যুদ্ধের আগে পরস্পরের প্রশংসায় সুভাষ-সুব্রত

সুভাষ ভৌমিক আর সুব্রত ভট্টাচার্য--- দুই হাইপ্রোফাইল বাঙালি কোচের কাছেই সোমবারের ম্যাচ কার্যত সম্মান রক্ষার লড়াই! সেই লড়াইয়ে নামার আগে রবিবার সকালে চৌম্বকে উঠে আসছে নানা দৃশ্য--

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৪ ০৩:৩৬
Share:

প্র্যাকটিসে সুভাষ। রবিবার। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস

সুভাষ ভৌমিক আর সুব্রত ভট্টাচার্য--- দুই হাইপ্রোফাইল বাঙালি কোচের কাছেই সোমবারের ম্যাচ কার্যত সম্মান রক্ষার লড়াই!

Advertisement

সেই লড়াইয়ে নামার আগে রবিবার সকালে চৌম্বকে উঠে আসছে নানা দৃশ্য--

এক) মোহনবাগান অনুশীলনে নামার আধ ঘণ্টা আগে থেকেই ক্লাবের প্রধান ফটকের সামনে পাহারায় দুই রক্ষী। আসলে টালিগঞ্জ অগ্রগামীর বিরুদ্ধে কলকাতা লিগে যাত্রা শুরুর আগের দিন ‘ক্লোজড ডোর’ প্র্যাকটিস করাচ্ছিলেন সুভাষ।

Advertisement

দুই) দরজা বন্ধ করে বাগান টিডি যখন টালিগঞ্জকে হারানোর ব্লু প্রিন্ট তৈরিতে ব্যস্ত, সেই সময় ময়দান থেকে দূরে সল্টলেক স্টেডিয়ামে নিজের ফুটবলারদের চিনতে ব্যস্ত থাকলেন মাত্র আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে টালিগঞ্জের দায়িত্ব নেওয়া সুব্রত। দলের অধিকাংশ ফুটবলার সম্পর্কেই বিশেষ ধারণা নেই তাঁর। কোচ রঘু নন্দী রাগ করে টালিগঞ্জ ছেড়ে চলে গিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে যেন কিছুটা অন্ধকারে হাঁতড়াচ্ছেন ময়দানের বাবলু।

তিন) মরসুমের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামছে মোহনবাগান। অথচ তার চব্বিশ ঘণ্টা আগেও সেভাবে সমর্থকদের ভিড় চোখে পড়ল না ক্লাব তাঁবুতে। যদিও সে সবকে বিশেষ গুরুত্ব না দিয়ে সুভাষ নানা ভাবে উজ্জীবিত করে চলেছেন তাঁর ফুটবলারদের। ভুল শুধরোতে কখনও বকঝকা করছেন তো আবার কখনও আদর করে কাছে টেনে নিচ্ছেন।

চার) উল্টো দিকে সুব্রতরও ভোকাল টনিক চলছে টালিগঞ্জে। সবুজ-মেরুনের ঘরের ছেলে চাইছেন, টালিগঞ্জ ফুটবলারদের লড়াকু মানসিকতাকে উস্কে দিয়ে মোহনবাগানকে আটকাতে।

পাঁচ) সুভাষ যখন তিন পয়েন্ট ছাড়া কিছু ভাবছেন না, ঘোর বাস্তবের জমিতে দাঁড়িয়ে সুব্রতর লক্ষ্য তখন এক পয়েন্টই।

সুভাষ বনাম সুব্রত নিয়ে ময়দানে উত্তেজনা কম নয়। তবে ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে দুই কোচই একে অপরের ‘পিঠ চুলকোতে’ ব্যস্ত। সাংবাদিক সম্মেলনে সুভাষ যেমন বলে দিলেন, “সুব্রত এক মাসের জন্য এশিয়ার সেরা কোচ হয়েছিল, এটা ধ্রুব সত্য। অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই। মাথার টুপি খুলে (সত্যিই ওই সময় তাঁর মাথায় থাকা টুপি খুলে নেন বাগান টিডি) এ কথা আমি মেনে নিলাম।” উল্টো দিকে সুব্রতর দাবি, “অমল-পিকের পর আমি আর ভৌমিকদা-ই তো বাংলার সফল কোচ। ওর মতো সফল ফুটবলার-কোচের অর্জুন-দ্রোণাচার্য পাওয়া উচিত।”

মুখে পরস্পরের প্রতি যতই বিনয়ী হোন না কেন, তাঁদের ফুটবল মস্তিষ্কে এখন শুধুই পয়েন্ট জোগাড়ের নানা অঙ্ক। টালিগঞ্জের টিডি যখন বোয়া, কাতসুমি, সাবিথ, জেজেদের আটকাতে রক্ষণাত্মক ফুটবলের স্ট্র্যাটেজি নিচ্ছেন, সুভাষ তখন পাসিং ফুটবলকে অস্ত্র করে গোলের মুখ খোলার সেতু তৈরি করতে চাইছেন।

বোয়া আর বলবন্তের যদিও ম্যাচ-ফিট হতে আরও সপ্তাহ দুয়েক মতো সময় লাগবে, তবু দু’জনকেই আঠারো জনের দলে রাখছেন সুভাষ। বললেন, “বোয়া অনেক বড়-বড় ক্লাবে খেলে এসেছে। কিন্তু বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে ১৫১ নম্বর দেশের ফুটবল পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার তো একটা ব্যাপার রয়েছে। তাই ওকে আঠারো জনের দলে রাখছি।”

সুব্রত আবার মোহনবাগানকে এগিয়ে রাখলেও, টালিগঞ্জ অগ্রগামীকে টানা ৩৫ ম্যাচে অপরাজিত রেখে দলত্যাগী কোচ রঘু নন্দী কিন্তু বলে দিলেন, “টালিগঞ্জ যা দল, তাতে মোহনবাগানকে হারানোর ক্ষমতা রাখে ওরা।”

আজ কলকাতা লিগে-- মোহনবাগান : টালিগঞ্জ অগ্রগামী (যুবভারতী, ৪-০০)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন