টেস্টের আগে পাঁচ দিন বিশ্রাম পেলে নতুন উদ্যম নিয়ে লড়াই করতে নামার রসদ পাওয়া যায়। গত পাঁচ দিনে ভারতীয় ক্রিকেটাররা নিশ্চয়ই সে রকমই কিছু পেয়েছে। দক্ষিণ লন্ডনের ওভালে বৃহস্পতিবার থেকে যে সম্মান বাঁচানোর লড়াইয়ে নামতে হবে মহেন্দ্র সিংহ ধোনিদের, সে জন্য তো এখন নতুন উদ্যমই প্রয়োজন।
এই সিরিজে যে সব কিছু হারিয়ে গিয়েছে, তা তো নয়। সিরিজ জিততে না পারলেও সিরিজ ড্র রাখতেই পারে ধোনিরা। আমার বিশ্বাস, একটা দপুরেই ছবিটা পুরো উল্টে যেতে পারে। কিন্তু সে জন্য ড্রেসিংরুমে এই বিশ্বাসটা আসা দরকার যে, আমরাও পারি। এটাই তো ধোনি ও তার টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। বিশ্বাসের জোর সাঙ্ঘাতিক। এই বিশ্বাসের জোরেই একজন সাধারণ খেলোয়াড় অসাধারণ হয়ে উঠতে পারে। তাই মাঝে মাঝে টিম মিটিং বা নেট সেশনের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস। ভারতীয় ক্রিকেটারদের যা এখন সবচেয়ে বেশি দরকার।
কিন্তু বড় প্রশ্ন হল, ভারত এই মরণ-বাঁচন লড়াইয়ে কি দল নিয়ে নামবে? পাঁচ বোলারে, না একজন অতিরিক্ত ব্যাটসম্যান নিয়ে আগে যেমন নেমেছিল, তেমনই। ধোনির জায়গায় আমি থাকলে অবশ্য পাঁচ বোলারের ছকেই টিকে থাকতাম। ভারতকে এই ম্যাচে অল আউট যেতেই হবে। কারণ, ২-১ হারাও যা, ৩-১ হারাও তাই। এই টেস্ট জিতলে আগের দু’টি হারের কথা হয়তো ভুলতে পারবে দেশবাসী। তবে ধোনির দলের ক্রিকেটাররা জেনে হয়তো খুশি হবে যে, পাঁচ টেস্টের সিরিজে সাধারণত কোনও এক দল সব সময় আধিপত্য করতে পারে না। এই সিরিজে ফের স্টিয়ারিংয়ের হাত বদল হয় কি না, সেটাই এখন দেখার।
অনেকেরই প্রশ্ন, জাডেজাকে শেষ টেস্টেও খেলানোটা বড় ফাটকা হয়ে যাবে না? আমার মতে, অবশ্যই হবে। কিন্তু ভারতের এই ফাটকাটা খেলা উচিত। অশ্বিনকে তার আগে ব্যাট করতে পাঠানো যেতে পারে। টেস্ট ক্রিকেটে অশ্বিন ব্যাট হাতে যে ফর্ম দেখিয়েছে, তার পর এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতেই পারে। তা ছাড়া জাডেজাকেও বোঝাতে হবে, টেস্টে রান করাটা বেশি কঠিন। ও প্রথমে একজন ব্যাটসম্যান, তার পর বোলার। ঘরোয়া ক্রিকেটে হাজারো রান থাকলেও এই স্তরে এসে কোনও কারণে খাপ খুলতে পারছে না। টেস্টে বড় রান করতে হলে ওকে প্রচুর খাটতে হবে।
আশা করি ইশান্ত শর্মা ফিট হয়ে যাবে। এখানে শোনা যাচ্ছে ইশান্ত খেলতেও পারে। তাই যদি হয়, তা হলে সেটা ভারতের পক্ষে ভাল খবর। ইংল্যান্ডের সবচেয়ে ফর্মে থাকা ব্যাটসম্যান ইয়ান বেলকে ও-ই জব্দ করতে পারে। তবে একজন ফাস্ট বোলার চোট সারিয়ে মাঠে ফিরলে সে ম্যাচ সিচুয়েশনে ঠিকঠাক বল করার অবস্থায় আসতে সময় নেয়। তা ছাড়া এই ম্যাচে স্নায়ুর চাপ নিতে হবে প্রচুর। আশা করি, নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে ইশান্ত নিজেকে ওভালে ফিরিয়ে আনতে পারবে।