Durga Puja Travel 2025

কলকাতা থেকে কৃষ্ণনগর হয়ে চলুন কার্শিয়াং! চারচাকায় পাহাড়ি শহরের পথে চেখে নিন সরভাজা, আমসত্ত্বও

পুজোর ছুটিতে সফরের জন্য ট্রেন, বাস, বিমানের টিকিট কাটা হয়নি? বেড়ানোর সঙ্গী হতে পারে চারচাকাই। আনন্দবাজার ডট কম-এ থাকছে সড়কপথে ভ্রমণের চেনা-অচেনা গন্তব্যের হদিস।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:২৩
Share:

গাড়ি করে উত্তরবঙ্গে যাবেন? কী ভাবে সাজাবেন সফর ? ছবি: ট্যাভেলসড্রিমস.লাইভ।

পেটপুজো, আড্ডা, রাত-ভোর সবটুকু দেখতে দেখতে সফরের মজাই আলাদা। দূরত্ব ক্লান্তিকর নয়, বরং সফর সঠিক কায়দায় সাজাতে পারলে হতে পারে আনন্দে ভরপুর। পুজোর সময় উত্তরবঙ্গ যেতে চান? বেড়িয়ে পড়ুন চারচাকায়। কলকাতা থেকে গাড়ি নিয়ে চলুন কার্শিয়াং। রইল পথ এবং কার্শিয়াঙের আশপাশে ঘুরে দেখা, থাকার কয়েকটি ঠিকানা।

Advertisement

কলকাতা থেকে কার্শিয়াঙের দূরত্ব ৫৯৮ কিলোমিটারের মতো। লম্বা পথ। তবে যাওয়ার পথেও কিন্তু ঘোরা যায় নানা জায়গায়।কলকাতা থেকে কৃষ্ণনগর, মুর্শিদাবাদ, মালদহ হয়ে এগোতে হবে। টানা গেলে ১৩ ঘণ্টার মতো সময় লাগে। কিন্তু বেড়াতেই যখন বেড়িয়েছেন, মাঝে মধ্যে বিরতি নেওয়াই যায়।

কলকাতা থেকে সন্ধ্যার দিকে যাত্রা শুরু করতে পারেন কিংবা রাতে। সে ক্ষেত্রে সকালে শিলিগুড়ি পৌঁছে যাবেন। তবে যদি শিলিগুড়ি যাওয়ার আগে কোথাও হল্ট নিতে চান, তা হলে মালদহ বেছে নিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ভোরবেলাও সফর শুরু করা যায়।

Advertisement

কৃষ্ণনগরে থামতেই হবে। না হলে বাদ পড়বে সরপুরিয়া এবং সরভাজা। কৃষ্ণনগর থেকে বহরমপুরের দূরত্ব খুব বেশি নয়। প্রায় ৯০ কিলোমিটার। পাহাড়ে যাওয়ার পথে কোথাও রাত্রিবাসের পরিকল্পনা থাকলে যাওয়ার সময়ে ঘুরে নিতে পারেন বহরমপুর। রাত্রিবাস না করে টানা যাত্রা করলে অবশ্য বাড়তি ঘোরাঘুরি সফর দীর্ঘ করে তুলবে।

সুযোগ থাকলে বহরমপুরে কয়েকটি জিনিস দেখে নিতেই পারেন। ৮টি গ্যালারি সহ ১২০ ঘরের এই প্রাসাদের ১০০০ দরজা থেকে এর নাম হয়েছে হাজারদুয়ারি। তবে প্রকৃত দরজা ৯০০, বাকি ১০০ কৃত্রিম। প্রাসাদের সামনেই সিরাজের তৈরি এক গম্বুজের মদিনা মসজিদ আর মদিনার চত্বরে সুউচ্চ ঘড়িঘর। এখানেই রয়েছে বাচ্চাওয়ালি কামান। প্রাসাদের বিপরীতে বড় ইমামবাড়া। ঘণ্টা দুয়েক বহরমপুর ঘুরে, খাওয়া-দাওয়া করে ফের গাড়ি ছোটান।পথে পড়বে ফরাক্কা ব্যারেজ।

মালদার কিংবা রায়গঞ্জ কোনও একটি হতে পারে রাত্রিবাসের ঠিকানা। মালদার আমের কথা সকলেই জানেন। আম না পেলেও, এই জায়গার উপর দিয়ে যাওয়ার সময় আমসত্ত্ব চেখে নিতে পারেন। রায়গঞ্জে থাকলে সকালে শিলিগুড়ি যাওয়ার পথে ঘুরে নিতে পারেন কুলিক পাখিরালয়। শিলিগুড়ি থেকে মাটিগাড়া-কার্শিয়াং রোড ধরে এগোতে হবে। তার পর রোহিনীর রাস্তা ধরে কার্শিয়াং।

কার্শিয়াং-এর আশপাশের দেখার ঠিকানা

কার্শিয়াং শহর থেকে সাইটসিইং-এ দেখে নেওয়া যায় ঈগল্‌স ক্র্যাগ, সালামান্ডার লেক, ডাউহিল ইকো পার্ক, ডাওহিল রোড, পাগলাঝোরা। মার্গারেটস ডেক-এ বসে চা খাওয়া এবং ভিউ দেখাও এক অনন্য অভিজ্ঞতা হতে পারে।

আম্বোটিয়া: কার্শিয়াং থেকে চা-বাগান দেখতে চাইলে যেতে পারেন আম্বোটিয়া। পাঙ্খাবাড়ি হয়ে অরণ্যপথ এগিয়েছে। এখানে রয়েছে চা-বাগান, শিবমন্দির। প্রকৃতি যেন নিজেকে উজাড় করে দিয়েছে। নিরিবিলি স্থানটি ভারি মনোরম। কার্শিয়াং শহরে না থাকতে চাইলে এখানে থেকে যেতে পারেন। বেশ কয়েকটি হোম স্টে এবং হোটেল রয়েছে এখানে।

চিমনি গ্রাম: পাহাড় ঘেরা চিমনি গ্রামের সৌন্দর্য মনে করাবে শিল্পীর আঁকা ছবির কথা। নির্জনতা এবং নিজস্বতা তাকে আলাদা করেছে। ব্রিটিশ আমলের ডাকবাংলোর সুবিশাল চিমনি এখানে দর্শনীয়। পাহাড়ের ধাপে ধাপে উদ্যান। সেখানেই সংরক্ষিত চিমনিটি। স্ট্রবেরি বাগান, কুয়াশা মাখা গা-ছমছমে পাইন বন ঘুরে নিতে পারেন এখানে থেকে। কার্শিয়াং থেকে দূরত্ব ৭ কিলোমিটার। এখানেও হোম স্টে রয়েছে।

সিটং: পাহাড়ের কোলে ছোট্ট গ্রামটি কমলালেবুর জন্য দর্শক মহলে পরিচিতি পেয়েছে। পুজোর সময় লেবু ধরে। ফল পাকে নভেম্বরের শেষে বা ডিসেম্বরে। গ্রামটি উচ্চতা অনুযায়ী তিন ভাগে বিভক্ত। আপার সিটং-এ রয়েছে চা বাগিচা এবং ঘন অরণ্য। লোয়ার সিটং-এর উচ্চতা ৪২০০ মিটার। সিটং-এ যাওয়ার সময় ঘুরে নিন যোগীঘাট ব্রিজ। নীচ দিয়ে বয়ে গিয়েছে নদী। আর পাঁচটি পাহাড়ি গ্রামের মতোই সুন্দর এই স্থান। চারপাশে পাহাড়, তারই মধ্যে ছোট ছোট বাড়ি। প্রতিটি বাড়িতে ফুটে রয়েছে ফুল। সড়ক ধরে পাহাড়ি শিশুদের স্কুলে যাওয়া, খেলা, দেখেও সময় কেটে যায়। গ্রামটি পায়ে হেঁটে নিজের মতো করে ঘুরে নিতে পারেন। কমলালেবুর বাগান দেখা যায় এখানে। চা-বাগান, বৌদ্ধ মন্দির দেখে নিতে পারেন। কাছেপিঠে যেতে চাইলে অহলদারা ভিউ পয়েন্ট, মংপুতে রবীন্দ্রনাথের বাড়ি ঘুরে নিতে পারেন। এখানে থাকার একাধিক হোম স্টে রয়েছে।

সিটংয়ের খ্যাতি কমলালেবুর জন্য। ছবি: সংগৃহীত।

এ ছাড়াও এখানে বেলটার এবং অহলদারায় থাকা এবং ঘোরা যায়। এর মধ্যেও বেছে নিতে পারেন কোনওটি।

কী ভাবে যাবেন?

কলকাতা থেকে কার্শিয়াঙের দূরত্ব সড়কপথে প্রায় ৫৯৪ কিলোমিটার। বর্ধমান হয়েও যাওয়া যায় আবার নদিয়া, কৃষ্ণনগর হয়েও যাওয়া যায়। একটি জায়গায় দুই দিকের রাস্তা মিশে গিয়েছে।লম্বা রাস্তায় একটানা সফর করতে না চাইলে মালদা বা রায়গঞ্জে রাতটা কাটাতে পারেন। শিলিগুড়ি থেকে কার্শিয়াং ৩৪ কিলোমিটার।

কোথায় থাকবেন?

রায়গঞ্জ, মালদায় থাকার হোটেল পাওয়া যায় রাস্তার ধারে বা শহরের ভিতরে। কার্শিয়াংয়ে বা সিটং, অহলদারা— সব জায়গাতেই হোম স্টে রয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement