কোহলির ফর্মে ফেরার দিকে তাকিয়ে ভারত। ছবি: এএফপি
একেই ইংল্যান্ড, তাও আবার পাঁচ টেস্টের সিরিজ। আমি নিশ্চিত, এই সিরিজের পর ভারতীয় ক্রিকেটে এমন কিছু প্রতিভাবান ক্রিকেটার উঠে আসবে, যারা ভবিষ্যতে লম্বা রেসের ঘোড়া হয়ে উঠতে পারে।
ইংল্যান্ড সফর বরাবরই স্পেশাল। ১৯৯৬-এ রাহুল দ্রাবিড় ও আমার আন্তর্জাতিক কেরিয়ারের শুরুটা যে এখান থেকেই হয়েছিল, তা নিশ্চয়ই কেউ ভুলে যাননি। আমার স্পষ্ট মনে আছে, সেই সিরিজের শেষে আমরা খেলোয়াড় হয়ে উঠেছিলাম। এ বারও তেমনই হবে হয়তো। পাঁচটা টেস্ট তো আর মুখের কথা নয়। ইংল্যান্ডে পাঁচ টেস্টের সিরিজে যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পারে ক্রিকেটাররা, তা সারা জীবন কাজে লাগে তাদের। ভবিষ্যতের নির্ভরযোগ্য ক্রিকেটারদের বেছে নেওয়ার এক অনবদ্য সুযোগ নির্বাচকদের কাছেও। শুধু ভারত নয়, ইংল্যান্ডের ক্রিকেটের পক্ষেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে এই সিরিজ।
বুধবার থেকে ট্রেন্টব্রিজে যে টেস্ট শুরু হতে চলেছে, তার আগে বোধহয় দু’দলই সমান জায়গায়। তিন বছর আগে যখন ভারতকে ০-৪ হারতে হয়েছিল, তখন ইংল্যান্ড অনেক ভাল অবস্থায় ছিল। ফর্ম ও আত্মবিশ্বাসের শিখরে ছিল দলটা। কিন্তু এই তিন বছরে টেমসে যেমন প্রচুর জল বয়ে গিয়েছে, তেমনই ইংল্যান্ড দলেও অনেক পরিবর্তন এসেছে। দলটা এখন বেশ চাপে রয়েছে। ভারতকে ওদের এই দূর্বল জায়গাটাই কাজে লাগাতে হবে। ওদের অধিনায়কও এখন বেশ চাপে রয়েছে।
সে জন্যই ২০০৭-এর পর প্রথম ইংল্যান্ডকে এ বার ওদের দেশে গিয়ে হারানোর সেরা সুযোগ ভারতের সামনে। সাত বছর আগের সেই দলেও ধোনি ছিল। সেই অভিজ্ঞতার কথা মনে করে এ বার ও নিশ্চয়ই তা কাজে লাগানোর চেষ্টা করবে। বরাবরই ঠান্ডা মাথার ছেলে আমাদের ক্যাপ্টেন। কিন্তু এ বার ওকে একেবারে সামনে থেকে বুক চিতিয়ে লড়াই করতে হবে। ওর কয়েকটা ভাল ও ইতিবাচক সিদ্ধান্তই ভারতকে এই সিরিজে জেতাতে পারে। টস জেতা ও ভাল ব্যাটিং যেমন সিরিজ জেতার জন্য অবশ্যই জরুরি, তেমনই কুড়িটা উইকেট তোলাও দরকার। স্পিনারদের ভাল বল করাটাও বড় ফ্যাক্টর। দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ড সফরের অভিজ্ঞতাটাও ওদের কাজে লাগাতে হবে। তরুণদের দল হলেও ভারত কিন্তু ওই সফরে লড়াইয়ের ক্ষমতার পরিচয় দিয়েছিল। এ বারও ওদের কাছে থেকে সেই লড়াই দেখতে চাই।
এ দেশে এখন সমালোচনার ঝড় বইছে অ্যালিস্টার কুককে নিয়ে। যদিও এটা এই কাজেরই একটা অঙ্গ। তবে টেস্ট শুরু হলে ও কোন মানসিক জায়গায় থাকবে, এটাই ওর দলের পক্ষে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কুক বড় মাপের খেলোয়াড় এবং এটা ও নিশ্চয়ই বুঝবে যে, পৃথিবীতে খুব কম ক্যাপ্টেনই আছেন, যাঁদের জীবনে এমন দিন আসেনি। এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এও এক দিন অতীত হয়ে যাবে। সবচেয়ে বড় কথা দলের কোচ ও সতীর্থরা ওর পাশে রয়েছে। তা ছাড়া এখন খারাপ ফর্মে থাকলেও ইংল্যান্ডের সেরা ব্যাটসম্যান কিন্তু অ্যালিস্টার কুক।