এনসিসি-কে অভিযোগমুক্ত করার চেষ্টা শুরু

সিলমোহর পড়া বাকি সৌরভের ‘অভিষেকে’

শহরে ফুটবল-জ্বর শেষ হতে না হতেই রাজ্যের ক্রিকেট প্রশাসনের নির্বাচনী যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। এক দিকে, সিএবি-র সাধারণ নির্বাচন। যেখানে সংস্থার যুগ্ম-সচিব পদে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের আসার উপর সরকারি সিলমোহর পড়া শুধু বাকি। সৌরভের সিএবি প্রশাসনে আসার খবর প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল আনন্দবাজারে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৪ ০২:২৫
Share:

শহরে ফুটবল-জ্বর শেষ হতে না হতেই রাজ্যের ক্রিকেট প্রশাসনের নির্বাচনী যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল।

Advertisement

এক দিকে, সিএবি-র সাধারণ নির্বাচন। যেখানে সংস্থার যুগ্ম-সচিব পদে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের আসার উপর সরকারি সিলমোহর পড়া শুধু বাকি। সৌরভের সিএবি প্রশাসনে আসার খবর প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল আনন্দবাজারে। যা খবর, তাতে আগামী বৃহস্পতিবারই সম্ভবত সৌরভকে যুগ্মসচিব পদে প্রার্থী রেখে প্যানেল জমা দিয়ে দিচ্ছেন সিএবি প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়া। অন্য দিকে আবার সেপ্টেম্বরের বোর্ড নির্বাচন। যাকে ঘিরেও নানাবিধ কর্মকাণ্ড চালু হয়ে গেল সিএবি-তে। এনসিসি-কে সামনে রেখে।

সিএবি নির্বাচনের খবর বলতে, এ বার বার্ষিক সাধারণ সভা ডাকা হচ্ছে আগামী ২৭ জুলাই। বার্ষিক অনুষ্ঠানের ঠিক পরের দিন (যে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে আসছেন প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার গুণ্ডাপ্পা বিশ্বনাথ)। পরিস্থিতি যা, তাতে এ বার নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তিন জন ভাইস প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তাঁদের জায়গায় স্থলাভিষিক্ত হবেন নতুন তিন। ট্রাস্টি বোর্ডেও একটা পরিবর্তন হচ্ছে। কিন্তু এগুলো নয়। বার্ষিক সভার যাবতীয় উত্তাপ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রশাসক-ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া নিয়ে।

Advertisement

এত দিন সৌরভকে কখনও সিএবি-র ক্রিকেট ডেভলপমেন্ট কমিটির পদে দেখা গিয়েছে। কোচেস কমিটির প্রধান হয়েছেন। ‘ভিশন টি-২০’ প্রোজেক্টের জন্মও তাঁর হাত ধরে। কিন্তু প্রশাসনের হেভিওয়েট পদে এ বারই প্রথম সিএবি-তে আসছেন তিনি। সিএবি-র বর্তমান যুগ্মসচিব সুজন মুখোপাধ্যায়ের মেয়াদ এ বারই শেষ হয়ে যাচ্ছে। তাঁর জায়গাতেই আসতে চলেছেন সৌরভ।

সৌরভ এই মুহূর্তে ইংল্যান্ডে। ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজের কমেন্ট্রি টিমে তিনি আছেন। শোনা যাচ্ছে, সিএবি-র বার্ষিক সভার দিন উপস্থিত থাকতে চলেছেন সৌরভ। কয়েক দিনের ছুটি নিয়ে তিনি আসবেন সেই সময়। এমনিতে আগামী শনিবার মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। কিন্তু সেখানে প্রাক্তন ভারত অধিনায়কের সশরীর উপস্থিতির কোনও দরকার নেই। কারণ সিএবি-র গঠনতন্ত্র বলছে, তিনি যে অনুমোদিত সংস্থার প্রতিনিধিত্ব করছেন, তারা মনোনয়ন জমা দিলেই চলবে। এখনও পর্যন্ত যুগ্মসচিব পদে নির্বাচনেরও কোনও খবর নেই। প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই প্রাক্তন ভারত অধিনায়কের সচিব পদে আসার কথা। যদিও সিএবি প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়া এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে এখনও রাজি নন। তাঁর বক্তব্য, “আর দিন তিন-চারের মধ্যেই ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে যাবে। এ ব্যাপারে আমি এখনই কোনও কথা বলতে পারি না।”

পাশাপাশি আবার বোর্ড নির্বাচনকে সামনে রেখেও সিএবি-র কাজকর্ম শুরু হয়ে গিয়েছে। বোর্ড নির্বাচনে সিএবি প্রেসিডেন্টের হাতে যে বরাবর দু’টো ভোট থাকে (একটা সিএবি, একটা এনসিসি), তা ভারতীয় ক্রিকেটমহলে সর্বজনবিদিত। কিন্তু এত দিন ভারতীয় ক্রিকেটমহলের অভিযোগ ছিল যে, ভোটের বাজার ছাড়া এনসিসি-র কোনও অস্তিত্ব নেই। সাম্প্রতিকে পূর্বাঞ্চলের কোনও কোনও সংস্থার পক্ষ থেকেও প্রশ্ন তোলা হয়েছে কেন সিএবি প্রেসিডেন্টের হাতে দু’টো ভোট থাকবে, বাকিদের একটা? যাদের মধ্যে একটার বার্ষিক কর্মকাণ্ড কিছু জানাই যায় না। আর তাই বিরোধীদের প্রতিবাদ যাতে বন্ধ করা যায়, সে ব্যাপারে চেষ্টা শুরু হয়ে গেল।

সাম্প্রতিকে একটা আন্তঃকলেজ টুর্নামেন্ট করেছে এনসিসি। যে টুর্নামেন্টের ফাইনালে আনা হয়েছিল ব্রিজেশ পটেলের মতো ক্রিকেট- ব্যক্তিত্বকে। বোর্ড কর্তাদের কাউকে কাউকেও তখন দেখা গিয়েছিল। পরে সিএবি-র আন্তঃকলেজ টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে এনসিসি চ্যাম্পিয়নের একটা ম্যাচও হয়েছে। এনসিসি-র টিডি করা হয়েছে প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার তথা প্রাক্তন বাংলা অধিনায়ক দীপ দাশগুপ্তকে। যিনি ক্রিকেট-সম্পর্কিত ব্যাপারগুলো দেখবেন। শুধু তাই নয়, ময়দানে এনসিসি-র একটা কোচিং সেন্টারও হালফিলে খোলা হয়েছে। বানতলার কাছাকাছি মাঠ নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। যেখানে ভবিষ্যতে ক্রিকেট-অ্যাকাডেমি খোলারও ভাবনা আছে। আরও শোনা গেল, সেপ্টেম্বরের বোর্ড নির্বাচনের আগে একটা স্মারক-বক্তৃতার ব্যবস্থা করতে পারে এনসিসি। কোনও প্রাক্তন ক্রিকেটারকে আমন্ত্রণ করে।

যা অবস্থা, তাতে সিএবি-র ‘হোম ম্যাচের’ যবনিকা আগামী ২৭ জুলাই পড়লেও ‘অ্যাওয়ে ম্যাচে’ পড়ার সম্ভাবনা নেই। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওটা চলবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন