Mamata Banerjee

কাঁসর বাজিয়ে পদযাত্রায় মুখ্যমন্ত্রী

এক জন নিজের আঁকা মুখ্যমন্ত্রীর ছবি তুলে দেন তাঁর হাতে। প্রান্তিকার কাছে এক প্রতিবন্ধী যুবক রাস্তায় চলে আসেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সঙ্গে কথা বলেন।

Advertisement

সুব্রত সীট

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:৩৭
Share:

সিএএ এবং এনআরসি-র বিরোধিতায় দুর্গাপুরের ভিড়িঙ্গি থেকে প্রান্তিকা মোড় পর্যন্ত পদযাত্রায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে দলের অন্য নেতানেত্রীরা। বুধবার। ছবি: বিকাশ মশান

সার দিয়ে দাঁড়িয়ে ঢাক বাদকেরা। রয়েছেন বাউল, আদিবাসী শিল্পীরাও। ভগৎ সিংহ স্টেডিয়াম থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাড়ি সেখানে পৌঁছতেই শুরু হয়ে গেল আদিবাসী নৃত্য, বাউল গান। বাজতে শুরু করল ঢাক। সেখান থেকেই হাতে কাঁসর নিয়ে পদযাত্রা শুরু করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

নতুন নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসি-র বিরোধিতায় বুধবার দুর্গাপুরে ভিড়িঙ্গি থেকে প্রান্তিকা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার রাস্তা পদযাত্রা করেন মমতা। এ দিন বাঁকুড়া থেকে হেলিকপ্টারে দুর্গাপুরের ভগৎ সিংহ স্টেডিয়ামে এসে নামেন তিনি। সেখান থেকে গাড়িতে পৌঁছন ভিড়িঙ্গিতে। সেখানে জাতীয় সড়কের সার্ভিস রোডে মঞ্চ বাঁধা হয়েছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চে না উঠে আশপাশের ব্যারিকেডের কাছে গিয়ে জনতাকে নমস্কার জানান। এর পরে শুরু করে দেন পদযাত্রা।

কাঁসর বাজিয়ে সারা রাস্তা হাঁটেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন বিধায়ক মলয় ঘটক, জিতেন্দ্র তিওয়ারি, বিশ্বনাথ পাড়িয়াল, দুর্গাপুরের মেয়র দিলীপ অগস্তি, পুরসভার কাউন্সিলররা এবং তৃণমূল নেতা উত্তম মুখোপাধ্যায়, বিপ্লব বিশ্বাসেরা। রাস্তার দু’পাশ পুলিশ দড়ি দিয়ে ব্যারিকেড করে রেখেছিল। তা সত্ত্বেও কেউ-কেউ ব্যারিকেড পেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে ছোঁয়ার চেষ্টা করেন। পথে এক জন মুখ্যমন্ত্রীকে শাল উপহার দেন। এক জন নিজের আঁকা মুখ্যমন্ত্রীর ছবি তুলে দেন তাঁর হাতে। প্রান্তিকার কাছে এক প্রতিবন্ধী যুবক রাস্তায় চলে আসেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সঙ্গে কথা বলেন।

Advertisement

দুর্গাপুর পশ্চিম কেন্দ্র থেকে কংগ্রেসের টিকিটে জেতার পরে তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ হন বিশ্বনাথ পাড়িয়াল। তিনি আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি পদেও রয়েছেন। তবে ইদানীং দলের নানা কর্মসূচিতে তাঁকে সে ভাবে দেখা যায়নি। এমনকি, আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভানেত্রী দোলা সেনের ডাকা কর্মসূচিতেও তাঁকে দেখা যায়নি। কিন্তু এ দিন তাঁকে মিছিলের আগাগোড়া মুখ্যমন্ত্রীর পাশে হাঁটতে দেখা যায়। ছিলেন অন্য নেতারাও।

পদযাত্রা শেষে মুখ্যমন্ত্রী পিডিসিএলের অতিথিশালায় থাকতে পারেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছিল। যদিও সেখানে না গিয়ে তিনি সিটি সেন্টারে ক্ষুদিরাম সরণির একটি হেটেলে গিয়ে ওঠেন।

প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী দুর্গাপুরে পৌঁছনোর আগে ওই অতিথিশালার আশপাশে আগাছা সাফাইয়ের সময়ে সাপ দেখা গিয়েছিল। তাই শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীকে সেখানে রাখার ঝুঁকি নেওয়া হয়নি। তা ছাড়া আজ, বৃহস্পতিবার যেখানে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠক হওয়ার কথা, সেই সৃজনী প্রেক্ষাগৃহ ওই হোটেলের অদূরে। তাই শুধু সিটি সেন্টার এলাকায় যান নিয়ন্ত্রণ করলেই হবে। এই বিষয়টিও মাথায় রাখা হয়েছে বলে প্রশাসনের এক কর্তা জানান।

এ দিন জাতীয় সড়কের সার্ভিস রোডে মঞ্চ তৈরি করার প্রতিবাদ জানিয়েছে বিজেপি। দলের নেতা অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর দলীয় কর্মসূচির জন্য বেনাচিতি কয়েকঘণ্টা স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। তার উপরে জাতীয় সড়কের সার্ভিস রোড বন্ধ করে দেওয়ায় সমস্যা আরও বাড়ে। জাতীয় সড়কেও যান নিয়ন্ত্রণ করতে হয়েছে।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারির পাল্টা বক্তব্য, ‘‘সব লোক মিছিলে হাঁটছিলেন। কার অসুবিধা হল জানা নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন