Offbeat Digha

উল্টোরথে দিঘা গিয়েছেন? সেখান থেকেও ভিড় এড়িয়ে ঘোরা যায় কম চেনা ঠিকানায়, রইল হদিস

নতুন জগন্নাথ মন্দির। প্রথম রথযাত্রা। উল্টোরথে তাই বাড়তি ভিড় দিঘায়। কিন্তু দিঘা থেকে ঘুরবেন কোথায়? চেনা ছকের বাইরে ভ্রমণের শখ থাকলে ঘুরে নিন ৩ জায়গা।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৫ ১৩:৩৮
Share:

দিঘায় রথযাত্রা। ছবি: সংগৃহীত।

আগেও রথে লোকে দিঘা গিয়েছেন। তবে সেই দিঘার এ বার অন্য রূপ। পূর্ব মেদিনীপুরের সৈকত শহরে প্রথম বার বিশাল রথযাত্রা হচ্ছে। উদ্বোধন হয়েছে জগন্নাথ মন্দিরের। ফলে যে সমস্ত বাঙালি আগে রথযাত্রায় পুরী যাওয়ার জন্য ছটফট করতেন, তাঁদের অনেকেই দিঘামুখী। শনিবার উল্টোরথ। বিশাল আয়োজন পূর্ব মেদিনীপুরের সৈকত শহরটিতেও। লোকজনও পৌঁছে গিয়েছেন। কিন্তু রথ দেখার পরে কী করবেন? একটা দিন দিঘার সমুদ্র, দোকানপাট, ঝাউবনে ঘুরে, আরাম করে কেটে যাবে। কিন্তু তার পর? হাতে দু’টো দিন সময় থাকলে বরং চেনা সৈকত শহরের আশপাশে কিছু স্বল্পচেনা ঠিকানায় পাড়ি দিতে পারেন।

Advertisement

দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুর সৈকত

দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুর সৈকত ঘুরে আসতে পারেন। ভোরে অথবা সূর্যাস্তের সময়ই এই স্থান সবচেয়ে বেশি উপভোগ্য। ছবি:সংগৃহীত।

দিঘা-কাঁথির রাস্তা ধরলে পৌঁছে যাবেন দাদন পাত্রবারের দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুরে। দিঘার কোলাহল, সমুদ্রস্নানের হুড়োহুড়ি, সারি সারি দোকানপাট— এর কোনওটাই নেই এখানে। বরং চাক্ষুষ করতে পারবেন নিরালা সৈকত, ঝাউবন, চাষের ক্ষেত। বাইকের দাপট নেই সমুদ্র সৈকতে, এখনও এখানে অস্থায়ী খাবারের দোকান বসে যায়নি মন্দারমণির মতো। ফলে হইহল্লাও নেই। লাল কাঁকড়ার দল নির্ভয়ে ঘুরে বেড়ায়। দিঘা থেকে কলকাতায় ফেরার পরিকল্পনা থাকলে দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুর, লাল কাঁকড়া সৈকত ঘুরে যেতে পারেন। জায়গাটি মন্দারমণি থেকে ১১ কিলোমিটার দূরে। দিঘা থেকে দূরত্ব ৩৩ কিলোমিটার। চাইলে এখানে থেকেও যেতে পারেন। হোটেল, তাঁবুতে থাকার এবং ক্যাম্পিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। বিবেকানন্দ মঠের তরফেও থাকার ব্যবস্থা রয়েছে এখানে।

Advertisement

কানাইচট্ট সৈকত

ঘুরে নিতে পারেন কানাইচট্ট সৈকতেও। ছবি:সংগৃহীত।

দিঘা থেকে কাঁথি এসে যেতে হবে কানাইচট্ট সৈকতে। ভারি নির্জন এই স্থান। প্রকৃতির সান্নিধ্য চাইলে এই স্থান আপনার জন্য। কাঁথি থেকে দরিয়াপুর হয়ে দৌলতপুর হয়ে কানাইচট্টের সমুদ্রতীরে পৌঁছনো যায়। জুনপুট রোড হয়ে বাঁকিপুট পেরিয়েও যাওয়া যায় সেখানে। থাকার জায়গা বলতে একটি মাত্র ‘বিচ ক্যাম্প’। গাছপালা ঘেরা উন্মু্ক্ত পরিবেশে বড় তাবুঁতে থাকার ব্যবস্থা। আতিশয্য না থাকলেও প্রয়োজনের সবটুকুই মিলবে এখানে। বাড়তি পাওনা উন্মুক্ত পরিবেশে জমিয়ে মাছ, কাঁকড়া, চিংড়ি খাওয়া। এখানে এলে নিরিবিলি সৈকতে বসে দেখতে পারেন সমুদ্রের বিস্তার, ঢেউয়ের খেলা, ট্রলারের আনাগোনা। অটো ভাড়া করে চলে যেতে পারেন দরিয়াপুর বাতিঘরে। যাওয়া যায় পেটুয়াঘাটে। সেখান থেকে ভেসেলে রসুলপুর নদী পেরিয়ে পৌঁছনো যায় হিজলি শরিফে।

বিচিত্রপুর

ম্যানগ্রোভ দেখতে ঘুরে নিন বিচিত্রপুর। ছবি:সংগৃহীত।

সৈকত শহর দিঘা থেকে ওড়িশার দূরত্ব মোটেই বেশি নয়। বরং চন্দনেশ্বর মন্দির, তালসারির মতো জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রগুলি ওড়িশাতে। দিঘা থেকে দূরত্ব ১২ কিলোমিটার। খাঁড়ি আর ম্যানগ্রোভের টানে যাওয়া চলে বিচিত্রপুরে। ঘূর্নিঝড়ের সময় সমুদ্রের তাণ্ডব থেকে ম্যানগ্রোভই বাঁচায় বালিয়াড়ির এই তল্লাটকে। এখানকার সৌন্দর্য দিঘার সৈকতগুলির মতো নয় একেবারেই। বরং ঘোরার জন্য ভরসা জলযান। সেই যাত্রাও নির্ভর করে জোয়ার-ভাটার উপরে। খাঁড়ি যেখানে সমুদ্রে মিশছে, সেখানে জলের ওঠাপড়া অনেকটাই বেশি। সকাল থেকে সরকারি স্পিড বোট ছাড়ে। খুব সকাল, না হলে বিকেলটাই এখানে প্রকৃতি নিরীক্ষণের উপযুক্ত সময়। স্পিড বোটে চেপে যাওয়া যায় সুবর্ণরেখা নদীর মোহনায়। সেখানে একটি চরও রয়েছে। তারই এক পাশে নদী, অন্য পাশে সমুদ্র। এই চরায় হাঁটাও যায়। দেখা যায় ম্যানগ্রোভ গাছের শ্বাসমূল, ঠেসমূল।

তবে যদি অফবিটে মন না থাকে, হাতে সময় কম থাকে, দিঘাতেও ঘোরার জায়গা কম নেই। দিঘা মোহনা, তালসারি ঘুরে নিতে পারেন। কাছেই আছে অমরাবতী পার্ক, ঢেউসাগর, মেরিন অ্যাকোয়ারিয়াম। অ্যাকোয়ারিয়ামে অসংখ্য সামুদ্রিক প্রাণী চাক্ষুষ করতে পারবেন, জানতে পারবেন তাদের নাম-ধাম। সঙ্গে স্কুলপড়ুয়া সন্তান থাকলে সুযোগ বুঝে এক বার ঢুঁ মারুন সেখানে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement