ভারতীয় কোচেরাও যে পারে বুঝিয়ে দিক শাস্ত্রী-বাঙ্গাররা

ইংল্যান্ডে টেস্ট সিরিজে ভারতের ভরাডুবির পর অবশেষে একটা কড়া পদক্ষেপ নিল বোর্ড। রবি শাস্ত্রীকে দলের ডিরেক্টর হিসেবে আনা, সঞ্জয় বাঙ্গারকে সহকারী কোচ ও নতুন বোলিং, ফিল্ডিং কোচ নিয়োগ অবশ্যই একটা ইতিবাচক সিদ্ধান্ত। ভারতীয়রা যে ভাল কোচ হয়ে উঠতে পারে, তার একাধিক উদাহরণ আছে। লালচাঁদ রাজপুত ও চাঁদু বোরডেরা ভারতকে যখন টি টোয়েন্টি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করেছেন, ইংল্যান্ডে সিরিজ জিতিয়েছেন, তখন অন্যরাই বা পারবেন না কেন?

Advertisement

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৪ ০৩:০৮
Share:

ইংল্যান্ডে টেস্ট সিরিজে ভারতের ভরাডুবির পর অবশেষে একটা কড়া পদক্ষেপ নিল বোর্ড। রবি শাস্ত্রীকে দলের ডিরেক্টর হিসেবে আনা, সঞ্জয় বাঙ্গারকে সহকারী কোচ ও নতুন বোলিং, ফিল্ডিং কোচ নিয়োগ অবশ্যই একটা ইতিবাচক সিদ্ধান্ত।

Advertisement

ভারতীয়রা যে ভাল কোচ হয়ে উঠতে পারে, তার একাধিক উদাহরণ আছে। লালচাঁদ রাজপুত ও চাঁদু বোরডেরা ভারতকে যখন টি টোয়েন্টি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করেছেন, ইংল্যান্ডে সিরিজ জিতিয়েছেন, তখন অন্যরাই বা পারবেন না কেন? এ দেশে এখন যে ভাল ভাল কোচ রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে নিজেদের প্রমাণ করার সুযোগ দিল বোর্ড, এ তো ভাল খবর। এটাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সঠিক সময়। ভরত অরুণ, আর শ্রীধর ভারত ‘এ’ দলে খুব ভাল কাজ করেছে। তাই এই সুযোগ ওদের প্রাপ্য ছিল। বাঙ্গার তো আইপিএল সেভেনে কিংস ইলেভেন পঞ্জাবকে ফাইনালে তুলেছিল। সে জন্যই ওকে এই দায়িত্ব দেওয়া হল। ভারতীয় ড্রেসিংরুমে ওর ঠান্ডা স্বভাবের একটা ভাল প্রভাব পড়বে বলেই মনে হয়।

লর্ডসে টেস্ট জয়ের পর যে ভাবে ভারতীয় দলের পারফরম্যান্সের মান ক্রমশ নেমে গেল, তা সত্যিই অবাক করার মতো। লড়াই করে হার তবু মানা যায়। কিন্তু এ ভাবে আত্মসমর্পণ! অসহ্য। কোহলি, পূজারা, রাহানেদের অনেকেই দোষ দিচ্ছেন। ওরা যে প্রতিভাবান, এ নিয়ে সন্দেহ নেই। কিন্তু আত্মবিশ্বাসে ঘাটতিই ওদের ব্যর্থতার আসল কারণ। সিরিজ যত এগিয়েছে, নিজেদের প্রতি বিশ্বাসের এই ঘাটতি তত বেড়েছে। কমতে কমতে আত্মবিশ্বাস যখন তলানিতে এসে ঠেকে যায়, তখন বিশ্বসেরা ব্যাটসম্যানদেরও অতি সাধারণ মনে হয়। এখানেও তা-ই হল।

Advertisement

ওদের সমালোচনার আগে একটু ভেবে নেওয়া উচিত যে, ওদের বয়স কম। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটজীবন সবে শুরু করছে ওরা। ইংল্যান্ডের অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই ওদের অনেক কিছু শেখাল। নিজেদের আরও উন্নত মানের ক্রিকেটার তৈরি করে তোলার জন্য ওদের এই অভিজ্ঞতার প্রয়োজন। ভবিষ্যতে ওদের আরও পাঁচ টেস্টের সিরিজ খেলতে হবে। দীর্ঘ সিরিজে নিজেদের তাজা রাখার উপায় ওদের এই অভিজ্ঞতা থেকেই শিখতে হবে।

ম্যাচের সময় নিজেদের খেলা নিয়ে ভাবা আর ম্যাচ শেষ হয়ে গেলে সেই ভাবনা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার পদ্ধতিটা শিখতে হবে ওদের। মানসিক ভাবে নিজেকে চাঙ্গা রাখার এটাই সেরা উপায়। ভারতীয় ক্রিকেটের আসল শক্তি বরাবরই ব্যাটসম্যানরা, বোলাররা নয়। তাই বিপক্ষকে চাপে রাখার ও দলকে সাফল্য এনে দেওয়ার প্রধান দায়িত্ব ব্যাটসম্যানদেরই। আসন্ন অস্ট্রেলিয়া সফরে এই বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে ওদের।

সব শেষে আসি ক্যাপ্টেনের কথায়। নিজেকে নিয়ে নতুন করে ভাবার সময় এসে গিয়েছে ধোনির। এই সিরিজে ওর ব্যাটিং ফর্মে অনেক উন্নতি ঘটলেও বিদেশে ওর নেতৃত্বে কোনও উন্নতি ঘটেনি। যদিও অনেকে বলতে চাইছেন, ধোনিকে সরিয়ে দিলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। আমার কিন্তু তা মনে হয় না। ক্যাপ্টেন ধোনির কৌশলে আরও ধার আসা উচিত। এখন এটাই করতে হবে ওকে। গত চার বছরে প্রচুর হার দেখতে হয়েছে ওকে। যে কোনও ক্যাপ্টেনেরই এতে ক্ষতি হতেই পারে। কিন্তু নিজেকে বদলে আরও উন্নতি করার ক্ষমতা ধোনির মধ্যে আছে বলেই আমার বিশ্বাস। যে কোনও ব্যাপারে অনেক আগে থেকে তৎপর হতে হবে ওকে। যখন কোনও কৌশল খাটছে না, তখন তাতে আটকে না থেকে তাকে পুরো বদলে ফেলা দরকার। যেমন এই সিরিজের প্রথম দিকে পাঁচ বোলার নিয়ে নেমে ও ঠিকই করেছিল। কিন্তু যখন দেখল ব্যাটিংটা পুরো ফ্লপ করছে, তখন ব্যাটিং অর্ডার বদলে ফেলা উচিত ছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন