ভাগ্য পরিবর্তনের কৃতিত্ব সদ্যোজাতকেও দিয়ে গেলেন গম্ভীর

গৌতম গম্ভীর হাসছেন! আইপিএল সেভেনে যে দৃশ্যটাকে বিরল বললেও কম বলা হবে, রবিবার সেই দৃশ্যটা দেখে ফেলল বরাবাটি স্টেডিয়াম। ম্যাচের নিয়তি অবশ্য সেই হাসির প্রেক্ষাপট তৈরি করে ফেলেছিল শেষ বল পড়ার অনেকক্ষণ আগে। তাই গৌতম গম্ভীর হাসছেন। জিতে উঠে জাতীয় দলে তাঁর বহু দিনের ওপেনিং সঙ্গী বীরেন্দ্র সহবাগকে জড়িয়ে ধরছেন। আর দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের পর কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের বিরুদ্ধেও টিমকে দুধর্ষ জয় এনে দেওয়ার পর গৌতম গম্ভীরের মনে হচ্ছে, বিগত এক সপ্তাহ ধরে তাঁর ভাগ্যে যে পরিবর্তন, সেটা হয়েছে তাঁর নবাগত কন্যাসন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর।

Advertisement

প্রিয়দর্শিনী রক্ষিত

কটক শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৪ ০৩:২০
Share:

গৌতম গম্ভীর হাসছেন!

Advertisement

আইপিএল সেভেনে যে দৃশ্যটাকে বিরল বললেও কম বলা হবে, রবিবার সেই দৃশ্যটা দেখে ফেলল বরাবাটি স্টেডিয়াম। ম্যাচের নিয়তি অবশ্য সেই হাসির প্রেক্ষাপট তৈরি করে ফেলেছিল শেষ বল পড়ার অনেকক্ষণ আগে।

তাই গৌতম গম্ভীর হাসছেন। জিতে উঠে জাতীয় দলে তাঁর বহু দিনের ওপেনিং সঙ্গী বীরেন্দ্র সহবাগকে জড়িয়ে ধরছেন। আর দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের পর কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের বিরুদ্ধেও টিমকে দুধর্ষ জয় এনে দেওয়ার পর গৌতম গম্ভীরের মনে হচ্ছে, বিগত এক সপ্তাহ ধরে তাঁর ভাগ্যে যে পরিবর্তন, সেটা হয়েছে তাঁর নবাগত কন্যাসন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর।

Advertisement

রবিবার সন্ধেয় ম্যাচ শেষ হওয়ার পর প্রসঙ্গটা উত্থাপন করেছিলেন পঞ্জাব মালকিন প্রীতি জিন্টা। প্রথমে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার নাইট অধিনায়কের হাতে তুলে দেওয়ার সময় একপ্রস্থ ঠাট্টা-ইয়ার্কি চালালেন। তার পর পুরস্কার-বিতরণী মঞ্চে উপস্থিত কাউকে কাউকে বলেও দিলেন, গম্ভীরের ভাগ্য-পরিবর্তনটা হয়েছে তাঁর সংসারে কন্যাসন্তানের আগমনের পর। যা জিজ্ঞেস করায় নির্দ্বিধায় মেনে নিলেন কেকেআর ক্যাপ্টেন। বলে দিলেন, “নিঃসন্দেহে, যা হচ্ছে অনেকটাই ওর জন্য। আমার কাছে ব্যাপারটা আশীর্বাদের মতো। ও আসার পর জীবন অনেক পাল্টে গিয়েছে আমার। আজ যে ভাবে আমি খেললাম, বা গত কয়েকটা ম্যাচে যে ভাবে খেলছি, তার অধিকাংশ কৃতিত্ব দিতে চাই আমার মেয়েকে।”

নাইট অধিনায়ককে আরও জিজ্ঞেস করা হয়, এমন চিত্রনাট্যই তাঁর পছন্দ ছিল কি না? যেখানে বীরেন্দ্র সহবাগ রান করবেন। তিনি নিজেও করবেন। এবং শেষ পর্যন্ত কেকেআর ম্যাচটা জিতবে। উত্তরটা দিতে গিয়ে হেসে ফেললেন গম্ভীর। বলে ফেললেন, “আরে কোথায় বীরু, কোথায় আমি। বীরুর পাশে আমি কোনও ক্রিকেটারই নই। ও দেশের হয়ে যা যা করেছে, তার কোনও তুলনা চলে?” আর তাঁর এই হাসি? যা এত দিন ঈদের চাঁদ-সম ছিল, যা এখন পূর্ণিমা-রাতের মতো ঝলমল করছে? “আমার ক্ষেত্রে এটা হয়। যখন জিততে থাকি, তখন আমার মুড এ রকম হয়ে যায়। আসলে আপনি যদি টিমের জয়ের ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারেন তা হলে আপনার মন মেজাজ তো পাল্টে যাবেই,” বলে দিচ্ছেন গম্ভীর।

রেকর্ডের দিনে শাহরুখ... সবিস্তার দেখতে ক্লিক করুন।

মন-মেজাজ পাল্টানোর অন্য এক জোড়া কারণও আছে। এক, নাইট অধিনায়কের ব্যক্তিগত ফর্ম। প্রথম চারটে ম্যাচে যাঁর মিলিত স্কোর ছিল মাত্র ১, আইপিএলের দ্বিতীয়-পর্বে হাফসেঞ্চুরির হ্যাটট্রিক করে উঠে সেই ক্রিকেটারের মুড ভাল তো হবেই। রাজস্থান আর দিল্লির পর এ দিন পঞ্জাব বোলিংয়ের সামনেও তো স্বচ্ছন্দ দেখাল গম্ভীরকে। আর দু’নম্বর কারণ, কিংসকে হারিয়ে রবিবার ফের আইপিএল টেবলে চার নম্বরে উঠে এল কেকেআর। তাঁর এত ফুরফুরে থাকার আরও একটা কারণ ব্যাখ্যা করলেন গম্ভীর নিজেই। সেটা হল তাঁর সতীর্থদের ফর্ম। যেমন রবিন উথাপ্পা। যেমন মর্নি মর্কেল। যেমন পীযূষ চাওলা। “ওপেন করতে নেমে আমার উপর যে চাপটা থাকে, রবিন তার অনেকটাই নিজের কাঁধে নিয়ে নিচ্ছে। তার পর এ রকম উইকেটে বল করে চার ওভারে মাত্র কুড়ি রান দিল মর্নি মর্কেল। সঙ্গে দুটো উইকেট। আর চাওলা? ওকে আমাদের আবিষ্কার বলতে পারেন। আশা করব ওরা সবাই এই ছন্দটা ধরে রাখতে পারবে। আশা করব, টুর্নামেন্টের শেষ পর্যন্ত সবার এই ফর্ম থাকবে।”

তাঁর টিমও তো গম্ভীরের আনন্দের উল্লসিত ভাগীদার। ম্যাচ শেষে রবিন উথাপ্পা যেমন বলে গেলেন, “প্রথম কয়েকটা ম্যাচ ওর জন্য যে রকম গিয়েছিল, তার পর গম্ভীরের সত্যিই এ রকম কিছু স্কোর প্রাপ্য। আসলে ক্যাপ্টেন ভাল খেললে পুরো টিমের উপর তার একটা পজিটিভ প্রভাব পড়ে।” কেকেআরের আরও কয়েকটা ইতিবাচক দিকের সন্ধান দিয়ে গেলেন উথাপ্পা। তাঁর নিজের পছন্দের ওপেনিং স্লট প্রাপ্তি এবং সেখানে সাফল্য। পীযূষ চাওলার বোলিং। মর্নি মর্কেলের সামনে ব্যাটসম্যানদের জবুথবু হয়ে যাওয়া। টিমের ফ্লেক্সিবিলিটি। দুর্দান্ত ফিল্ডিং। ব্যাটিং-বোলিংয়ের সঠিক কম্বিনেশন একদম সঠিক সময়ে খুঁজে পাওয়া।

উথাপ্পা যেটা বললেন না, অথচ যেটা কেকেআরের কাছে সবচেয়ে ইতিবাচক প্রাপ্তি, সেটা কিন্তু ক্রিকেট মাঠের বাইরের একটা বস্তু। যা কেকেআর সমর্থকদের বরাবরের কাঙ্খিত দৃশ্য।

গৌতম গম্ভীর হাসছেন!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন