অপ্রতিরোধ্য সুনীল। বৃহস্পতিবার গুয়াহাটিতে। ছবি: উজ্জ্বল দেব।
ভারত-২ (সুনীল ছেত্রী-২)
নেপাল-০
মেঠো যন্ত্রণা সেরে যায় মাঠে গোল করার পরেই! যত গোল করবে তত দুঃখ কমবে! ভারতীয় ফুটবলের মক্কা কলকাতা ছেড়ে বেঙ্গালুরুর ক্লাবে যাওয়া সতীর্থ রবিন সিংহকে এ কথা বলেই মোটিভেট করতেন সুনীল ছেত্রী।
বৃহস্পতিবার প্রাক-বিশ্বকাপ ম্যাচে গুয়াহাটির সরুসজাই স্টেডিয়ামে নেপালের বিরুদ্ধে সেই সুনীলই জোড়া গোল করে জাতীয় দলের দুঃখ দূর করলেন। পনেরো মাস পর ভারত জিতল ফুটবলে।
চব্বিশ ঘণ্টা আগেই জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব হারিয়েছেন। নতুন অধিনায়ক সুব্রত পালের দলের হয়ে কথা বলল অবশ্য সুনীলের দুরন্ত ফর্মই। আন্তর্জাতিক ম্যাচে হ্যাটট্রিকও করে ফেলতে পারতেন ভারতীয় ফুটবল ইতিহাসের এই হায়েস্ট স্কোরার। পারলেন না পেনাল্টি মিস করায়।
দ্বিতীয়বার কোচের দায়িত্ব নিয়েই স্টিভন কনস্ট্যান্টাইন দাবি করেছিলেন ভারতকে নিয়ে নতুন কিছু করার। সেই পরিকল্পনার প্রথম ধাপ হিসেবে সুনীলের হাত থেকে অধিনায়কের ব্যান্ড গিয়েছে বঙ্গসন্তান গোলকিপারের বাহুতে। ভারতে ব্রিটিশ কোচের দ্বিতীয় ইনিংসের প্রথম ম্যাচে দেখা গেল মাঠে আরও কিছু চমক। নমুনা, প্রথম একাদশে চার জন অভিষেককারী, যার তিন জনই আবার রক্ষণে। মিনিট কুড়ি বিপক্ষকে মেপে নেওয়ার পর সুনীল-রবিন-লেনির ত্রিভুজ আক্রমণ নেপাল রক্ষণে আছড়ে পড়া। এ ছাড়াও বলের দখল আগাগোড়া রাখার পাশাপাশি বিপক্ষ রক্ষণ থেকে বেরিয়ে আসা ‘সেকেন্ড বল’ চমত্কার কাজে লাগালেন জাকিচাঁদরা। সঙ্গে প্রীতম-ডিকাদের দুরন্ত কাউন্টার অ্যাটাক।
এই সব প্রচেষ্টারই নিটফল, দ্বিতীয়ার্ধের গোড়ার দিকে বাঁ পায়ের জোরাল ভলিতে প্রথম এবং উনিশ মিনিট পর বক্সের বাইরে থেকে ডান পায়ের দুরন্ত শটে সুনীলের জোড়া গোল। ফুটবলারদের নিয়ে না হোক, ফেডারেশন কর্তাদের নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন থাকছে।
বিশ্বকাপে ধোনিদের নিয়ে দিনভর টিভি কভারেজের পাশে প্রাক বিশ্বকাপে সুনীলদের এমন চমত্কার পারফরম্যান্সের কোনও সর্বভারতীয় সম্প্রচার নেই। এআইএফএফের নিশ্চেষ্ট মনোভাবে। ভারতীয় ফুটবলের প্রসারে যা মোটেই ভাল বিজ্ঞাপন নয়।
ভারত: সুব্রত, প্রীতম, অর্ণব, সন্দেশ, সৌমিক, ফ্রান্সিস, লিংডো, লেনি (লোবো), লালরিন্দিকা (জাকিচাঁদ), রবিন (হোলিচরণ), সুনীল।