সাহায্য ছাড়াই বক্সিং শিখছে রাভা ছাত্ররা

দূরত্ব কয়েকশো কিলোমিটার। তবু মণিপুরের চূড়চাঁদপুর জেলার কাংতাই গ্রামের মেরি কমের জীবন যুদ্ধের সঙ্গে কিছুটা হলেও মিল রয়েছে আলিপুরদুয়ারের উত্তর পোর বনবস্তির বাসিন্দাদের। মেরি কমের মত বক্সিংয়ে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন সেখানকার রাভা জনজাতির কয়েক জন ছেলে। কেউ সপ্তম শ্রেণিতে পড়েন, কেউ বা একাদশে। সবারই প্রেরণা এক জনই। মেরি কম। কিন্তু আফশোস একটাই, যদি সরকারি সাহায্য পাওয়া যেত।

Advertisement

নারায়ণ দে

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:২৮
Share:

চলছে অনুশীলন। —নিজস্ব চিত্র।

দূরত্ব কয়েকশো কিলোমিটার। তবু মণিপুরের চূড়চাঁদপুর জেলার কাংতাই গ্রামের মেরি কমের জীবন যুদ্ধের সঙ্গে কিছুটা হলেও মিল রয়েছে আলিপুরদুয়ারের উত্তর পোর বনবস্তির বাসিন্দাদের। মেরি কমের মত বক্সিংয়ে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন সেখানকার রাভা জনজাতির কয়েক জন ছেলে। কেউ সপ্তম শ্রেণিতে পড়েন, কেউ বা একাদশে। সবারই প্রেরণা এক জনই। মেরি কম। কিন্তু আফশোস একটাই, যদি সরকারি সাহায্য পাওয়া যেত।

Advertisement

প্রায় এক বছর ধরে বক্সিং গ্লাভস কিনে শরীরচর্যা থেকে শুরু করে নিয়মিত খেলার অনুশীলন করছেন রকি রাভা, পিটার রাভা, ফিলিপ রাভা, মুকেশ রাভা, মিশা রাভারা। কিন্তু আগামী দিনে কীভাবে বক্সিংয়ের প্রতিযোগিতাগুলিতে যোগ দেবেন, তা জানা নেই ওই যুবকদের। কোচ হিসেবে তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন এলাকার বাসিন্দা ভীম রাভা। তিনি বলেন, “ছোট বেলা থেকে ক্যারাটে ও কিক বক্সিংয়ের প্রশিক্ষণ নিয়েছি। আলিপুরদুয়ারে রাজ্য স্তরে ক্যারাটে ও কিক বক্সিংয়ে যোগ দিয়ে জিতেওছি। কিন্তু মনটা পড়ে থাকত বক্সিংয়ে টিভিতে। এখনও মন দিয়ে বক্সিং দেখি। মেরি কমকে দেখে আরও উত্‌সাহিত হই। বছর খানেক ধরে গ্রামের ২১ জন যুবককে নিয়ে বক্সিং অনুশীলন করাচ্ছি। তবে কোথায় কী ভাবে বক্সিং ম্যাচ খেলাব, বুঝতে পারছি না। ছেলেদের অনেকে এখনও আলিপুরদুয়ারে গিয়ে কিক বক্সিং ও ক্যারাটের প্রশিক্ষণ নেয়। গ্রামে পোরো নদীর চরে অথবা জঙ্গলে মারা ফেস পাঞ্চ, ডাইরেক্ট পাঞ্চ, হুক পাঞ্চ প্রাক্টিস করি। প্রথাগত বক্সিং রিংও নেই আমাদের। এই খেলায় সরকারি সাহায্য পেলে ভালো হত।”

আলিপুরদুয়ার জেলার ক্রীড়া সংস্থার কার্যকরি সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “উত্তর পোরো বনবস্তি রাভা জনজাতির মানুষা কষ্ট করে জীবিকা নির্বাহ করেন। ওরা যে বক্সিংয়ের মত খেলায় উত্‌সাহী, তা জানতাম না। ওরা আমাদের সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা ওঁদের খেলার জন্য বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করা বা প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের ব্যবস্থা করব।”

Advertisement

আলিপুরদুয়ার থেকে নিমতি যাওয়ার পথে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে উত্তরপোর বস্তিতে গিয়ে দেখা গেল, জনা কয়েক যুবক হাতে বক্সিংয়ের গ্লাভস পড়ে নিজেরাই অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন। নিজেরাই পয়সা জমিয়ে চার জোড়া বক্সিংয়ের গ্লাভস কিনেছেন ওই ছেলেরা। তবে মুখ বা মাথার গার্ড পয়সার ভাবে কিনতে পারেননি। তুফানগঞ্জের বাসিন্দা বাবলু দাস বিভিন্ন জায়গায় ক্যারাটে ও বক্সিং শেখান। তিনি বলেন, “বক্সিংয়ে শারীরিক ধকল যায়। ভাল খাওয়া-দাওয়া ও প্রশিক্ষণ প্রয়োজন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন