সুভাষের প্র্যাকটিসে নেমে পড়লেন ফাতাই। ছবি: উৎপল সরকার
র্যান্টি-ডুডুদের সঙ্গে লড়াইয়ে নামার জন্য প্রস্তুত হয়েই এসেছেন ‘মিস্টার ক্লিন’।
“ইস্টবেঙ্গল দলটাকে চিনি। ওদের বিরুদ্ধে গোলও করেছিলাম। সেই টিমটার অনেকে আছে এখনকার দলেও। র্যান্টি-ডুডুর সঙ্গে সামনা সামনি কোনও দিন কথা না হলেও শুনেছি ওরা খুব ভাল ফুটবলার। আমিও ষাট শতাংশ তৈরি। একশো হতে দু’তিনটে অনুশীলন ম্যাচ খেলতে হবে,” সোমবার সকালে বাগানের প্র্যাক্টিস থেকে উঠে বলছিলেন আলাও ফাতাই আদিসা। যাকে এখন ইয়েমেনের অনেকে ‘মিস্টার ক্লিন নামে ডাকছেন। ডাকবেনই বা না কেন? সেখানকার যে ক্লাবের হয়ে খেলছেন কয়েকমাস আগেই সেই আল আরুবা রক্ষণে দাঁড়িয়ে ফেয়ার প্লে ট্রফি পেয়েছেন। ২৬ ম্যাচে লালকার্ড তো নয়ই, একটা হলুদ কার্ডও দেখেননি। একজন ডিফেন্ডারের কাছে যা শ্লাঘার বিষয়।
শনিবারই কলকাতায় এসে পৌঁছেছিলেন মোহনবাগানের নতুন বিদেশি ফাতাই। রবিবার যুবভারতীতে সুভাষ ভৌমিকের টিমের ম্যাচ দেখেছিলেন। বাগানের পরিবেশ এবং টিম দেখে যে তিনি খুশি তা বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন বারবার। “বোয়া খুব ভাল ফুটবলার। কাতসুমিও ভাল। টিমের বাকিদের খেলাও খুব ভাল লাগল।” বাগানের প্রথম দিনের অনুশীলনে পাশে দলের টিডিকে পাননি। বরং পুরো সময়টাই কাটালেন ফিজিক্যাল ট্রেনার ব্রাজিলিয়ান গার্সিয়ার সঙ্গেই। স্ট্রেচিং থেকে স্পটজাম্পকিছুই বাদ গেল না। সঙ্গে মাঠে চার-পাঁচ পাক দৌড়ালেনও। বোয়া এবং ফাতাইদের দেখতে হঠাৎ-ই এ দিন হাজির হয়েছিলেন বিশ্বের নামী স্প্যানিশ দৈনিক মার্কার সাংবাদিকরা। ১২৫ বছরের মোহনবাগানের ইতিহাস এবং ক্লাব সম্পর্কে প্রতিবেদন লেখার জন্য।
মার্কার-সাংবাদিকরা ফাতাইকে দেখতেই পেতেন না হয়তো, যদি এক বছর আগে ইস্টবেঙ্গল চুক্তি পাকা করে নিত। আল আরুবার হয়ে ২০১২ এএফসি কাপে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে গোল করার পরে তিনি লাল-হলুদ কর্তাদের নজরে আসেন। ফাতাই বলছিলেন “ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে আমার কথা অনেক দূর এগিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা আর হয়নি।” লাল হলুদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবে সই করার ক্ষেত্রে ফাতাইয়ের উপদেষ্টার কাজ করেন প্রাক্তন দুই ইস্টবেঙ্গল ফুটবলার পেন ওরজি ও উগা ওপারাই। “পেন ও উগা আমার ভাল বন্ধু। ওদের সঙ্গে কথা হয় মোহনবাগান নিয়ে। তার পর আমি ইউটিউবে দেখি মোহনবাগানের কয়েকটা ম্যাচ। এর পরই সিদ্ধান্ত নিই কলকাতায় খেলব।” বাগানে চার বছর ট্রফি নেই শুনেছেন। হয়তো সেজন্যই তাঁকে বলতে শোনা গেল “আই লিগটাই জিততে হবে এখানে। ইয়েমেন সুপার কাপ জিতেছিলাম। যা আজও স্মরণীয় একটা মুহূর্ত। ভারতেও প্রথম বছরটা স্মরণীয় করে রাখতে চাই।”
এখন দেখার, বোয়ার পর ফাতাইয়ের খেলা কতটা মুগ্ধ করে বাগান সমর্থকদের। নাইজিরিয়ান ডিফেন্ডারের মাঠে নামতে অবশ্য আরও কিছুদিন সময় লাগবে।