উটিতে দক্ষিণী তারকার বিলাসবহুল বাংলোয় একরাত থাকতে চান?
নীলগিরির কোলে ছোট্ট শহর উটি। পাহাড়, ঝর্না, হ্রদ, বাগান সমৃদ্ধ উটির জনপ্রিয়তা নতুন নয়। অসংখ্য হিন্দি, তামিল ছবির শুটিং হয়েছে সেখানে। ‘কয়ামত সে কয়ামত তক’, ‘রাজ়’, ‘আজব প্রেম কি গজ়ব কহানি’-র মতো একাধিক বলিউড ছবিতে ক্যামেরাবন্দি হয়েছে উটির পাইন বন, পাহাড়ি উপত্যকা, হ্রদের দৃশ্য।
সেই উটিতে বেড়ানোর পরিকল্পনা করছেন? সেখানেই এ বার থাকতে পারেন তারকার মতো, তারকার বাংলোয়।
দক্ষিণী চলচ্চিত্র জগতের জনপ্রিয় নাম মোহনলাল বিশ্বনাথন। প্রায় ৪০০টির বেশি সিনেমা রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। পেয়েছেন ‘পদ্মশ্রী’, ‘পদ্মভূষণ’-এর মতো সম্মানও। সেই তারকার বাংলোই আপাতত খুলে দেওয়া হয়েছে পর্যটকদের জন্য।
অভিনেতা মোহনলালের বাংলো।
উটির মূল শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে গাছগাছালিতে ঢাকা সুবিশাল বাংলো রয়েছে অভিনেতার। উঁচু প্রাচীরে ঘেরা সেই বাড়িতে প্রবেশের অনুমতি এত দিন ছিল না সাধারণের। মোহনলাল বিশ্বনাথনকে যাঁরা চেনেন এবং জানতেন সেটি তাঁর বাংলো, তাঁরা কখনও উৎসাহী হয়ে বাইরের প্রবেশদ্বারের ফাঁক দিয়ে উঁকিঝুকি দিয়ে ভিতরের ছবি তোলার চেষ্টা করেছেন। তবে এ বার অভিনেতার অনুরাগীরা সেখানে থাকার সুযোগ পাবেন।
সম্প্রতি একটি সংস্থার মাধ্যমে বাংলোটি ভাড়া দেওয়ার কথা জানা গিয়েছে। সেই সংস্থার ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত তথ্য বলছে, ৩টি শয়নকক্ষ বিশিষ্ট বিশাল বাংলোয় ছড়িয়ে রয়েছে অভিনেতার পরিবারের নানা স্মৃতি। মোহনলাল এবং তাঁর ছেলে এবং মেয়ের ঘরও রয়েছে সেখানে। বাংলোয় এক রাত থাকার ভাড়া ৩৭ হাজার টাকা (কর ছাড়া)।
মোহনলালের অনুরাগীদের কাছে এটাই হতে পারে বিশাল সুযোগ। কিংবা যাঁদের স্বপ্ন বিলাসবহুল বাংলোয় তারকাদের মতো কাটানো, তাঁদেরও জন্য এ কিন্তু সুবর্ণ সুযোগ। বিলাসবহুল বাংলোর অন্দরে কী আছে, তা নিয়ে এত দিন অনেকেরই কৌতূহল ছিল। এ বার তারই কিছু ঝলক দেখা গিয়েছে। বাংলোর নাম ‘হাইডআউট’।
এমন ঘরেই থাকার সুযোগ মিলবে।
বাংলোয় স্ত্রী সুচিত্রা এবং সন্তানদের সঙ্গে অতীতে সময় কাটিয়েছেন অভিনেতা। সেখানে তিনটি ঘরের একটি রয়েছে মোহনলালে নামে। নাম দেওয়া হয়েছে 'লালের ঘর'। আর দু’টি ঘরের একটি মেয়ে বিশ্বমায়া এবং অন্যটি রয়েছে মোহনলালের ছেলে প্রণবের নামে।
প্রতিটি ঘরই পরিপাটি করে সাজানো। আসবাবের বাহুল্য নেই। কিন্তু ছিমছাম সাজ নজর কাড়ে। মোহনলাল এবং প্রণবের নামাঙ্কিত ঘরে শোভা পাচ্ছে সাবেকি পালঙ্ক। সাবেকিয়ানার সঙ্গে আধুনিক সজ্জার মেলবন্ধন চোখে পড়ে সেখানে। প্রণবের ঘরের সঙ্গে কাচের পাল্লা দেওয়া দরজা। কাচ দিয়ে চোখে পড়ে বাইরের সাজানো বাগান। মহামায়ার ঘরেও রয়েছে বড় বিছানা, কাঠের আলমারি, আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র। জবরজং একেবারেই নয় অন্দরসাজ।
বাংলোয় রয়েছে বৈঠকখানা। সেখানেই ফায়ার প্লেসের আশপাশেজ দেওয়াল সজ্জিত হয়েছে মালয়লম চলচ্চিত্রের বিভিন্ন নিদর্শনে। বসার ঘরে রয়েছে সোফা এবং টেবিল।
বাংলোয় রয়েছে আরও একটি জায়গা। যেখানে দেওয়াল সাজানো হয়েছে নকল বন্দুক দিয়ে। এই ঘরের নাম ‘দ্য গান হাউস’। জানা যায়, এগুলি বিভিন্ন মালয়লম চলচ্চিত্রে ব্যবহৃত হয়েছিল। সেই জায়গাটির এক পাশে লম্বা কাচের জানলা। রয়েছে মদ্যপানের ব্যবস্থাও।
তারকার বাড়িতে শুধু আয়েস করে থাকতেই পারবেন না অতিথিরা, খেতে পারবেন তাঁদের প্রিয় খাবার, তা-ও মোহনলালের পারিবারিক রন্ধনশিল্পীর হাতেই। গত ২৫ বছর ধরে যে রন্ধনশিল্পী মোহনলালের পরিবারের জন্য বাংলোয় রান্না করেন, তিনি কেরলের নানা পদ রেঁধে দেবেন অতিথিদের জন্য।
বাংলোর ‘গান হাউস’।
বাংলোর বাগান
বাংলোর অন্দরমহল যতটা সুন্দর, ততটাই সাজানো বাংলো সংলগ্ন উন্মুক্ত চত্বর। ঘাসে ঢাকা লন, কেয়ারি করা বাগান। গাছ দিয়ে সযত্নে বানানো হয়েছে প্রবেশদ্বার। সর্বত্রই যত্নের ছাপ স্পষ্ট।
উটিতে কী কী দেখবেন?
নীলগিরির সৌন্দর্য বর্ষায় বেড়ে যায় আরও। মেঘ-কুয়াশার চাদর আর ঘন সবুজ হয়ে যাওয়া পাহাড় যেন মায়া বুনে দেয়। এখান থেকে ঘুরে নিতে পারেন বোটানিক্যাল গার্ডেন, দোদাবেতা শৃঙ্গ, রোজ় গার্ডেন, পাইকারা লেক। কফি কী ভাবে তৈরি হয় সেই সবও দেখে নিতে পারেন। চকোলেট কারখানা ঘুরে নিতে পারেন এখানে। উটির কফি যেমন সুস্বাদু, তেমনই এই জায়গা যেন চকোলেটের স্বর্গরাজ্য।