বিদেশিদের লড়াই নিয়ে তাতছে ময়দান

সোনি নর্ডির জবাব এ বার র‌্যান্টি-ডুডু জুটি

সোনি নর্ডি নিয়ে মোহনবাগানের হইচই থামিয়ে দিতে ডুডু ওমাগবেমিকে তুলে নিল ইস্টবেঙ্গল। গোলমেশিন র্যান্টি মার্টিন্সের সঙ্গী হিসাবে লাল-হলুদ জার্সি পরে উয়েফা চ্যাম্পিয়নশিপে খেলা আর এক গোলমেশিন নামবেন। এটা জানার পর ইস্টবেঙ্গল তাঁবু তো বটেই, ময়দান জুড়ে শুরু হয়েছে আলোড়ন। ফেসবুক থেকে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে উঠেছে ঝড় কলকাতা ডার্বি শুরুর আঠাশ দিন আগেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৪ ০৩:৫৭
Share:

সোনি নর্ডি নিয়ে মোহনবাগানের হইচই থামিয়ে দিতে ডুডু ওমাগবেমিকে তুলে নিল ইস্টবেঙ্গল।

Advertisement

গোলমেশিন র্যান্টি মার্টিন্সের সঙ্গী হিসাবে লাল-হলুদ জার্সি পরে উয়েফা চ্যাম্পিয়নশিপে খেলা আর এক গোলমেশিন নামবেন। এটা জানার পর ইস্টবেঙ্গল তাঁবু তো বটেই, ময়দান জুড়ে শুরু হয়েছে আলোড়ন। ফেসবুক থেকে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে উঠেছে ঝড় কলকাতা ডার্বি শুরুর আঠাশ দিন আগেই।

স্পোর্টিং ক্লুব দ্য গোয়ায় আট বছর খেলেছেন। মাঝে এক বছর অবশ্য ক্লাবের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় লোনে চলে যান ডেম্পো এবং সালগাওকরে। ফিরে এসে স্পোর্টিং ক্লুবের হয়েই জাতীয় লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন ডুডু। এরপর তিনি চলে যান মালয়েশিয়ার পেনাং-এ। কিন্তু ডুডুর ফুটবল জীবনের অনেকটা সময় গোয়ায় কাটলেও তিনি সেই অর্থে মহাতারকা হন হাঙ্গেরির তিন বারের চ্যাম্পিয়ন ডেব্রেসেনিতে খেলার পর। সেখানে থাকার সময়ই উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে যোগ্যতা অর্জনের ম্যাচে খেলেন। পরে মূলপর্বে দলে থাকলেও চোটের জন্য খেলেলনি। গত বছরেই ডুডু আবার ফিরে আসেন সালগাওকরে। এসেই ডেরেক পেরিরার দলকে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ জিতেয়ে চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইতে নিয়ে আসেন। ১০ ম্যাচে ৫ গোল করেন। চারটি ম্যাচে ম্যান অব দ্য ম্যাচও হন। এ বার মরসুমের শুরু থেকেই ডুডুর দিকে নজর ছিল ইস্টবেঙ্গলের। কোচ আর্মান্দো কোলাসোও তাঁকে চাইছিলেন। তবে আর্থিক বিষয় নিয়ে সমস্যা থাকায় চুক্তি করতে কিছুটা সময় লেগে যায়। শেষ পর্যন্ত র্যান্টি মার্টিন্সের সঙ্গী হওয়ার জন্য সোমবার চুক্তিপত্রে সই করে দেন ডুডু। তাঁকে সই করানোর পর উচ্ছ্বসিত ইস্টবেঙ্গল ফুটবল সচিব সন্তোষ ভট্টাচার্য বললেন, “আশা করব র্যান্টির সঙ্গে ডুডুর যুগলবন্দি কার্যকর হবে। র্যান্টির মতো ডুডুও গোলের মধ্যে আছে। চেনা ফুটবলার। আমরা আর একজন এশীয় ফুটবলার নেব। ডিফেন্ডার হিসাবে।” ডুডুকে নেওয়ায় ইস্টবেঙ্গল যে ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডারের সঙ্গে কথা চালাচ্ছিল, তাঁকে এখন আর নেওয়া হচ্ছে না।

Advertisement

বহুদিন ধরেই কলকাতায় খেলার স্বপ্ন দেখতেন ডুডু। শেষ পর্যন্ত নাইজিরিয়ান ফুটবলারটির স্বপ্ন সফল। গোয়া ছেড়ে কলকাতায় আসছেন তিনি। ডুডুকে নেওয়ায় দু’জন আইকন ফুটবলার হয়ে গেল ইস্টবেঙ্গলে। নিউজিল্যান্ডের লিও বার্তোস এবং ডুডু। আপাতত ডুডু রয়েছেন ফিনল্যান্ডে। এ দিন অনেক চেষ্টা করেও তাঁকে ফোনে ধরা যায়নি। রাত পর্যন্ত মেলেরও উত্তর দেননি। ফলে কবে তিনি কলকাতায় আসবেন তা জানা যায়নি। লাল-হলুদের ফুটবল সচিব বললেন, “কালই ওর ভিসার কাগজপত্র পাঠাচ্ছি আমরা। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওকে আনব।” ডুডুর সঙ্গে এক বছরের চুক্তি ইস্টবেঙ্গলের।

যাঁর প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে উঠে এসেছেন ডুডু, সেই সোনি নর্ডি গত বার কলকাতায় শেখ জামাল ধানমন্ডির হয়ে আই এফ এ শিল্ডে খেলতে এসে চমকে দিয়েছিলেন। গোল করে, পুরো টিমকে খেলিয়ে। তাঁর সঙ্গে গোল করার জন্য ক্যামেরুনের পিয়ের বোয়াকে নিয়েছে মোহনবাগান। আইকন ফুটবলার হিসাবে।

র্যান্টি-ডুডু বনাম সোনি-বোয়েইস্ট-মোহনে গোলের মধ্যে থাকা স্ট্রাইকারদের যোগদানে যে কলকাতার ফুটবল জমে যাবে মানছেন দুই আই লিগ জয়ী কোচ সুব্রত ভট্টাচার্য এবং মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য। মোহনবাগানকে আই লিগ দেওয়া সুব্রত বললেন, “বোয়ে ছাড়া চার জনের তিনজনকেই আমি দেখেছি। সফল ফুটবলার। তবে ডুডুর যোগদানে মনে হচ্ছে ইস্টবেঙ্গল সামান্য একটু এগিয়ে গেল। দেখা যাক বোয়ে কী করে?” আর মনোরঞ্জন বললেন, “সোনির খেলা দেখেছি। দারুণ ফুটবলার। আর র্যান্টি তো ডেম্পোকে আই লিগ দিয়েছে বহুবার। ডুডুও ভাল। তবে ওরা যা করেছে সব বাইরে। কলকাতার ফুটবলের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া কঠিন। এখানে সমর্থকদের চাপ প্রচুর। দলের সঙ্গে যে জুটি মানিয়ে নিতে পারবে তারাই সফল হবে। বহুদিন আই লিগ আসেনি। সেটা বাংলায় আশা দরকার। তবে খাতায়-কলমে কাউকে এগিয়ে রাখতে রাজি নই।”

দুই প্রধানের ফুটবলপ্রেমীরা অবশ্য আশায় বুক বাধছেন। তাদের আশা ভাল বিদেশির সাহায্যে এ বার আই লিগ-ফেড কাপের মতো সর্বভারতীয় ট্রফি কলকাতায় আসবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন