পারথে ভক্তের সঙ্গে সেলফি তুলছেন ধোনি ও কোহলি।
বোলিংয়ে পরের পর চমক।
রকেট ফিল্ডিং।
টিমের টগবগে মনোভাব।
চলতি বিশ্বকাপে ভারতের দুর্ধর্ষ পারফরম্যান্সের পিছনে এই তিনটে কারণই খুঁজে পাচ্ছেন টিম ডিরেক্টর রবি শাস্ত্রী। যিনি পরিষ্কার বলে রাখছেন, এই ভারত কাউকে ভয় পায় না।
প্রথমে পাকিস্তান। তার পর দক্ষিণ আফ্রিকা। দুই হেভিওয়েট প্রতিদ্বন্দ্বীকে গ্রুপের যুদ্ধে পরপর উড়িয়ে দেওয়ার পর শনিবার যাদের বিরুদ্ধে মহেন্দ্র সিংহ ধোনিরা নামবেন, তারা শক্তি বিচারে ক্রিকেটবিশ্বের ‘বামন’। সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। টিম ইন্ডিয়ার সংসারে যে যুদ্ধের আগে এক দিকে যেমন সিরিয়াস প্র্যাকটিস থাকছে, তেমনই থাকছে ফুরফুরে আবহাওয়া। বৃহস্পতিবার দিনটা যেমন ক্রিকেটারদের ছুটি দেওয়া হল। ধোনিকে দেখা গেল বিরাট কোহলি ও শিখর ধবনের সঙ্গে হে স্ট্রিটে শপিং করতে যেতে। এক ফাঁকে আবার ডিভিডি শপেও ঢুঁ মারলেন ধোনি-কোহলি। শোনা গেল, প্লেয়াররা অনেকেই আজ প্লে স্টেশন খেলে কাটিয়ে দিয়েছেন। এরই মধ্যে আবার ভারতীয় টিমের তরফে সরকারি ভাবে জানানো হল, শ্বশুর মারা যাওয়ায় কেপটাউন রওনা হয়ে গিয়েছেন কোচ ডানকান ফ্লেচার। শেষকৃত্যে যোগ দিতে। আরব আমিরশাহি ম্যাচে তিনি থাকবেন না। আসতে পারেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের আগে। খবর বলতে একটাই দুই জাতীয় নির্বাচক রাজিন্দর সিংহ হংস এবং সাবা করিমকে দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
এটা যদি টিমের বহিরঙ্গে ঘটে চলা ঘটনার নমুনা হয়, তা হলে অন্দরমহলে কী চলছে না চলছে, আভাস দিয়ে রাখলেন শাস্ত্রী। এক ক্রিকেট ওয়েবসাইটে দেওয়া সাক্ষাৎকারে। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল টিমের বোলিং তাঁকে চমকে দিয়েছে কি না? উত্তরে শাস্ত্রী বলেন, “এমনই চমক যেটা খুব তৃপ্তি দিচ্ছে। এই বোলিং ইউনিটকে হালকা ভাবে নেওয়ার আগে এখন থেকে যেন দু’বার ভাবে টিমগুলো। নইলে কিন্তু নিজেদের বিপদ নিজেরাই ডেকে আনবে। খারাপ লাগে এটা দেখে যে, একই বোলিং অন্য কোনও দেশ করলে ধন্য ধন্য পড়ে যায়। আর ভারত করলে কেউ কিছু বলে না। তো এ বার বাকিদের কিছুটা ফিরিয়ে দেওয়া গিয়েছে।” পাশাপাশি ফিল্ডিংকেও সাফল্যের অন্যতম কারণ হিসেবে জুড়ে দিচ্ছেন শাস্ত্রী। বলছেন, “শার্প ফিল্ডিং বলতে যা বোঝায় তাই হচ্ছে। প্রত্যেকে তো রকেটের মতো নড়াচড়া করছে। একটা টিমে যদি ছ’সাত জন ভাল ফিল্ডার থাকে তা হলে বাকিরা, যারা কি না নিজেদের ভাল ফিল্ডার বলে মনে করে না, তারাও মরিয়া চেষ্টা করতে থাকে। এটা আসলে একটা ছোঁয়াচে রোগের মতো।”
অথচ বিশ্বকাপের আগে অস্ট্রেলিয়া সফর মোটেও ভাল যায়নি ভারতের। টেস্ট সিরিজ জেতা যায়নি। ওয়ান ডে সিরিজ থেকেও ছিটকে যেতে হয়েছে। কিন্তু বিশ্বকাপে পা দিতে না দিতেই যেন অন্য ভারত! “কিছুই পাল্টায়নি কিন্তু। আমার মনে হয় ওদের তখন একটা ছুটি দরকার ছিল। আর ত্রিদেশীয় সিরিজের পর পাওয়া দশ দিনের ছুটিটা টিমের কাছে আশীর্বাদ হিসেবে এল। তার আগে গত এক মাস ধরে যে ভাবে খেলতে হচ্ছিল ভারতকে, সেটা খুবই ক্লান্তিকর,” বলে দিয়েছেন শাস্ত্রী। আর বিশ্বকাপে টিমের প্রত্যাবর্তন নিয়ে তাঁর সংযোজন, “আমরা কাউকে নিয়ে ভাবি না আসলে। যেমন এখন আমি বলি, বিপক্ষ নিয়ে ভাবার দরকারই নেই। আমরা বরং দেখি কী ভাবে নিজেদের স্কিলকে সবচেয়ে ভাল ব্যবহার করা যাবে। আর সেটা যখন করা হয়, একটা ইউনিট হিসেবে করি। স্রেফ ব্যক্তিগত দক্ষতার ঝলক দিয়ে নয়। দক্ষিণ আফ্রিকা বা পাকিস্তান ম্যাচে ঠিক সেগুলোই আপনারা দেখেছেন।”
টস হারলে ধোনিরা কী করেন দেখতে চান সৌরভ
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা
পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ভারতের অসাধারণ পারফরম্যান্স সত্ত্বেও এখনই মহেন্দ্র সিংহ ধোনিদের ফাইনালে দেখছেন না সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। সৌরভের সতর্কবার্তা, “ভারত দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলছে, এটা মানতেই হবে। কিন্তু পাশাপাশি এটাও ঠিক যে, ওরা প্রথম দুটো ম্যাচেই টস জিতেছে। টস হারার পর ধোনিরা কেমন খেলে, সেটা কিন্তু দেখার বাকি।” ক্রীড়াসাংবাদিক অলোক দাশগুপ্তর লেখা ‘নবাব থেকে মহারাজ’ বইটির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক ক্রিকেট আড্ডায় ভারতের বিশ্বকাপ ফাইনালে ওঠার বাস্তব সম্ভাবনা নিয়ে সৌরভ বলেন, “এখন কিছু বলব না। যে আটটা দল কোয়ার্টার ফাইনালে উঠবে, তারা প্রত্যেকেই একে অপরকে যে কোনও ম্যাচে হারানোর ক্ষমতা রাখে। নক আউটে যে কোনও ম্যাচে অঘটন ঘটতেই পারে। তবে হ্যাঁ, মন বলছে ভারত-অস্ট্রেলিয়া।” আড্ডায় হাজির দুই প্রাক্তন ক্রিকেটার ও জাতীয় নির্বাচক প্রণব রায় ও রাজা বেঙ্কটও ফাইনালে ভারত ও অস্ট্রেলিয়াকেই দেখছেন।