শামি-ভুবি জুটি ব্যাটেও ভোগাল ইংরেজদের

পাঁচ বোলারে খেলার জন্য একজন ব্যাটসম্যান কম নিয়েই প্রথম টেস্টে নেমেছে ভারত। কিন্তু দলের দুই বোলার যে ব্যাট হাতে নেমে রানের বন্যা বইয়ে দেবেন, তা মহেন্দ্র সিংহ ধোনিরও বোধহয় কল্পনাতীত ছিল। তবে এ তাঁর কাছে পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনা নয়, বরং ১১১ রান। যা ইংল্যান্ডকে চাপে ফেলে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৪ ০৩:৩৯
Share:

জুড়িদার ভুবনেশ্বরকে সঙ্গে নিয়ে হাফসেঞ্চুরির হাসি শামির। বৃহস্পতিবার ট্রেন্ট ব্রিজে। ছবি:রয়টার্স

পাঁচ বোলারে খেলার জন্য একজন ব্যাটসম্যান কম নিয়েই প্রথম টেস্টে নেমেছে ভারত। কিন্তু দলের দুই বোলার যে ব্যাট হাতে নেমে রানের বন্যা বইয়ে দেবেন, তা মহেন্দ্র সিংহ ধোনিরও বোধহয় কল্পনাতীত ছিল। তবে এ তাঁর কাছে পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনা নয়, বরং ১১১ রান। যা ইংল্যান্ডকে চাপে ফেলে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট।

Advertisement

প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ভারতীয় ব্যাটিং লাইন আপের দ্বিতীয় দীর্ঘতম পার্টনারশিপটা যে মহম্মদ শামি ও ভুবনেশ্বর কুমার গড়বেন, তা সত্যিই অভাবনীয়। ধোনি-মুরলীর ১২৬-এর পর তাঁদের ১১১ রানের পার্টনারশিপ ভারতকে ৪৫৭-য় পৌঁছে দেওয়ায় প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ড চাপে পড়ল বইকি।

দলের ৩৪৬-এর মাথায় ধোনি প্যাভিলিয়নে ফিরে যাওয়ার পরও যে এমন হতে পারে, তা ভাবাটা বেশ কঠিন ছিল। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে যাঁর সর্বোচ্চ অপরাজিত ৩৩, সেই মহম্মদ শামি (৫১ অপরাজিত) ইংল্যান্ডে প্রথম টেস্টেই যে জীবনের প্রথম টেস্ট হাফসেঞ্চুরি হাঁকিয়ে বসবেন, তা আর কে ভেবেছিলেন?

Advertisement

শুধু শামি কেন, ভুবনেশ্বর কুমারই (৫৮) বা কী কম যান? শামির সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ব্যাটিংটা করে গেলেন এবং অ্যান্ডারসন, ব্রডদের অবাক করে দিয়ে তিনিও হাফসেঞ্চুরি হাঁকালেন। দু’জনে মিলে ১১টি চার। শামির খাতায় একটা ওভার বাউন্ডারিও। এটা অবশ্য টেস্টে ভারতের শেষ উইকেট জুটির সর্বোচ্চ নয়, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান। সেরাটা হয়েছিল দশ বছর আগে ঢাকায়, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। ১৩৩-এর পার্টনারশিপ গড়া সেই জুটিতে জাহির খানের সঙ্গে যিনি ব্যাট করছিলেন, তাঁর নাম সচিন তেন্ডুলকর।

এ দিন কিন্তু সচিনের মতো কোনও কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান নন, ছিলেন দুই তরুণ পেস বোলার, যাঁরা নেটে ব্যাট করেন কি না, তার খেয়ালই রাখেন না কেউ। বিশ্ব ক্রিকেটের সেরা শেষ উইকেট পার্টনারশিপের তালিকায় অবশ্য এ দিনেরটা ১৬ নম্বরে।

তিন বছর আগে এই মাঠেই ভারতের ২৬৭-৪ থেকে ২৮৮ অল আউট হয়ে যাওয়ার স্মৃতি ধোনির মনে নিশ্চয়ই এখনও দগদগে। সেই ধোনি যখন ব্যক্তিগত ৮২-র মাথায় অযথা রান নিতে গিয়ে আউট হয়ে ফিরে গেলেন, তখন দল ৩৪৬-এ। এখান থেকেই অভিযান শুরু করেন শামি-ভুবি। তাঁদের ব্যাটিং এটাও বুঝিয়ে দিল যে, তিন বছর আগের ইংল্যান্ডের সঙ্গে এই ইংল্যান্ডের তফাৎ কতটা।

গত বার এই ট্রেন্ট ব্রিজে যেখানে ৩১৯ রানে হেরেছিল ভারত, সেখানে এ বার শুরু থেকেই চালকের আসনে তারা। অ্যালিস্টার কুক ব্যর্থতার ধারা বজায় রেখে শুরুতেই মহম্মদ শামির বলে বোল্ড হয়ে ফিরে গেলেন। দিনের শেষে অবশ্য স্যাম রবসন ও গ্যারি ব্যালান্স ইংল্যান্ডকে ৪৩-১-এ আনার পর হয়তো ভারতের দুই টেল এন্ডারের কীর্তি থেকে বড় ইনিংস গড়ার প্রেরণা খোঁজার চেষ্টা করবেন।

মইন আলির বলে জো রুটের হাতে ক্যাচ দিয়ে ভুবনেশ্বর ফিরে যাওয়ার আগে পর্যন্ত ভারত পাঁচশোর দিকে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েই এগোচ্ছিল। আগের দিন ধোনির সঙ্গে ১২২-এ অপরাজিত থাকা ভারতীয় দলের শতরানকারী মুরলী বিজয় ১৪৬ রানে অ্যান্ডারসনের এলবিডব্লু-র ফাঁদে পড়ে যান।

টেস্টের দ্বিতীয় সকালে এটাই ভারতের প্রথম উইকেট। এর পর রবীন্দ্র জাডেজা (২৫) ধোনিকে সঙ্গ দেওয়ার কাজটা ভালই করছিলেন। তাঁর ভরসায় ধোনিও সেঞ্চুরির দিকে যাচ্ছিলেন। কিন্তু অযথা রান আউট হয়ে যাওয়ায় তাঁর সেই ইচ্ছা আর পূরণ হল না। কিন্তু যাঁকে অলরাউন্ডার হিসেবে দলে নিয়ে প্রথম টেস্ট ক্যাপ দেওয়া হয়েছে, সেই স্টুয়ার্ট বিনি বিরাট কোহলির মতো মাত্র এক রান করে ফিরে যান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ভারত

প্রথম ইনিংস: ৪৫৭

(বিজয় ১৪৬, ধোনি ৮২, ভুবনেশ্বর ৫৮, অ্যান্ডারসন ৩-১২৩)

ইংল্যান্ড

প্রথম ইনিংস: ৪৩-১

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন