দীপাবলিতে ভ্রমণের পরিকল্পনা কী ভাবে করবেন? ছবি: সংগৃহীত।
দীপাবলির উৎসবের আবহে কেউ ফেরেন পরিজনের কাছে, কেউ আবার আলোর উৎসব উদ্যাপনে বেড়াতে বেরিয়ে পড়েন দেশের নানা প্রান্তে। দীপাবলি উদ্যাপিত হয় দেশ জুড়েই। কিন্তু এক এক রাজ্যে তার রূপ এক এক রকম। আর এই সময় অনেকেই লম্বা ছুটি পান।
ফলে দীপাবলির সময় ট্রেন, বিমানে টিকিটের আকাল থাকেই। কিন্তু উৎসবের মরসুম, যে ভাবেই হোক ঘরে ফেরার ব্যবস্থা করতেই হবে। তা ছাড়া, লম্বা ছুটি সহ এই সময়ের আবহাওয়াও থাকে বেড়ানোর জন্যও আদর্শ। ভিড় এবং ঝক্কি এড়িয়ে কী ভাবে ভ্রমণ করবেন?
১। টিকিটের চাহিদা এই সময় খুব বেড়ে যায়, সে ট্রেন হোক বা বিমান। বিমানের ক্ষেত্রে যেগুলিতে লে-ওভার থাকে, সেগুলি দেখতে পারেন। তা ছাড়া একেবারে ভোরের বা বেশি রাতের উড়ানে আসন ফাঁকা থাকার সম্ভাবনা এই সময় একটু হলেও থাকতে পারে। ট্রেনের ক্ষেত্রে কম জনপ্রিয় ট্রেনগুলিতে টিকিটের খোঁজ করা যেতে পারে। উপায় রয়েছে বেশ কয়েকটি। তৎকাল টিকিট আছে। এ ছাড়া, কোনও ট্রেনে যাত্রাপথের একেবারে শেষ স্টেশন বেছে নিতে পারেন। এতে খরচ বাড়লেও, অনেক সময় টিকিট পাওয়ার সুযোগ থাকে। যেমন, কোনও ট্রেন হাওড়া থেকে গুয়াহাটি যাচ্ছে। আপনার গন্তব্য মাঝপথেই, নিউ জলপাইগুড়ি। হাওড়া থেকে জলপাইগুড়ির টিকিট অমিল হলে গুয়াহাটি পর্যন্ত গন্তব্য দিয়ে দেখতে পারেন। এতে বাড়তি খরচ হলেও, কখনও কখনও টিকিট মেলে।
আর একটি উপায় হল রাস্তা ভেঙে ভেঙে যাওয়া। যেমন, সরাসরি জলপাইগুড়ির টিকিট না পেলে, স্বল্প চেনা স্টেশনগুলি থেকে যে গুটিকয়েক ট্রেন ছাড়ে, সেখানে সন্ধান করুন। তাতে হয়তো গন্তব্যে সরাসরি পৌঁছনো যাবে না। তবে মাঝপথে নেমে অন্য ট্রেন, বাস বা গাড়ি ধরে পৌঁছে যেতে পারেন। গাড়িতে যাত্রা করলে রাত বা ভোরের সময়টি সফরের জন্য বেছে নিতে পারেন।
২। কালীপুজো এবং দীপাবলির ২-৩টি দিন বাদ দিয়ে সফর সাজানো সম্ভব হতে পারে কি না দেখুন। কারণ, সবচেয়ে বেশি ভিড় হয় এই সময়টাতেই। এই দিনগুলি বাদ দিয়ে সফর সাজালে কিছুটা হলেও সুবিধা হতে পারে। ভিড়ের চাপ খানিকটা এড়ানো সম্ভব।
৩। দীপাবলির সময় রাজস্থান, বারাণসী, অযোধ্যার মতো জায়গাগুলিতে পর্যটকদের ভিড় থাকে। আলোয় সেজে ওঠা শহর, দুর্গ, মন্দির চত্বর দেখতে যান লোকজন। তবে, ভিড় এড়াতে পরিকল্পনা করা যেতে পারে অন্য ভাবে। বেছে নিন অফবিট স্থান। যেমন, জয়পুর, উদয়পুর, জোধপুরের মতো জায়গাগুলি এড়িয়ে যেতে পারেন সরিষ্কা, আলওয়ার, দিগের মতো জায়গায়। ভরতপুরের দিগ রাজস্থানের অতি প্রাচীন শহর। এই শহরের অন্যতম আকর্ষণ দিগ দুর্গ।
৪। দীপাবলিতে বাড়ি ফেরাই হোক বা বেড়াতে যাওয়া দিল্লি, মুম্বই, চণ্ডীগড়, কলকাতা, বেঙ্গালুরুর মতো বড় বিমানবন্দরগুলি এড়িয়ে কম চেনা বিমানবন্দরের টিকিটের খোঁজ করতে পারেন। সেখান থেকে ট্রেনে বা গাড়িতে গন্তব্যে পৌঁছনো যায়। ট্রেন, বিমানের টিকিট অমিল হলে যাতে গাড়িতেই ঘোরা যেতে পারে, এমন জায়গা বেছে নিন।
৫। অ্যাপের সাহায্য নেওয়া যায়। ভ্রমণের জন্য গাড়ি বুকিং, হোটেল বুকিং সংক্রান্ত একাধিক অ্যাপ রয়েছে। সেখানে নিরন্তর ‘আপডেট’-ও আসতে থাকে। বিমান বা ট্রেনের সময় বদল হলে, কোনও রাস্তায় যানজট থাকলে বিকল্প উপায় দেখায় অ্যাপগুলি।
৬। উৎসবের আবহে ট্রেন বা বিমান অতিরিক্ত দেরিতে চললে বা বাতিল হলে সফর ভেস্তে যেতে পারে। তাই পরিবর্ত পরিকল্পনা করে রাখা ভাল। পরিচয়পত্র, জরুরি নথি হাতের কাছে গুছিয়ে রাখুন। যাতে প্রয়োজন মতো বেরিয়ে যাওয়া যায়, পরিকল্পনাতেও বদল আনা সম্ভব হয়।
৭। বিমানবন্দরে উড়ান ধরার জন্য এই সময় দীর্ঘ লাইন পড়ে। সেই লাইনে দাঁড়িয়ে ওয়েব চেকইন করা কার্যত ধৈর্যের পরীক্ষা দেওয়া। এই কাজগুলি আগেই অনলাইনে সেরে রাখুন। বিমানযাত্রা সহজ হয়ে যাবে মোবাইলে ডিজি যাত্রা অ্যাপটি থাকলে। লগ ইন করার পর এখানেই বোর্ডিং পাস আপলোড করে দিন। আধুনিক ‘ডিজিটাল রেকগনিশন টেকনোলজি’র সাহায্যে বিমানযাত্রীদের সরাসরি বিমানে ওঠার সুযোগ দেওয়া হয় এর মাধ্যমে।