শামিকে আবার ছন্দে ফেরানোর জন্য টিম ম্যানেজমেন্টকে ধন্যবাদ

এটাই আসল মহম্মদ শামি। ওর কাছ থেকে এই বোলিংটাই দেখতে চাইছিলাম। যা রবিবার অ্যাডিলেডে ও দেখাল। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যাটিংয়ে যদি সেরা হয় বিরাট কোহলি, তা হলে বোলিংয়ে অবশ্যই শামি। বিশ্বকাপ অভিষেকে ও তুলে নিল চার উইকেট। ’৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বেঙ্কটেশ প্রসাদের পাঁচ উইকেটের পর এটাই কোনও ভারতীর বোলারের সেরা পারফরম্যান্স। একের পর এক যে ভাবে ও ইউনিস, মিসবা, আফ্রিদি, ওয়াহাবকে ফিরিয়ে দিল, তাতে বোঝা গেল বিশ্বকাপের জন্য ও নির্দিষ্ট কতগুলো পরিকল্পনা তৈরি করে নিয়েছে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ীই বোলিং করছে।

Advertisement

অশোক মলহোত্র

শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৫৫
Share:

অ্যাডিলেডে শামি: ৯-১-৩৫-৪

এটাই আসল মহম্মদ শামি। ওর কাছ থেকে এই বোলিংটাই দেখতে চাইছিলাম। যা রবিবার অ্যাডিলেডে ও দেখাল।

Advertisement

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যাটিংয়ে যদি সেরা হয় বিরাট কোহলি, তা হলে বোলিংয়ে অবশ্যই শামি। বিশ্বকাপ অভিষেকে ও তুলে নিল চার উইকেট। ’৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বেঙ্কটেশ প্রসাদের পাঁচ উইকেটের পর এটাই কোনও ভারতীর বোলারের সেরা পারফরম্যান্স।

একের পর এক যে ভাবে ও ইউনিস, মিসবা, আফ্রিদি, ওয়াহাবকে ফিরিয়ে দিল, তাতে বোঝা গেল বিশ্বকাপের জন্য ও নির্দিষ্ট কতগুলো পরিকল্পনা তৈরি করে নিয়েছে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ীই বোলিং করছে। এ ছাড়া ওকে বেশ তরতাজাও লাগল। টেস্ট সিরিজ আর ওয়ান ডে-তে কিছুটা ক্লান্ত লাগছিল। মনে হচ্ছে মাঝের ক’দিনের ব্রেকটা ওকে তরতাজা করে তুলেছে। তা ছাড়া এই সময়টাতে হোমওয়ার্কটাও খুব ভাল করেছে ও। আমি জানি না, ফ্লেচার না শাস্ত্রী, না অন্য কেউ -- কে ওর পিছনে খেটেছে। কিন্তু টিম ম্যানেজমেন্টে যে-ই থাক, সে কিন্তু আবার পুরনো শামিকে ফিরিয়ে দিয়েছে। ওদের ধন্যবাদ।

Advertisement

পেসটা তো ওর ছিলই। এ দিন দেখে মনে হচ্ছে প্রতি ম্যাচ ধরে শামি বোলিংয়ের পরিকল্পনা করেছে। অন্তত ওর এ দিনের বোলিং দেখে সে রকমই মনে হল। পাকিস্তানের জন্য অ্যাডিলেডে ওর যে স্ট্র্যাটেজি ছিল, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে মেলবোর্নে বোধহয় সেটা থাকবে না। না থাকাই উচিত। বিশ্বকাপ মানেই তো তাই। প্রতিপক্ষের সঙ্গে মাঠ, উইকেট, পরিবেশ সবেতেই যে পরিবর্তন আসে। ফলে ক্রিকেটারকেও সেই অনুযায়ী নিজের স্ট্র্যাটেজি পাল্টে নিতে হয়।

রবিবারের ম্যাচে নিখুঁত লাইন-লেংথ রাখা ছাড়াও পরিকল্পনাটা ছিল শর্ট বল, ইয়র্কার ও বাউন্সারের একটা মিক্সচার তৈরি করে সেটা ব্যাটসম্যানদের গিলিয়ে দেওয়া। যে ক’দিন ওর ব্যাড প্যাচ চলছিল, সে ক’দিন শামির বোলিংয়ে লাইন ও লেংথের ধারাবাহিকতাটা পাওয়া যাচ্ছিল না। চারটে বল ঠিক জায়গায় পড়ছিল তো বাকি দুটো বাজে করে ফেলছিল। এ দিন কিন্তু সেটা করেনি। ধারাবাহিকতাটা রেখেছে। তবে এর জন্য পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানদের সামান্য হলেও ধন্যবাদ প্রাপ্য। ওদেরও শামির বোলিং সামলানোর ক্ষমতা ছিল বলে মনে হয় না। বিপক্ষের কাছ থেকে কোনও পাল্টা আক্রমণও আসেনি।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে আবার শামিকে স্ট্র্যাটেজি বদলাতে হবে। ডে’ভিলিয়ার্সরা কিন্তু পাল্টা আক্রমণের রাস্তায় যাবে। তাই বেশি শর্ট বল দেওয়া উচিত হবে না। ইয়র্কার ও আউটসুইংয়ের উপর বেশি জোর দেওয়া উচিত। লাইন, লেংথ বজায় রাখাটা তো বেসিক ব্যাপার। কিন্তু উল্টো দিক থেকে চাপ এলেই বোলারের লাইন-লেংথের দফা রফা হয়ে যায়। শামিকে এই পরীক্ষার মুখেই পড়তে হবে। আমার বিশ্বাস, সেই চ্যালেঞ্জটাও ভাল ভাবে সামলে দিতে পারবে শামি।

ভারত

রোহিত ক মিসবা বো সোহেল ১৫
ধবন রান আউট ৭৩
বিরাট ক আকমল বো সোহেল ১০৭
রায়না ক হ্যারিস বো সোহেল ৭৪
ধোনি ক মিসবা বো সোহেল ১৮
জাডেজা বো ওয়াহাব ৩
রাহানে বো সোহেল ০
অশ্বিন ন.আ. ১
শামি ন.আ. ৩
অতিরিক্ত
মোট ৫০ ওভারে ৩০০-৭
পতন: ৩৪, ১৬৩, ২৭৩, ২৮৪, ২৯৬, ২৯৬, ২৯৬
বোলিং: ইরফান ১০-০-৫৮-০, সোহেল ১০-০-৫৫-৫, আফ্রিদি ৮-০-৫০-০,
ওয়াহাব ১০-০-৪৯-১, ইয়াসির ৮-০-৬০-০, হ্যারিস ৪-০-২৬-০।

পাকিস্তান

শেহজাদ ক জাডেজা বো উমেশ ৪৭
ইউনিস ক ধোনি বো শামি ৬
হ্যারিস ক রায়না বো অশ্বিন ৩৬
মিসবা ক রাহানে বো শামি ৭৬
মকসুদ ক রায়না বো উমেশ ০
আকমল ক ধোনি বো জাডেজা ০
আফ্রিদি ক বিরাট বো শামি ২২
ওয়াহাব ক ধোনি বো শামি ৪
ইয়াসির ক উমেশ বো মোহিত ১৩
সোহেল ক উমেশ বো মোহিত ৭
ইরফান ন.আ. ১
অতিরিক্ত ১২
মোট ৪৭ ওভারে ২২৪
পতন: ১১, ৭৯, ১০২, ১০২, ১০৩, ১৪৯, ১৫৪, ২০৩, ২২০
বোলিং: উমেশ ১০-০-৫০-২, শামি ৯-১-৩৫-৪, মোহিত ৯-০-৩৫-২, রায়না ১-০-৬-০, অশ্বিন ৮-৩-৪১-১, জাডেজা ১০-০-৫৬-১।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন