—প্রতীকী ছবি।
স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের সবচেয়ে বড় আতঙ্কের জায়গা হল সাইবার প্রতারণা। যে কোনও মুহূর্তে হ্যাকার হানায় সর্বস্ব খোয়াতে হতে পারে তাঁদের। তবে সব সময়ে হ্যাকারেরাই যে তথ্য চুরি করে থাকে, তা কিন্তু নয়। প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে ফোন নির্মাণকারী সংস্থা বিরুদ্ধেও। উদাহরণ হিসাবে ২০২৩ সালের ইনফিনিক্স এবং টেকনো কোম্পানির কথা বলা যেতে পারে।
এই দুই সংস্থার তৈরি স্মার্টফোনের সবচেয়ে বড় আকর্ষণের জায়গা ছিল ৫০ মেগা পিক্সলের ক্যামেরা। বিজ্ঞাপনে বলা হয়, কৃত্রিম মেধা বা এআই (আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স) ভিত্তিক টুল দ্বারা চালিত হবে ওই ফোটো-যন্ত্র। কিন্তু সফ্টঅয়্যার অ্যানালিসিস করে জানা যায় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির ফোনে রয়েছে মাত্র আট মেগাপিক্সলের ক্যামেরা। ধরা পড়ে যাওয়ার পর আইনগত সমস্যার মুখে পড়তে হয় তাদের।
প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে উয়াবের মতো সংস্থার বিরুদ্ধেও। ডিএসএলআর ক্যামেরার ছবিকে ফোনে তোলা বলে বিজ্ঞাপনে ঢালাও প্রচার করে তারা। ধরা পড়ার পর বাজারে নাম খারাপ হয় সংশ্লিষ্ট সংস্থার। সাইবার অপরাধীদের লোকঠকানোর চেনা ফাঁদ হল ‘অ্যামাজ়ন সুপার ভ্যালু মিস্ট্রি বক্স’। এর প্রলোভনে পড়ে মোটা টাকা গচ্ছা যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে ভূরি ভূরি। কয়েক বছর আগে সারা বিশ্ব জুড়ে ই-কমার্স সংস্থা অ্যামাজ়নের নাম করে প্রতারণার খবর প্রকাশ্যে আসে।
তদন্তকারী অফিসারদের দাবি, রহস্যময় বাক্সের কথা বলে বোকা বানানোর পদ্ধতিটা ছিল ভারী অভিনব। প্রতারকেরা বিভিন্ন সমাজমাধ্যম প্ল্যাটফর্মে (পড়ুন ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, টিকটক বা ইউটিউব) অ্যামাজ়নে মাত্র দু’হাজার টাকায় ওই রহস্যময় বাক্স পাওয়া যাচ্ছে বলে একটি রিল আপলোড করে। সেখানে বলা হয়, বাক্সটির মধ্যে থাকবে দামি স্মার্টফোন। রিল দেখে অনেকেই সংশ্লিষ্ট বাক্স পেতে আগাম টাকা দিয়ে তা বুক করে ফেলেন।
এর পর তাঁদের কাছে যে বাক্স পৌঁছোয় তার অধিকাংশতেই ছিল খেলনা স্মার্টফোন। কেউ কেউ আবার ভাঙা ডিভাইস বা খুব সস্তা দরের হেডফোন পেয়েছিলেন। এমনকি বাক্স খুলে মোজা মেলার ঘটনাও ঘটেছিল। সাইবার বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই পদ্ধতিতে এখনও ভারতে বা ভারতের বাইরে প্রতারণার অহরহ ঘটছে। তাই এই ধরনের মেগা অফারের থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।
২০১৬ সালে মাত্র ২৫১ টাকায় স্মার্টফোন বাজারে আনার কথা বলে আগাম বুকিং নিতে শুরু করে একটি সংস্থা। ৩০ লক্ষের বেশি গ্রাহক এর জন্য টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবে মাত্র কয়েক জনের মধ্যে ডেমো ফোন বিলি করেছিল সংশ্লিষ্ট সংস্থা। বাকিদের কাউকেই টাকা ফেরত দেয়নি তারা। পরে গ্রেফতার হয় সংস্থার সিইও মোহিত গোয়েল। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় জালিয়াতির মামলা রুজু করে পুলিশ।