ছবি: সংগৃহীত।
সাদা কাপড়ে মোড়া শবদেহ। তাতে ফুলের মালা দিয়ে সাজানো। পুরোদস্তুর আচার ও প্রথা মেনে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এক মৃত ব্যক্তিকে। সেই শেষকৃত্যের যাত্রায় হাজির হয়েছেন মৃতের বন্ধু ও আত্মীয়েরা। ব্যক্তির ‘মারা’ যাওয়ার খবর পেয়ে সেখানে জড়ো হতে শুরু করেন শয়ে শয়ে গ্রামবাসীও। শ্মশানে পৌঁছোতেই ঘটে যায় অবাক কাণ্ড। আচমকাই খাট ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় সাদা কাপড়ে জড়ানো ‘মৃতদেহ’। নিজের মুখে জনসমক্ষে স্বীকার করে নেন গোটা ঘটনাটাই সাজানো।
মৃত্যুর পরেও মানুষ তাঁকে কতটা সম্মান করবে তা দেখার জন্য অদ্ভুত এক পন্থা বেছে নিয়েছিলেন বিহারের এই ব্যক্তি। মৃত্যুর পর তাঁর বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-পরিজনদের মধ্যে কে কতটা শোকাহত হবেন তা জানার উদ্দেশ্যেই ভুয়ো অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আয়োজন করেছিলেন বিমানবাহিনীর প্রাক্তন সেনাকর্মী মোহনলাল। গয়া জেলার গুরারু ব্লকের কোঞ্চি গ্রামের বাসিন্দা নকল শেষকৃত্যের আয়োজন করার নির্দেশ দেন তাঁর ঘনিষ্ঠ কয়েক জনকে। মোহনলালের পরিবার এবং বন্ধুরা সমস্ত প্রথা মেনে আচার-অনুষ্ঠান এমন ভাবে পালন করেছিলেন যাতে মনে হয় তিনি সত্যিই প্রয়াত হয়েছেন।
তাঁর প্রতি কার কতটা ভালবাসা ও শ্রদ্ধা রয়েছে তা পরখ করতে চেয়েছিলেন ৭৪ বছর বয়সি এই বৃদ্ধ। মোহন লাল জানিয়েছেন, তিনি দেখতে চেয়েছিলেন কে কে তাঁর শেষকৃত্যে যোগ দেয়। তাঁর মৃত্যুর পর কারা কারা তাঁর মৃতদেহ বহন করতে আসবে তা-ও প্রত্যক্ষ করতে চেয়েছিলেন তিনি। সংবাদমাধ্যমের সামনে তিনি বলেন, ‘‘জানতে চেয়েছিলাম মানুষ আমাকে কতটা সম্মান দেয় ও স্নেহ করে।’’ শ্মশানে সকলে জড়ো হওয়ার পর মোহনলাল নিজের একটি কুশপুত্তলিকা দাহ করেন। তার পর গ্রামের সকলের জন্য একটি ভোজসভার আয়োজন করেন তিনি। স্থানীয়েরাও মোহনলালের সামাজিক কাজের প্রশংসা করেন। বর্ষাকালে শবদাহের অসুবিধা হচ্ছে দেখে তিনি সম্প্রতি নিজের খরচে গ্রামে একটি শ্মশান নির্মাণ করেন। মোহনলালের স্ত্রী জীবনজ্যোতি ১৪ বছর আগে মারা যান। তাঁর দুই ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছে।