মর্গ্যানকে টপকাতে পারলেন না কোলাসো

আই লিগে ‘সেকেন্ড বয়’ হয়েও আর্মান্দো কোলাসোর হাসি উধাও! চোখে-মুখে প্রবল অস্বস্তি। কপালে চিন্তার ভাঁজ! সোমবার যুবভারতীতে ম্যাচের পরে হঠাৎ ইস্টবেঙ্গল কোচকে দেখলে অনেকেই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যেতে পারেন! কী হল রে বাবা, মরসুমের শেষ ম্যাচে তিন গোলে জিতেও এত মানসিক অশান্তি আর্মান্দোর? আই লিগ চ্যাম্পিয়নের ‘কুর্সি’ হাতছাড়া হওয়ার একটা আফসোস আছে। কিন্তু শুধু কি সেটাই একমাত্র কারণ?

Advertisement

প্রীতম সাহা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:১৭
Share:

তিন গোলদাতার সঙ্গে আর্মান্দো কোলাসো। সোমবার। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস

ইস্টবেঙ্গল: ৩ (অভিষেক, চিডি, লেন)

Advertisement

ইউনাইটেড: ০

আই লিগে ‘সেকেন্ড বয়’ হয়েও আর্মান্দো কোলাসোর হাসি উধাও! চোখে-মুখে প্রবল অস্বস্তি। কপালে চিন্তার ভাঁজ!

Advertisement

সোমবার যুবভারতীতে ম্যাচের পরে হঠাৎ ইস্টবেঙ্গল কোচকে দেখলে অনেকেই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যেতে পারেন! কী হল রে বাবা, মরসুমের শেষ ম্যাচে তিন গোলে জিতেও এত মানসিক অশান্তি আর্মান্দোর? আই লিগ চ্যাম্পিয়নের ‘কুর্সি’ হাতছাড়া হওয়ার একটা আফসোস আছে। কিন্তু শুধু কি সেটাই একমাত্র কারণ?

উত্তর হল, না।

ইস্টবেঙ্গল কোচের ইচ্ছের বেলুন ফুটো করে দিয়েছে ফেডারেশনের নিয়ম। রবিবার রাত পর্যন্ত যিনি নিশ্চিত ছিলেন লিগে রানার্স হলেই এএফসি কাপের টিকিট পাকা হয়ে যাবে, সোমবার ম্যাচের পরে তিনি-ই দোটানায়। যুবভারতীর করিডরে দাঁড়িয়ে চিন্তিত আর্মান্দো বলছিলেন, “এএফসি কাপে খেলাই আমার স্বপ্ন। তবে এখন যা পরিস্থিতি, তাতে এএফসি কাপে খেলতে পারব কি না জানি না।” এআইএফএফ সূত্রের খবর, এএফসি কাপে খেলতে পারে আই লিগ ও ফেড কাপ চ্যাম্পিয়ন-ই। এবং সেক্ষেত্রে বেঙ্গালুরু এফসি ও চার্চিলের প্রথম সুযোগ। যদি চার্চিল লাইসেন্সিং নিয়মে আটকে যায়, তা হলেই আই লিগ রানার্স অর্থাৎ ইস্টবেঙ্গল খেলার সুযোগ পাবে। যা শুনে ইস্টবেঙ্গল গোলমেশিন চিডির মন্তব্য, “তা হলে আবার আমাদের অন্য ক্লাবের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। ঈশ্বর বোধহয় আমাদের বার বার পরীক্ষা নিচ্ছেন।”

এএফসি কাপ খেলার স্বপ্ন ঝুলে থাকলেও, সোমবার মরসুমের শেষ ম্যাচে চিডি-লেনরা যে ফুটবল খেললেন, তাতে আনন্দ-উৎসব করতেই পারে লাল-হলুদ জনতা! কথায় বলে ‘যার শেষ ভাল, তার সব ভাল’। আর এখানে তো তিন গোল দিয়ে শেষ করল আর্মান্দোর দল। তাও আবার এমন এক জনের বিরুদ্ধে যাঁকে খোদ ইস্টবেঙ্গল কোচ-ই অসম্ভব শ্রদ্ধা করেন। সুব্রত ভট্টাচার্য। এ দিন অবশ্য শুরুটা দারুণ করেছিলেন ইউনাইটেড কোচ। ম্যাচ শুরুর পনেরো মিনিটের মধ্যে রফিক যদি ফাঁকা গোল নষ্ট না করতেন, তা হলে স্কোরলাইনে বড় হেরফের হওয়ার সম্ভাবনাও থাকত! আর্মান্দো নিজেও স্বীকার করলেন, “প্রথমার্ধে ইউনাইটেড যে ফুটবল খেলেছে, তাতে আমরা গোল খেয়েও যেতে পারতাম। তবে আমার রক্ষণ দারুণ ফুটবল খেলেছে।”

এ দিনের ম্যাচে আর্মান্দোর প্রধান সমস্যা যদি কলকাতার গরম হয়, তা হলে রক্ষাকবচও সেই গরম-ই। বিরতির পরে যখন তাপপ্রবাহের দাপটে লালকমল-অনুপমরা ক্লান্ত হয়ে পড়লেন, তখনই পাল্টা আক্রমণে গোলের দরজা খুলে দিলেন অভিষেক, চিডি ও লেন। ইস্টবেঙ্গলের প্রথম গেলে অবশ্য ইউনাইটেড গোলকিপার অভিজিৎ দাসের দোষই বেশি। অভিষেকের শট যেটা ফিস্ট করে বাইরে বের করলেই হত, সেটা কোলে নিয়ে গোলে ঢুকে গেলেন অভিজিৎ। চিডি একক দক্ষতার জোরে একটি গোলে করলেন, একটি করালেন লেনকে দিয়ে। সুব্রত অবশ্য হারের কারণ হিসেবে ক্লান্তিকে দোষ দিতে চাইছেন না। তাঁর যুক্তি, “একে তো ফুটবলার নেই। তার ওপর ম্যাচের আগে দীপক ও ধনচন্দ্র সিংহের চোট লেগে গেল। এ ভাবে ম্যাচ জেতা যায় নাকি। তবু আমরা যে ফুটবল খেলেছি, তাতে আমি খুশি।”

সব মিলিয়ে মরসুম শেষে দুই কোচের মার্কশিট-- সুব্রতর হাতে ইউনাইটেডের অবনমন-মুক্তি। আর্মান্দোর প্রাপ্তি শুধু কলকাতা লিগ। আই লিগে ট্রেভর মর্গ্যানকেও টপকাতে পারলেন না তিনি। সেই রানার্স! ট্রফি-লাক যাঁর সঙ্গে সব সময় থাকে সেই গোয়ান কোচ পরের বার কী করেন, এখন সেটাই দেখার।

ইস্টবেঙ্গল: গুরপ্রীত, রাজু, অর্ণব, সৌমিক, হরমনজ্যোৎ, অভিষেক, লালরিন্দিকা, কেভিন (সফর), তুলুঙ্গা (আব্রাঞ্চেস), সুয়োকা (লেন), চিডি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন