গরম জল গায়ে পড়ে পুড়ে গিয়েছিল ১৮ মাসের ছোট্ট শরীরটা। সেই সময় হাসপাতালে মেয়ের রোগশয্যার পাশে বসে থাকতে থাকতে হঠাৎ-ই বাকিটা স্পষ্ট হয়ে যায় তাঁর কাছে। বোঝেন, অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনও ভুল করেননি।
এ দিন সদ্য প্রাক্তন দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক গ্রেম স্মিথ বলেছেন, “ও হাত বাড়িয়ে আমার জামায় লাগানো প্রোটিয়াদের ব্যাজটা ধরল। তখনই বুঝি, মেয়ে আমার সম্পর্কে এটুকুই জানে। আমাকে শুধু টিভিতে দেখে। সেই মুহূর্তটায় বুঝে গিয়েছিলাম, অবসরের সিদ্ধান্তটা একদম ঠিকঠাক নিয়েছি!”
স্মিথ জানাচ্ছেন, অবসরের পর এ বার নিজের পরিবার আর সন্তানদের নিয়েই সময় কাটাতে চান। গত সোমবার আচমকা অবসর ঘোষণা করে ক্রিকেট বিশ্বকে চমকে দিয়েছিলেন স্মিথ। এ দিন বলেন, “অধিনায়ক হিসাবে বাড়িতে থাকার সময়ও দলের বিভিন্ন সমস্যা মাথার মধ্যে ঘুরপাক খেতে থাকে। সময়টা কখনওই পুরোপুরি পরিবারকে দেওয়া যায় না। কিন্তু এ বার দুই সন্তানকে বড় করায় আমি সক্রিয় ভূমিকা নিতে চাই।”
মাত্র ২২ বছরে অধিনায়ক হওয়ার পর বারো বছর দক্ষিণ আফ্রিকাকে নেতৃত্ব দিয়েছেন স্মিথ। তবু অবসরের পরে তাঁর স্ত্রী, পপ তারকা মর্গ্যান ডিয়ানের স্বদেশ আয়ারল্যান্ডের হয়ে তিনি আবার ক্রিকেটে ফিরবেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। স্মিথ অবশ্য এ দিন তাতে জল ঢেলে বলেছেন, “আমার আইরিশ নাগরিকত্ব থাকলেও ওই দেশের হয়ে মোটেই ক্রিকেট খেলব না। যদি কোনও দেশের হয়ে আবার ক্রিকেট খেলতেই হয়, তবে সেটা শুধুই দক্ষিণ আফ্রিকা হবে।”
দলের কাছে নিজের ক্রিকেট ছাড়ার কথা বলতে গিয়ে অনেকক্ষণ গলা দিয়ে শব্দই বের করতে পারেননি স্মিথ। “কথাগুলো যে করে হোক বলে ফেলেই ড্রেসিংরুম থেকে খোলা হাওয়ায় বেরিয়ে যাই। আবেগে এতটাই দমবন্ধ লাগছিল। খুব ভেঙে পড়েছিলাম।”
কিন্তু এখন আর সিদ্ধান্তটা নিয়ে নিজের মনে কোনও সংঘাত নেই। ক্রিকেট আর পরিবারের টানাপোড়েনে এত দিনে জিততে পেরেছে স্মিথ-পরিবার।