মালিঙ্গাদের এশিয়া জয়। শনিবার মিরপুরে। ছবি: এএফপি।
কখন যে কী করবে পাকিস্তান, তা বোধহয় ওরা নিজেরাও জানে না। শনিবার এশিয়া কাপ ফাইনালটা দেখতে দেখতে বারবার মনে পড়ছিল ভারতের বিরুদ্ধে সে দিনের ম্যাচটার কথা। সন্দেহ হচ্ছিল, সত্যিই সে দিনের পাকিস্তান দলটা ফাইনালে খেলছে কিনা!
শ্রীলঙ্কা যোগ্য দল হিসেবেই এশিয়া কাপ জিতল, এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। আসলে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচটা দেখেই হোমওয়ার্ক করে নিয়েছিল অ্যাঞ্জেলো ম্যাথেউজরা।
স্ট্র্যাটেজিটা খুব সহজ। শুরু থেকেই চাপে রেখে যাও পাকিস্তানকে।
পাকিস্তান এমন একটা দল, যারা চাপে পড়লে বেশির ভাগ সময়ই ভেঙে পড়ে। তাই শুরুতেই তিন উইকেট হারানোর ধাক্কাটা ওরা সামলাতে পারল না। তা ওদের ফাওয়াদ আলম (১১৪ ন.আ.) যতই সেঞ্চুরি করুক না কেন। আসলে এত সুন্দর ব্যাটিং পিচে ২৬০ মোটেই বড় রান নয়। সবচেয়ে বড় কথা, পাক ব্যাটিংকে শুরুতেই ধাক্কা দেওয়ার মতো অস্ত্র ছিল শ্রীলঙ্কার হাতে। যার নাম লাসিথ মালিঙ্গা। পাকিস্তানের পাঁচ উইকেটের মধ্যে পাঁচটাই মালিঙ্গার।
শ্রীলঙ্কা এ দিন ঠিকঠাক টিমটাও নামিয়েছে। অজন্তা মেন্ডিসকে খেলায়নি। কারণ, পাক ব্যাটসম্যানরা ওর বিরুদ্ধে খেলতে সে রকম সমস্যায় পড়ে না। বরং সুরঙ্গ লাখমলকে খেলালো। ছেলেটা উইকেট না পেলেও রানটা আটকে দিয়েছে। শ্রীলঙ্কা বুঝে গিয়েছিল, পাকিস্তানের দুর্বল জায়গাটা ব্যাটিংই। তাই শুরু থেকেই উইকেটের জন্য ঝাঁপিয়েছিল।
এশিয়া কাপে সব ক’টা দলের মধ্যে শ্রীলঙ্কার ব্যাটিংটাই ব্যালান্সড। সঙ্গকারা প্রথম বলে আউট হওয়ার পরেও তাই ম্যাচ বার করতে সমস্যা হয়নি থিরামানে (১০১), জয়বর্ধনে (৭৫) রান পেয়ে যাওয়ায়।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে তো আবার এই পাকিস্তানের সামনে পড়তে হবে ভারতকে। তার আগে এই ফাইনালটা ফ্লেচার-ধোনি ভাল করে দেখলে বুঝবে, পাকিস্তানের দুর্বলতার সুযোগটা কী ভাবে নিল শ্রীলঙ্কা। ভারতকেও একটা সোজা অঙ্ক মাথায় রেখে নামতে হবে। শুরুতে পাক ব্যাটসম্যানদের স্বচ্ছন্দে স্ট্রোক খেলতে দেওয়া যাবে না। জানি, ভারতের হাতে কোনও মালিঙ্গা নেই। কিন্তু যারা আছে, তাদের নিয়েই গেমপ্ল্যানটা বানাতে হবে।
যেমন শামির সঙ্গে কোনও স্পিনার দিয়ে বোলিং শুরু করা যেতে পারে। অশ্বিনকে আইপিএলে ধোনি তো অনেক বারই নতুন বল দিয়েছে। প্রয়োজনে জাডেজার কথাও ভাবা যেতে পারে। শেষের দিকে পাকিস্তানের দ্রুত রান তোলার সেরা বাজি আফ্রিদি। কিন্তু ওর ধারাবাহিকতা কম। আর আফ্রিদির জন্য পেসার রেখে দিলে মনে হয় ও সহজে মারতে পারবে না।
পাক বধে শ্রীলঙ্কার স্ট্র্যাটেজিটা পুরোপুরি খেটে গেল। ভারত না হয় ওদের কাছ থেকেই নীল নকশাটা ধার করুক টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। একটু বদলে নিয়ে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: পাকিস্তান ২৬০-৫ (ফাওয়াদ আলম ১১৪ ন. আ., মিসবা উল হক ৬৫, উমর আকমল ৫৯, মালিঙ্গা ৫-৫৬) শ্রীলঙ্কা ২৬১-৫ (থিরামানে ১০১, জয়বর্ধনে ৭৫, আজমল ৩-২৬)।