বিমান বিভ্রাটেও হাসিমুখ। শহরে পা রেখে ফাইনালের নায়ক। ছবি: সুমন বল্লভ
জন্ম নৈনিতালে। ক্রিকেট-পাঠ বেঙ্গালুরুতে। রাহুল শরদ দ্রাবিড়ের শহরের বছর চব্বিশের তরুণকে অবশ্য বেশ কয়েক দিন ধরেই ভীষণ ভাবে নিজের করে নিয়েছে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্মভূমি। রবিবার রাতে আইপিএল ট্রফি জেতানো ওই ইনিংসটার পর তো আরও বেশি করে!
সোমবার ভোর চারটে পর্যন্ত পার্টি করেছেন। কলকাতায় ফেরার ফ্লাইটের জন্য অপেক্ষারত মণীশ এ দিন সন্ধেয় বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে বলছিলেন, গত রাতের ইনিংস মোটেও তাঁর জীবনের সেরা নয়। বলছিলেন, “ওটা জীবনের সেরা, আমি বলব না। রঞ্জিতেও বেশ কিছু মনে রাখার মতো ইনিংস আমি খেলেছি। তবে হ্যাঁ, আইপিএলে এটাই আমার সেরা ইনিংস। আইপিএলে এর আগে সেঞ্চুরি করেছি আরসিবির হয়ে। কিন্তু ফাইনালে রান করা, টিমকে জেতানোর অনুভূতিটা আলাদা হয়। তা ছাড়া, ফাইনালে আমরা দুশো তাড়া করেছিলাম। ওটার একটা আলাদা চাপও ছিল।”
আইপিএল ফাইনালে সেঞ্চুরিটা পেয়ে গেলে কি এটা কেরিয়ারের সেরা ইনিংস হত? আক্ষেপ হচ্ছে না? এ রকম একটা মঞ্চে একটুর জন্য সেঞ্চুরি ফস্কে গেল? “না, না। কোনও আক্ষেপ নেই। ঋদ্ধিমান যে ভাবে ব্যাট করে গেল, তার পর আমাদেরও কাউকে পাল্টা চার্জটা দিতে হত। ভেবে ভাল লাগছে যে, সেটা আমি পেরেছি। সবচেয়ে বড় কথা, টিম জিতেছে। সেখানে আমি সেঞ্চুরি পেলাম কি না, ব্যক্তিগত রেকর্ড হল কি না, কোনও কিছু গুরুত্বপূর্ণ নয়।” বলতে বলতে দাঁড়িয়ে পড়তে হয় ছবি, অটোগ্রাফের আবদার মেটাতে। পুলিশ ভিড় সামলাবে কী, তারাও তো নাইট নায়ককে দাঁড় করিয়ে তাঁর সঙ্গে ছবি তুলতে ব্যস্ত। আইটি শহরের বাঙালি বাসিন্দারা এসে জড়িয়ে ধরে বলছেন, কলকাতার না হয়েও কলকাতার সম্মানটা তুমিই রাখলে!
এত কিছুর মধ্যেও ফিরে যাওয়া কয়েক ঘণ্টা আগেকার ম্যাচ জেতানো ইনিংসে। বলে ফেলা, “রানটা অত সহজে চেজ হল কী করে জানেন? আসলে খুব ভাল বলটা দেখছিলাম। প্রথম ওভারে দশ রান তোলার পর মনে হল বাকি ওভারেও এটা চালালে রানটা উঠে যাবে। দুশো রান তুলতে হবে, সেটা না দেখে শুধু দশ দেখেছি। দেখেছি, প্রতিটা ওভারে আমাকে দশ তুলতে হবে।” আর কখন মনে হল ম্যাচটা জিততে পারেন? “যখন প্রথম বলটা ব্যাটে লাগল। আসলে যে ভাবে ঋদ্ধিমান খেলে গেল, মনে হচ্ছিল এই মাঠে দুশো চেজ করা খুব কঠিন হবে না। তা ছাড়া চিন্নাস্বামী আমার চেনা মাঠ। হোম গ্রাউন্ড। চল্লিশ হাজার লোক সব সময় চিয়ার করছে। এ বছর আমরা এখানে ইরানি ট্রফি জিতেছি। মনে হচ্ছিল আইপিএল ফাইনালটাও পারব।”