

ভারত আজ পাঁচ বোলার খেলালে, এগারো জনে সম্ভবত রোহিত শর্মার জায়গা হবে না। তবে প্রথম টেস্ট জেতার জন্য যদি সেটা জরুরি হয়, তা হলে কারও আপত্তি থাকা উচিত নয়। সব মিলিয়ে এ বার ভারতীয় দলের হাবভাবে সিরিজটা দাপটে শুরু করার ছটফটানি পরিষ্কার। টিমটার সঙ্গে ব্যাটিং পরামর্শদাতা হিসাবে রাহুল দ্রাবিড়ের মতো একজন আছে। যে বরাবর ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সফল। এখানকার পরিবেশে বলের সঠিক লাইন-লেংথ কী হওয়া উচিত, তা নিয়ে প্রশ্নে প্রশ্নে রাহুলকে একেবারে পাগল করে দেওয়া উচিত ভারতীয় বোলারদের।

এই সিরিজটা ভারতের সামনে শুধু বড় পরীক্ষাই নয়, অস্ট্রেলিয়া এবং পরের বিশ্বকাপের মজবুত ভিত গড়ার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বকাপের আগে আর কিন্তু মাত্র কয়েকটা মাসই রয়েছে গতবারের চ্যাম্পিয়নদের হাতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন