সঞ্জয় সেনের তিন অস্ত্র। বেলো রজ্জাক, কাতসুমি ও সনি নর্ডি।
শিল্টন পালের গলায় উত্তাপের আঁচ, “আই লিগের জেতার অভ্যাস ধরে রাখাটাই আসল। কালও তিন পয়েন্ট ছাড়া অন্য কিছু ভাবছি না।”
প্রীতম কোটাল রীতিমতো তেতে আছেন, “ফেড কাপ ম্যাচ আর আই লিগ ম্যাচ একেবারে আলাদা। তাই এ বার রেজাল্টটাও পাল্টে দেব আমরা।”
বেলো রজ্জাক ফুটছেন বদলার আগুনে। গোয়া থেকে ফোনে বলে দিলেন, “ফেড কাপে ওদের কাছে চার গোল খাওয়ার ঘটনাটাই আমাদের তাতাচ্ছে। বারবার কিন্তু এ রকম রেজাল্ট হয় না।”
বুধবার আই লিগে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে নামার আগে মোহনবাগান ফুটবলারদের এই বদলার মনোভাবকেই আরও উস্কে দিয়েছেন কোচ সঞ্জয় সেন। সনি, কাতসুমিদের তিনি বলেছেন, “বারবার একই টিমের কাছে যদি হারতে হয় বা আটকে যেতে হয় তবে সেটা মোহনবাগানের মতো ঐতিহ্যশালী টিমের কাছে বিরাট লজ্জার। মাঠে নেমে তোমাদেরই আসল লড়াইটা লড়তে হবে। ওয়াহিংডো যদি গোয়ায় এসে সালগাওকরকে হারিয়ে যায়, তবে আমরাই বা পারব না কেন?”
ফুটবলারদের শুধু ভোকাল-টনিকই দেননি বাগান কোচ। ডেরেক পেরেরার টিমকে আটকানোর রাস্তাও নাকি দেখিয়ে দিয়েছেন সঞ্জয়। আই লিগে সালগাওকরের দু’টো ম্যাচই মনোযোগ দিয়ে দেখেছেন চেতলার বাসিন্দা। যা থেকে সালগাওকরের সমস্যাগুলো তিনি খুঁজে বার করেছেন, দাবি বাগান কোচের। সঞ্জয়ের মতে, সালগাওকর রক্ষণ বেশ দুর্বল। সেটার সুযোগ কাজে লাগাতে হবে মোহনবাগানকে। তার উপর ড্যারেল ডাফিকে চোটের জন্য এই ম্যাচে পাচ্ছে না গোয়ার ক্লাব। স্বভাবতই গোল করার অন্যতম অস্ত্রকে না পাওয়াটা সমস্যা ডেরেকের। সালগাওকর কোচের অন্যতম নির্ভরযোগ্য ভারতীয় স্ট্রাইকার ডসন ফার্নান্ডেজও ফেড কাপে চোট পেয়ে গোটা মরসুমের জন্য ছিটকে গিয়েছেন।
প্রতিপক্ষের এই সব প্রতিকূলতাকে নিজেদের অস্ত্র হিসেবে তাঁর ফুটবলারদের ব্যবহার করতে বলেছেন সঞ্জয়। “গোয়ার মাঠে খেলা। সালগাওকরের মতো টিমকে হাল্কা ভাবে নিলে চলবে না। তবে আমরা ওদের দুর্বলতাগুলোকে যদি কাজে লাগাতে পারি, সে ক্ষেত্রে আশা করি সাফল্য পাব,” গোয়ায় ডেম্পো-স্পোর্টিং ক্লুব ম্যাচ দেখতে দেখতে ফোনে বলছিলেন সঞ্জয়।
ফেড কাপে ১-৪ হারের ম্যাচে যাঁর জোড়া গোলের পাশাপাশি আক্রমণাত্মক মানসিকতা কম্পন ধরিয়ে দিয়েছিল মোহন রক্ষণে, সেই ডুহু পেরেরাকে আটকানোর জন্য কী আলাদা কোনও স্ট্র্যাটেজি থাকছে বুধবার? বাগান টিম সূত্রে যা জানা গেল আইভরি কোস্টের ওই মিডিওকে আটকানোর জন্য তাঁর ঘাড়ে তুলে রাখার প্ল্যান করেছেন মোহন কোচ। নিজের রক্ষণকে বারবার সতর্ক করলেও, অ্যাওয়ে ম্যাচে রক্ষণাত্মক স্ট্র্যাটেজি নিচ্ছেন না মোহন কোচ। বরং ফুটবলারদের আক্রমণের পথে হাঁটারই নাকি নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। পিয়ের বোয়া না থাকায় সনি নর্ডি এবং বলবন্তকে সামনে রেখে প্রথম দল নাকি সাজাচ্ছেন সঞ্জয়। মোটামুটি মুম্বই এফসি ম্যাচের জয়ী টিমই ধরে রাখার পরিকল্পনা রয়েছে বাগান কোচের।
আই লিগের শুরুতেই এ বার বড় ধাক্কা খেয়েছে সালগাওকর। দু’টি ম্যাচের মধ্যে একটি ড্র। অন্যটা হেরেছে। ফেড কাপ সেমিফাইনালে হেরে যাওয়ার পর থেকে হঠাত্-ই যেন পারফরম্যান্স-গ্রাফ নামতে শুরু করেছে ডেরিক পেরিরার টিমের। কারণ হিসেবে গোয়ান কোচ বলছেন, “ডাফির না থাকাটা আমাদের বড় ক্ষতি। চোটের জন্য এই মরসুমে ডসনকে আর পাব না। এই দু’টো চোটই আমার কাছে বড় ধাক্কা।”
প্রতিপক্ষ এক। জায়গাও সেই গোয়া। তবে টুর্নামেন্ট এবং মাঠ আলাদা। এখন দেখার, ভাস্কোর মাঠে হারের বদলা মারগাওতে নেমে গঙ্গাপাড়ের ক্লাব আজ নিতে পারে কি না!
বুধবার আই লিগে
মোহনবাগান: সালগাওকর (মারগাও ৪-৩০)