ভারতীয় ফুটবলকে সাবালক করতে পারে আইএসএল: জিকো

র‌্যাডিসন হোটেলের লবিতেই তাঁকে ধরা গেল। সাক্ষাত্‌কারের প্রস্তাবে দুটি হাত জোড় করে ভাঙা বাংলায় বলে উঠলেন ‘নমস্কার’। জানালেন, হিন্দিতে প্রতিশব্দ ‘নমস্তে’টাও শেখা আছে। সাক্ষাত্‌কারের মাঝেই দেখা গেল সকলের সঙ্গে হাসি-ঠাট্টা করছেন, সামনে দিয়ে যাওয়া সব ফুটবলারের সঙ্গে ‘হ্যালো-হাই’ও চলছে। দোভাষী মারফত সাক্ষাত্‌কার দেওয়ার সময় বোঝা গেল এফসি গোয়ার কোচ ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি জিকো কতটা সাধাসিধে।

Advertisement

শম্ভু মজুমদার

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৪ ০২:২৭
Share:

সাংবাদিক সম্মেলনে জিকোর ছবি তুলেছেন উজ্জ্বল দেব

র‌্যাডিসন হোটেলের লবিতেই তাঁকে ধরা গেল। সাক্ষাত্‌কারের প্রস্তাবে দুটি হাত জোড় করে ভাঙা বাংলায় বলে উঠলেন ‘নমস্কার’। জানালেন, হিন্দিতে প্রতিশব্দ ‘নমস্তে’টাও শেখা আছে। সাক্ষাত্‌কারের মাঝেই দেখা গেল সকলের সঙ্গে হাসি-ঠাট্টা করছেন, সামনে দিয়ে যাওয়া সব ফুটবলারের সঙ্গে ‘হ্যালো-হাই’ও চলছে। দোভাষী মারফত সাক্ষাত্‌কার দেওয়ার সময় বোঝা গেল এফসি গোয়ার কোচ ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি জিকো কতটা সাধাসিধে।

প্রশ্ন: জাপান ও ভারতে ফুটবলের মধ্যে তফাত কোথায় দেখছেন?
জিকো: জাপান তো শূন্য থেকে শুরু করে এই পর‌্যায়ে পৌঁছেছে। জাপান প্রথমেই পরিকাঠামো উন্নয়ন, যুব-উন্নয়ন এবং ফুটবলারদের শরীর গঠন, পুষ্টিকর খাদ্যের দিকে মন দিয়েছে। সব ফুটবলারের জন্য সঠিক মাপে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেটের ডায়েট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় অ্যাকাডেমি তৈরি করে স্থানীয় প্রতিভাদের পালিশ করা হয়েছে। সেখানে কেবল জাপানি কোচ নয়, বাইরের কোচেরাও ট্রেনিং দিয়েছেন। ভারতে পরিকাঠামোর অভাব। জুনিয়র পর‌্যায়ের কোনও খেলোয়াড়ই নিয়ম করে জিমে যায় বলে মনে হয় না। ভাল পুষ্টিকর খাবারও হয়তো পায় না।

প্র: ভারতে আসার আগে, এখানকার ফুটবল নিয়ে ধারণা ছিল?
জিকো: অবশ্যই। বেশি না হলেও ছিল। বছর দশেক আগে, জাপানের কোচ হয়ে বিশ্বকাপ কোয়ালিফাইং রাউন্ডে কলকাতায় এসেছিলাম। তখনই দেখেছি কলকাতা তথা ভারতে ফুটবল নিয়ে কত আবেগ!

প্র: আইএসএল ভারতকে কতটা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে?
জিকো: আগেই বললাম, জাপানে আগে পেশাদার লিগ চালু ছিল না। যখন চালু হল সবাই সেটা সমর্থন করে। শুনলাম ভারতে পেশাদার লিগ চালু হওয়া নিয়ে ছবিটা অন্য রকম ছিল। এখানে বিতর্ক হয়েছে, এমন লিগ চালু হলে দেশের ফুটবলের লাভ হবে না ক্ষতি? জাপানে পেশাদার লিগ চালু হওয়ার আগে ছবিটা ভারতের চেয়েও খারাপ ছিল। না ছিল পরিকাঠামো, না ছিল পেশাদারিত্ব। আর এই কয়েক বছরের মধ্যে দেখুন ওরা কোথায় পৌঁছেছে। জাপানের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, ওরা যদি ওই অবস্থা থেকে বিশ্বকাপে খেলতে পারে, তবে ১২৫ কোটির দেশ কেন পারবে না? তবে এক নম্বর শর্ত হল পেশাদারিত্ব। ঠিক মতো কোচ এনে, সঠিক প্রতিভাকে বেছে, ছোটবেলা থেকে দেখভাল করতে হবে। আইএসএল পরবর্তী যুগ ভারতকে কিন্তু বিশ্ব ফুটবলে সাবালক করতে পারে।

প্র: ভারতীয় ফুটবলারদের কাছ থেকে দেখে কী মনে হল?
জিকো: ভাল ট্রেনিং, খাদ্য, পরিকাঠামো ও পেশাদারি মনোভাবের অভাবটাই চোখে পড়ছে। ভাল ফুটবলার হতে গেলে উঁচু, লম্বা, শক্ত চেহারার দরকার নেই। জাপান, কোরিয়ার ছেলেদের গড় উচ্চতা ভারতীয়দের মতোই। কিন্তু গোড়ার গলদগুলোই আগে সারাতে হবে।

প্র: আপনার দলের কোন কোন ভারতীয় ফুটবলার নজর কাড়ল?
জিকো: অসমের নার্জারির (হোলিচরণ) নামটা বলতে হবে। জীবনের প্রথম আইএসএল ম্যাচ খেলতে নেমেই সেরা উঠতি ফুটবলার হয়েছে। পিটারও ভাল। কিন্তু আরও অনেক উন্নতি দরকার। ফিনিশিং, বেটার শু্যটিং, ঠিকমতো সেন্টার করা শিখতে হবে।

প্র: আপনার ফুটবল জীবনের সেরা প্রাপ্তি কী?
জিকো: কোপা-লিবারতাদোরেস জেতা।

প্র: সবচেয়ে বড় আক্ষেপ?
জিকো: অলিম্পিকে অংশ নিতে না পারা আমাকে এখনও দুঃখ দেয়।

Advertisement

আজ গুয়াহাটিতে
এফসি গোয়া বনাম নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি (সন্ধ্যে ৭-০০)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন