ম্যাক্সওয়েলের নতুন ইনিংস
আরও উত্তেজক আর প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ টুর্নামেন্ট হতে চলেছে সেটা আইপিএল সাতের শুরু থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। আগে আইপিএলে কয়েকটা টিম কিছুটা এগিয়ে আছে বলার তবু জায়গা ছিল, কিন্তু নতুন নিলামে দলগুলোর ভারসাম্য এতটাই ভাল হয়ে গিয়েছে যে একপেশে ম্যাচ বিরলের পর্যায়ে পড়া উচিত। মাত্র কয়েক দিন শুরু হলেও টুর্নামেন্ট ঘিরে উত্তেজনাটা কিন্তু বেশ টের পাওয়া যাচ্ছে।
প্রথম কয়েকটা ম্যাচ দেখার পর আমার মনে হচ্ছে বেঙ্গালুরু আর পঞ্জাবকে পাওয়ার হাউস বলা যায়। দিল্লির বিরুদ্ধে যুবরাজের ব্যাটিং তো দুরন্ত ছিল। ওকে দেখে মনে হচ্ছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালের পর খুব আঘাত খেয়েছে। যেন মিরপুরের ইনিংসের পর যদি কোনও জড়তা থাকেও সেটা ছিঁড়ে বেরিয়ে আসতে চাইছে। সমালোচকদের জবাব দেওয়ার সবচেয়ে ভাল পথ হল রান করা। যে ভাবে ব্যাট করাটা ওর পক্ষে আদর্শ ছিল সেটাই করেছে যুবরাজ, ভয়ডরহীন আর সেই সব শটই মেরেছে যেগুলো ওর অনায়াস।
যুবরাজের পাশাপাশি ম্যাক্সওয়েলের উপরও নজর ছিল। ছেলেটা সত্যিকারের ‘মিলিয়ন ডলার’ প্লেয়ার হতে পারে। শুক্রবার যে ভাবে ও ব্যাট করল আমি নিশ্চিত মুম্বই ওকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য হাত কামড়াচ্ছে। মিডল অর্ডারে ম্যাক্সওয়েল, মিলার ও বেইলিকে কেন্দ্র করেই ঘোরাফেরা করবে পঞ্জাবের ব্যাটিং আর শুরু থেকে আগুন ছোটাতে সহবাগ তো আছেই। পঞ্জাবের উচিত মিচেল জনসনকে নতুন বলে আক্রমণে এনে ওর স্বাভাবিক ছন্দে নিয়ে আসা। এই বোলিং লাইন আপে মুরলী কার্তিককে দেখতে চাই। কারণ মুরলী ভাল স্পিনার। তাই পঞ্জাব ম্যানজমেন্টকে দেখতে হবে কী ভাবে মুরলীকে এই লাইন আপে আনা যায়।
কলকাতাও দারুণ পারফর্ম করল। প্রথম ম্যাচ থেকেই দ্য গ্রেট কালিসের মাঠে আগুন ছুটিয়ে দেওয়াটা বেশ উপভোগ করেছি। টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছে কিন্তু ক্লাস যাবে কোথায়! কালিসের ব্যাটিং বাকি টুর্নামেন্টে কলকাতার সাফল্যের অন্যতম চাবি। কলকাতার এই বোলিং লাইন আপেও প্রচুর বৈচিত্র রয়েছে। মর্নি মর্কেল, সুনীল নারিন, পীযূষ চাওলা আর সাকিব আল হাসান অনেক ব্যাটিং লাইন আপেরই পরীক্ষা নেবে।
মুম্বইয়ের ব্যাটিং লাইন আপটা ঢেলে সাজাতে হবে। আমার মনে হয় রোহিত শর্মার তিন নম্বরে নামা উচিত। জাতীয় দলের হয়ে রোহিত নিয়মিত ওপেন করে তাই হঠাৎ করে ওর চার নম্বরে মানিয়ে নেওয়াটা কঠিন। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিতে হলে রোহিতকে তিনেই নামতে হবে। তা ছাড়া এতে রোহিত ইনিংস গড়ার পাশাপাশি ইনিংসের গতি বাড়ানোর সুযোগও পাবে।
কোরি অ্যান্ডারসনের এটাই আইপিএল আর উপমহাদেশে প্রথম মরসুম। ওর পক্ষে ডাউন দ্য অর্ডারে নেমে যখন স্পিনাররা পুরোদমে বল করছে সেই সময় মানিয়ে নেওয়াটা কঠিন। ওকে ব্যাটিং অর্ডারে আরও উপরের দিকে তুলে আনতে হবে যখন বলটা নতুন থাকে আর পেসাররা বল করে। বরং অম্বাতি রায়ডুর পরে নামাটা ভাল বিকল্প। পাশাপাশি পোলার্ড যাতে ১২-১৩তম ওভারে নামতে পারে সেটাও দেখতে হবে মুম্বইকে। ১৭-১৮তম ওভারে নামলে পোলার্ড সেট করার সময় পাচ্ছে না।
যে টিমগুলো শুরুতে জয় পাচ্ছে না, নিশ্চিত ভাবেই নতুন কম্বিনেশন নিয়ে নামবে। টুর্নামেন্ট তো সবে শুরু হয়েছে, আমি নিশ্চিত আরও অনেক জবরদস্ত পারফরম্যান্স দেখতে পাব আমরা।