ছবি: সংগৃহীত।
গরম মানেই মন খোঁজে পাহাড়ি শীতলতা। কিন্তু পাড়ি দেবেন কোথায়? দার্জিলিং, সিকিম তো আছেই। তবে উত্তরাখণ্ডের সৌন্দর্যও কম নয়। গাড়োয়াল এবং কুমায়ুন নিয়ে তার বিস্তৃতি। এ রাজ্যের প্রতিটি জনপদই সুন্দর। ঘোরার জায়গাও বিস্তর। গন্তব্য যদি উত্তরাখণ্ড হয়, ভ্রমণ তালিকায় রাখতে পারেন এই তিন স্বল্পচেনা জনপদ।
খিরসু
খিরসু থেকে তুষারশুভ্র শৃঙ্গ দেখা যায় খুব ভাল করে। ছবি: সংগৃহীত।
পাইন, ফার, ওকে ঘেরা পাহাড়ি গ্রাম খিরসু। উত্তরাখণ্ডের জনবহুল এবং জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রের তালিকায় এখনও এর নাম নেই। তবে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যই ক্রমশই এই জায়গা পর্যটকদের কাছে প্রিয় হয়ে উঠছে। উত্তরাখণ্ডের পৌরি গাড়োয়ালের এই জনপদ দেহরাদূন থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। মেঘমুক্ত দিনে খিরসু থেকে দৃশ্যমান হয়ে ওঠে পঞ্চচুল্লি, নন্দাদেবী, নন্দাকোট, ত্রিশূল-সহ হিমালয়ের একাধিক তুষারাবৃত শৃঙ্গ। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১,৭০০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত শান্ত এই জনপদ তাঁদের জন্য, যাঁরা প্রকৃতির আঙিনায় নিজের মতো থাকতে ভালবাসেন। খিরসু থেকে আশপাশের বেশ কিছু জায়গা হেঁটে ঘোরা যায়। এখানে রয়েছে আপেল বাগানও। খিরসুর সৌন্দর্য বাড়িয়েছে পাহাড়ি ধাপচাষ, বুনোফুল। বর্ষার মরসুমে সেই রূপ আরও খোলতাই হয়। পাইন-ওকের জঙ্গল ঘেরা উপত্যকায় ক্যাম্পিংয়ের শখ খাকলে খিরসু হতে পারে আদর্শ ঠিকানা। এখানে দেখে নেওয়া যায় জল্পাদেবী মন্দির, ঘনদিয়াল মন্দির-সহ বেশ কিছু ভিউ পয়েন্ট।
কী ভাবে যাবেন?
দেহরাদূন বিমানবন্দর থেকে খিরসুর দূরত্ব ১৭৪ কিলোমিটার। খিরসুর কাছের রেলস্টশন হল কোটদ্বার। দূরত্ব ১২৭ কিলোমিটার। উত্তরাখণ্ডের বড় বড় সমস্ত জনপদ থেকেই সড়কপথে খিরসু আসা যায়।
পঙ্গোট
তালিকায় রাখতে পারেন প্যাংগটও। ছবি: সংগৃহীত।
ঘন জঙ্গল আর পাখির ডাক— এই দুইয়ের প্রতি আকর্ষণ থাকলে পঙ্গোট হতে পারে আপনার উত্তরাখণ্ডের গন্তব্য। নৈনি হ্রদের ধারে নৈনিতাল উত্তরাখণ্ডের অত্যন্ত জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র। সেখান থেকে মাত্র ১৩ কিলোমিটার দূরেই অবস্থান এই জায়গার। প্যাংগোট ৫০০-এর বেশি পাখির আস্তানা। পাখি- দেখিয়েদের স্বর্গরাজ্য। এখানেই রয়েছে কিলবুরি বার্ড স্যাংচুয়ারি। পঙ্গোটের নৈসর্গিক রূপ উপভোগের জন্য বেছে নিতে পারেন ক্যাম্প। মূলত পাখি দেখার জন্য এই অঞ্চলের জনপ্রিয়তা। এ ছাড়াও রয়েছে ঝর্না। পায়ে হেঁটে গ্রাম ঘোরার মানসিকতা থাকলে বেছে নিতে পারেন এই স্থান।
কী ভাবে যাবেন?
নৈনিতাল থেকে গাড়ি ভাড়া করে পঙ্গোট পৌঁছোতে পারেন। নৈনিতাল থেকে পাওয়া যায় শেয়ার ট্যাক্সিও। নৈনিতাল থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে কাঠগোদাম। ট্রেনে কাঠগোদাম পৌঁছে গাড়িতে নৈনিতাল বা সরাসরি পঙ্গোট পৌঁছতে পারেন।
মায়াবতী
মায়াবতীর সৌন্দর্যও মন ভাল করে দেবে। ছবি: সংগৃহীত।
পাহাড়ের কোলে নিবিড় প্রশান্তির ঠিকানা মায়াবতী। চম্পাবত জেলার লোহাঘাট থেকে যেতে হয় মায়াবতী। পাইন, দেবদারুর ঘন বনানীতে ঢাকা পার্বত্য পথ ধরে পৌঁছোনো যায় বিবেকানন্দের স্মৃতিবিজড়িত অদ্বৈত আশ্রমে। পাহাড়ের উপরে আশ্রম। পাশেই রয়েছে ছোট্ট দাতব্য চিকিৎসালয়। এখান থেকে চারপাশের রূপ বড়ই মনোরম। প্রকৃতি এবং আধ্যাত্মিকতার এক অভূতপূর্ব মেলবন্ধন রয়েছে এই স্থানে। লোহাঘাট থেকে মায়াবতীর আশ্রমের দূরত্ব কমবেশি ৯-১০ কিলোমিটার।
কী ভাবে যাবেন?
নৈনিতাল, কৌশানি বা মুন্সিয়ারি ভ্রমণের তালিকায় রাখলে, তার সঙ্গে জুড়ে নিতে পারেন মায়াবতী। নৈনিতাল থেকে সড়কপথে দূরত্ব ১৫০ কিলোমিটার। লোহাঘাটের সবচেয়ে কাছের রেলস্টেশন টনকপুর। দূরত্ব ৮৬ কিলোমিটার। পন্থনগর বিমানবন্দর থেকেও লোহাঘাট আসা যায়। দূরত্ব ১৮০ কিলোমিটার।