হায়দরাবাদকে উড়িয়ে গম্ভীরদের হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন পোলার্ড

মেঘ সরে গিয়ে নাইট সংসারে এখন কেক, পার্টি ও মাধুরী দীক্ষিত

নিজের কান দুটো নিয়ে খানিকটা চিন্তিত রবিন উথাপ্পা! তাঁর স্ত্রীর মনে হচ্ছে সে দু’টো বড্ড বড়, উথাপ্পার মনে হচ্ছে না। গৌতম গম্ভীর ডুবে সেনাবাহিনীর বীরত্বের ভাবনায়। সৈনিক বাঁচে সুযোগ অবলম্বন করে, ভালবাসে স্বেচ্ছায়, আর পেশায় সে খুনী এই ভাবনাই নাকি তাঁকে প্রেরণা জোগায়। স্ত্রীকে নিয়ে কেনাকাটায় ব্যস্ত পীযূষ চাওলা। পঞ্জাব-নিধনের নৃশংস নায়ক আজ দায়িত্বশীল স্বামী। উমেশ যাদব বান্ধবীর সঙ্গে সান্ধ্য ভ্রমণে বেড়িয়ে পড়েছেন হোটেল চত্বরেই।

Advertisement

প্রিয়দর্শিনী রক্ষিত

কটক শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৪ ০৩:২৩
Share:

পঞ্জাব ম্যাচের পরে হোটেলে নাইট-বরণ। ছবি: টুইটার

নিজের কান দুটো নিয়ে খানিকটা চিন্তিত রবিন উথাপ্পা! তাঁর স্ত্রীর মনে হচ্ছে সে দু’টো বড্ড বড়, উথাপ্পার মনে হচ্ছে না।

Advertisement

গৌতম গম্ভীর ডুবে সেনাবাহিনীর বীরত্বের ভাবনায়। সৈনিক বাঁচে সুযোগ অবলম্বন করে, ভালবাসে স্বেচ্ছায়, আর পেশায় সে খুনী এই ভাবনাই নাকি তাঁকে প্রেরণা জোগায়।

স্ত্রীকে নিয়ে কেনাকাটায় ব্যস্ত পীযূষ চাওলা। পঞ্জাব-নিধনের নৃশংস নায়ক আজ দায়িত্বশীল স্বামী।

Advertisement

উমেশ যাদব বান্ধবীর সঙ্গে সান্ধ্য ভ্রমণে বেড়িয়ে পড়েছেন হোটেল চত্বরেই।

পিৎজার বিশাল কার্টন নিয়ে লবি পেরিয়ে ঘরের দিকে যাচ্ছেন মিসেস সুনীল নারিন।

কানে হেডফোন গুঁজে হোটেলের লনে আলসে টহল রায়ান টেন দুশখাতের।

মাধুরী দীক্ষিতে মজে ডব্লিউ ভি রামন!

ভুবনেশ্বরের টিম হোটেলে সোমবার সারা দিন নাইট সংসারের টুকরো টুকরো ছবিগুলো জোড়া লাগালে যে বৃহত্তর ক্যানভাস তৈরি হবে, তাতে ভেসে উঠছে সুখী সংসারের এক দৃশ্য। অভাব-অনটনের সংসারে যেন বহু বছর পর স্বাচ্ছল্যের আবির্ভাবের স্বস্তি। নাইট শিবির এবং সমর্থকদের কাছে যে দৃশ্য ছিল বহু কাঙ্ক্ষিত, অথচ রবিবারের আগে পর্যন্ত অধরা। কিংস ইলেভেন ম্যাচের আগেই তো কেকেআর কোচ ট্রেভর বেলিস উদাস ভাবে বলছিলেন, “পঞ্জাব টানা জয়ের মধ্যে আছে। এই অনুভূতিটা যে ঠিক কী রকম, আমরা জানি। দু’বছর আগে আমাদের ভাগ্যেও তো ও রকম জয়ের দৌড় লেখা ছিল!”

বেলিসের উদাস হওয়ার কারণ আপাতত উধাও। এ বছর আইপিএলে যাদের অপ্রতিরোধ্য দেখাচ্ছিল, সেই পঞ্জাবের বিরুদ্ধে এমন কর্তৃত্বের সঙ্গে আসা জয়ের দমকা দখিনা হাওয়ায় যেন নাইটদের পরিবারের গুমোট আবহাওয়া উধাও। রবিবার মাঠফেরত নাইটদের মেনুতে ছিল কেক দিয়ে মিষ্টিমুখ আর ছোটখাটো একটা পার্টি। সোমবারও আর মাঠমুখো হওয়ার প্রশ্ন নেই। বরং ছিল নিজের মতো করে একটা ছুটির দিন কাটানোর বিরল স্বাধীনতা। সন্ধের দিকে হালকা জিম সেশন। আর রাত আটটা থেকে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ম্যাচ দেখতে বসে পড়া।

মরুশহরে টানা উপেক্ষার প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে বোধহয় ভাগ্যদেবী ইদানীং গম্ভীর নিয়ে একটু পক্ষপাতী। নইলে একটা সপ্তাহে এক জনের ভাগ্য এ ভাবে বদলে যাওয়া সম্ভব? যে মুম্বইকে আইপিএল সেভেনে আগাগোড়া নড়বড়ে দেখাচ্ছিল, জেতা ম্যাচ হারা যাদের নিয়মের মধ্যে পড়ে গিয়েছিল, তারা সোমবার এ ভাবে জিতে যায়? যে হায়দরাবাদ নাইটদের প্লে-অফ রাস্তায় সবচেয়ে বড় কাঁটা হিসেবে দেখা দিয়েছিল, তাদের হারিয়ে গম্ভীরদের শেষ চারের টিকিট আরএসি থেকে ওয়েটিং লিস্টে নিয়ে আসে?

মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে নিজেদের ঘরের মাঠে হায়দরাবাদ দেড়শোর উপর রান তুলে দেওয়ায় সাময়িক একটা আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল ঠিকই। ভুবনেশ্বরের হোটেলে নাইটরা যখন টিম ডিনার সারছেন, ততক্ষণে এক ওভার যেতে না যেতেই মুম্বইয়ের ব্যাটিং দুর্গে প্রথম ফাটলটা ধরিয়ে দিয়েছিলেন ভুবনেশ্বর কুমার। রোহিত শর্মাদের এ বারের যা ট্র্যাক রেকর্ড, তাতে মুম্বইয়ের জয় নিয়ে তখন কেকেআর শিবিরে ঘোর অনিশ্চয়তা। রবিবার জিতে পয়েন্ট টেবলের অতি গুরুত্বপূর্ণ চার নম্বরের যে সিটটা পাওয়া গিয়েছিল, একটা দিন কাটতে না কাটতেই সেটা হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা। এ দিন জিতে গেলে ন’ম্যাচে দশ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে উঠে আসতেন ডেল স্টেইনরা। প্লে-অফের রাজপথ থেকে নাইটদের আবার অনিশ্চয়তার অন্ধগলিতে ঠেলে দিয়ে। গত বারও তো যুদ্ধটা শেষ পর্যন্ত এমন দ্বিমুখীই দাঁড়িয়েছিল। কেকেআর বনাম হায়দরাবাদ। কেকেআর পারেনি, হায়দরাবাদ পেরেছিল।

এ দিন হায়দরাবাদ পারল না। আইপিএলের মিউজিক্যাল চেয়ারে আপাতত টিকে গেলেন গম্ভীররা। সত্যি, ভাগ্য পরিবর্তন একেই বলে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন