বুধবার সাংবাদিক সম্মেলনে নেইমার। ছবি: রয়টার্স।
কলম্বিয়া? ভাবার সময় নেই।
হামেস রদ্রিগেজ? ধুর!
ডান হাঁটুর চোট? তাঁর ফিটনেস নিয়ে প্রশ্ন আছে। ভাবনাও আছে। কিন্তু নেইমারের মধ্যে তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না।
নেইমার দ্য সিলভার অত কিছু ভাবার সময় এখন সত্যিই নেই। নেইমার দ্য সিলভা এখন রদ্রিগেজ নয়, রোনাল্ডো দেখছেন!
মনোবিদের সঙ্গে কয়েকটা সেশন যে টিমের অন্দরের কাঠামো কতটা বদলে দিতে পারে, তেরেসোপলিসের ব্রাজিল নাম্বার টেন তার প্রমাণ। কয়েক ঘণ্টা আগে পর্যন্ত সবচেয়ে বড় প্রশ্ন ছিল, কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে নেইমার নামতে পারবেন, না পারবেন না? তেরেসোপলিসে মহানায়ক পা দেওয়ার পর প্রশ্নটা পাল্টে দাঁড়াল ব্রাজিল কাপ জিতছে, না জিতছে না?
“বিশ্বকাপ খেলার প্রেশার তো থাকবেই। কিন্তু আমার কাছে তো এটা স্বপ্ন,” বুধবার ভারতীয় সময় গভীর রাতে টিমের সঙ্গে প্র্যাকটিস শেষে বলে দেন নেইমার। আজ্ঞে হ্যাঁ, এ দিন প্র্যাকটিসে তাঁকে বল সমেতই দেখা গিয়েছে। এবং মাঠের মতো মাঠের বাইরেও যে তিনি ড্রিবলটা বেশ ভালই পারেন, কোয়ার্টার ফাইনালের চাপ তাঁর তুড়িতে উড়িয়ে দেওয়াই প্রমাণ। “যখন আমি খুব ছোট ছিলাম, যখন রোনাল্ডোকে প্রথম দেখেছিলাম কাপ ফাইনালে গোল করতে, নিজেকে বলেছিলাম আমি ওর মতো হব। কাপ ফাইনালে গোল করব। চাপ নিয়ে ভাবার সময় আমার নেই। নিজের দেশে খেলছি। জনসমর্থন আমাদের। আমার তো খুশি হওয়া উচিত। আর আপনি কখনও সব সময় ভাবতে পারেন না যে, হেরে গেলেই মৃত্যু হয়ে যাবে। ও ভাবে ফুটবল হয় না,” বাইশ বছরের তরুণকে বলতে শোনা গেলেও কথাবার্তা কি পঁয়ত্রিশ বছরের অভিজ্ঞের নয়?
মিডিয়া ইতিমধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে বাইশ বছরের আর এক তারকাকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। তিনি কলম্বিয়ার হামেস রদ্রিগেজ। নেইমারের সে প্রশ্নের উত্তরে হাসি আছে, বৈরিতা নেই। বললেন, “আমি তো প্রথম প্রেস কনফারেন্সেই বলেছিলাম, আমি টপ স্কোরার হতে চাই না। প্লে-মেকার হতে চাই না। শুধু কাপটা চাই! যদি ব্রাজিল শুক্রবার জেতে, আমার ম্যাচে না খেললেও চলবে।” রদ্রিগেজের সঙ্গে ডুয়েলে ঢুকতে এখনই ইচ্ছুক নন বুঝিয়েও ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন, শুক্রবারই রদ্রিগেজের রাজপাট ধ্বংস করার ইচ্ছে তাঁর আছে। “আমরা দু’জনেই বাইশ বছরের। আর ও এত কম বয়সি হয়েও এমন খেলছে, বোঝাই যাচ্ছে ও গ্রেট প্লেয়ার। কিন্তু আমি চাই শুক্রবার ব্যাপারটা শেষ হোক। ব্রাজিল ফাইনালের দিকে আরও এগোক।”
নেইমার আশ্বস্ত করছেন যে, তাঁর শরীর এবং মন দুটোই একদম ঠিক জায়গায় আছে। চিলির বিরুদ্ধে জেতার পর ব্রাজিলিয়ান টিমের আবেগের অত্যধিক বহিঃপ্রকাশ নিয়ে যে সমালোচনা হয়েছিল, সে সবও সামলে ওঠা গিয়েছে। “আবেগ নিয়ে আর কেউ সমস্যায় ভুগছে না। আসলে ওই ম্যাচটা প্রচণ্ড উত্তেজক ছিল। আমি নিজেও প্রচণ্ড উত্তেজিত ছিলাম। কিন্তু এখন আমরা কলম্বিয়ার মুখোমুখি হওয়ার জন্য তৈরি,” বলে দিয়েছেন নেইমার।