Summer Destinations

উত্তরবঙ্গ, উত্তরাখণ্ড নয়, এই গরমে ঘুরে নিতে পারেন মুম্বইয়ের অদূরের তিন পাহাড়ি জনপদ

সৌন্দর্যের বিচারে হিমালয়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে পশ্চিমঘাট পর্বতমালাও। মুম্বইয়ের অদূরে, মহারাষ্ট্রের তিন জায়গায় রয়েছে এমন শৈলশহর, যা হতে পারে গরমে ভ্রমণের গন্তব্য।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২৫ ১১:৫৯
Share:

বর্ষার মরসুমে আরও সুন্দর এবং শ্যামল হয়ে ওঠে সহ্যাদ্রি পর্বত।

পাহাড় বললে হিমালয়ের কথাই মাথায় আসে। গরমের দিনে একটু শীতল পরশ আর প্রকৃতির সান্নিধ্য পেতে লোকে তাই উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, দার্জিলিং, সিকিমের মতো জায়গাই বেছে নেন। তবে শুধু হিমালয় নয়, পাহাড়ি সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় ভারতের প্রায় প্রতিটি রাজ্যেই। মহারাষ্ট্রের রাজধানী, বাণিজ্যনগরী মুম্বই। আরব সাগর পারের এই বিশাল শহরে কেউ যান কর্মসূত্রে, কেউ ভাগ্য অন্বেষণে। ভ্রমণের তালিকাতেও থাকে শহরটি। তবে চাইলে এই শহরের অদূরে কিছু পাহাড়ি জনপদও ঘুরে নিতে পারেন। হিমালয়ের মতো উচ্চতা না থাক, পশ্চিমঘাট পর্বতমালার সৌন্দর্যও কিছু কম নয়।

Advertisement

মাথেরন

মুম্বই থেকে মাত্র ঘণ্টা তিনেকের যাত্রা। দূরত্ব ৮৩ কিলোমিটার। সবুজ ঢেউখেলানো পাহাড় আর মেঘ-কুয়াশা মাখা মহারাষ্ট্রের শৈলশহর মাথেরন যেন ক্যানভাসে আঁকা ছবি। ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যেই এখানকার তাপমাত্রা ঘোরাফেরা করে। হিমালয়ের মতো শীতলতা এখানে না মিললেও মুম্বইয়ের চেয়ে তাপমাত্রা বেশ কিছুটা কম থাকে। তাই গরমেও মাথেরন আরামদায়ক। ঢেউখেলানো উপত্যকা, সবুজ পার্বত্যভূমি, মেঘ-কুয়াশা, রোদের লুকোচুরি আছেই, তবে এখানকার অন্যতম আকর্ষণ টয়ট্রেন। গরম থেকে মুক্তি পেতে ১৮৫০ সালে শৈলশহর মাথেরনকে আস্তানা করেছিল ব্রিটিশেরা। শোনা যায়, মুম্বইয়ের শিল্পপতি আদমজি পিরভয় ব্রিটিশ আধিকারিকদের খুশি করতে, যাত্রাপথ সহজ করতে টয় ট্রেন চালানোর উদ্যোগ নেন। সেই ট্রেনই এখন মাথেরনের গর্ব। বর্ষার মরসুমে আরও সুন্দর এবং শ্যামল হয়ে ওঠে সহ্যাদ্রি পর্বত। মাথেরন শহর জুড়ে অসংখ্য ভিউ পয়েন্ট রয়েছে। পায়ে হেঁটেও ঘোরা যায় পাহাড়ি পথে। ঘুরে নেওয়া যায় শার্লট লেক, আলেকজ়ান্ডার ভিউ পয়েন্ট, প্যানোরামা ভিউ পয়েন্ট, প্রবাল ফোর্ট, সানসেট পয়েন্ট-সহ অসংখ্য জায়গা।

Advertisement

ভন্ডারদরা

মহারাষ্ট্রের অহমদনগর জেলায় আর এক ছবির মতো পর্যটনকেন্দ্র হল ভন্ডারদরা। লং ড্রাইভের শখ থাকলে, মুম্বই থেকে গাড়ি নিয়েই বেরিয়ে পড়তে পারেন ভন্ডারদরার উদ্দেশে। নিজে গাড়ি চালান বা গাড়ি ভাড়া করুন, মুম্বই থেকে এই শৈলশহরে যাওয়ার রাস্তা নিশ্চিত ভাবে ভুলিয়ে দেবে শহুরে ক্লান্তি, কাজের চাপ। মুম্বই থেকে দূরত্ব মাত্র ১৬৫ কিলোমিটার। যেতে বড়জোর ৪-৫ ঘণ্টা সময় লাগে। দু’পাশে ঘন সবুজ বনানী। তারই বুক চিরে পিচরাস্তা। মরসুমভেদে পাল্টে যায় এখানকার সৌন্দর্য। গ্রীষ্মে ভন্ডারদরা এক রকম, বর্ষায় আর এক রকম। এ পথে গাড়ি ছোটালে রাস্তায় এমন মোড়ও পড়বে, যেখান থেকে দৃশ্যমান হয়ে উঠবে জলপ্রপাতের জলধারা। এখানকার পর্যটক আকর্ষণ বহু পুরনো উইলসন জলাধার। চারপাশের ঢেউখেলানো অনুচ্চ পাহাড়, ঘন সবুজ বনানী সেই জলাধারের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েক গুণ। ক্যাম্পিংয়ের সুযোগও রয়েছে সেখানে। এই স্থানের আর এক আকর্ষণ হল আমব্রেলা জলপ্রপাত। গ্রীষ্ম জল কম থাকে। তবে ভরা বর্ষায় জলপ্রপাতের সৌন্দর্য বেড়ে যায় অনেকটাই। সবুজ বনানীর মধ্যে দুধসাদা জলরাশি, রঙের বৈপরীত্য মুগ্ধ করবেই। এ ছাড়াও ঘুরে নেওয়া যায় পাহাড়ঘেরা আর্থার হ্রদ, রন্ধা জলপ্রপাত, রতনওয়াড়ি গ্রাম।

খন্ডালা

মনে পড়ে, আমির খানের ‘গুলাম’ সিনেমার গান ‘আতি কয়া খন্ডালা’? সেই খন্ডালায় ঘুরে আসতে পারেন আপনিও। লোনাভলার জনপ্রিয়তা যতটা, খন্ডালা নিয়ে ঠিক ততটা মাতামাতি নেই। অনেকেই মুম্বই থেকে লোনাভলা যাওয়ার পথে খন্ডালা ছুঁয়ে যান। তবে ঘোরার জন্য এখানে অনেক কিছুই আছে। এই জায়গা ভাল ভাবে ঘুরতে হলে যেতে হবে ওল্ড খন্ডালা ঘাটে। এখান থেকে দেখে নেওয়া যায় রাজমাচি উদ্যান, ভিউ পয়েন্ট, কুনে ফলস, খন্ডালা হ্রদ-সহ বেশ কিছু জায়গা। মুম্বই থেকে খন্ডালার দূরত্ব ৭৮-৮০ কিলোমিটারের মতো। একটি দিন হাতে থাকলেই খন্ডালার সমস্ত জায়গা ঘুরে নেওয়া যাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement